
ছবি : মেসেঞ্জার
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমি বলেছি ২৫ তারিখের মধ্যে এটিএম আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়া না হলে আমি স্বেচ্ছায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হবো। যতদিন আজহার ভাই কারাগারে থাকবে ততোদিন আমিও কারাগারে থাকবো। আজহারুল ইসলামকে মুক্তি দেওয়ার পর আমি কারাগার থেকে বের হবো। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যে দলের ওপর বেশি নির্যাতন হয়েছে সেটি হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একে একে দলটির শীর্ষ ১০জন নেতাকে খুন করা হয়েছে। রয়ে গেলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। ফ্যাসিবাদ চলে গেছে ৬ মাস হয়ে গেল। একে একে জাতীয় শীর্ষ নেতৃবৃন্দ কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বের হয়ে আসছে। নিন্তু এখনো কারাগারে রয়ে গেলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। ফ্যাসিবাদ চলে গেছে কিন্তু ফ্যাসিবাদের শিকল এখনো আজহারুল ইসলামকের ঘাড়ে রয়ে গেছে।
১৩টি বছর কারাগারে থেকে তিনি বহুকিছু হারিয়েছেন। অনেক হয়েছে এখনি তাকে মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। না হয় জামায়াত ইসলামীকে সসর্থন করে বাংলাদেশের তিন কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ, তাদেরকে জেলে নেওয়ার জন্য প্রস্তত হয়ে যান।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত এক বিশাল গণ জমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দীর্ঘ ২৮বছর পর লক্ষ্মীপুরে জামায়াতের এই বিশাল গণ জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মানুষ আশা করেছিল ২৪এর পরে সকল দুঃশাসন, দূর্নীতি ও অন্যায় থেকে তারা মুক্তি পাবে। আমরা কি মুক্ত হতে পেরেছি?। আমাদের সন্তানরা একটা বিশাল স্বপ্ন নিয়ে বুক পেতে দিয়েছিল। তারা বুক পেতে দিয়েছিল বুলেটের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ ছিল অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে। পৃথিবীতে যুবকরা কখনো অন্যায় মেনে নিতে পারেনা। তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে। আর এই সংগ্রাম করে হয় শহীদ হয়, না হয় গাজী হয়ে ফিরে আসে। এই আন্দোলন করতে গিয়ে শত শত যুবক, শ্রমিক, মেহনতী মানুষ জীবন দিয়েছে। ৩৪ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। তার পরেও এখনো অন্যায়, অবিচার ও জুলুম রয়ে গেছে। তারা কারা যারা শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করছে। আমরা তাদের দল দেখতে চাইনা, আমরা তাদের গোত্র দেখতে চাইনা। তাদেরকে বলবো আপনারা ভালো হয়ে যান। শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি করবেন না।
তিনি আরও বলেন, একটি জাহেলি সমাজ পরিবর্তন করে সোনালী সমাজ হয়ে গেল। সেই আদর্শকে যদি আমরা আমাদের সমাজে গ্রহণ করতে পারি তাহলে বাংলাদেশের সমাজও সোনালী সমাজ হয়ে যাবে। অতিতে সোনার বাংলা গড়তে গিয়ে বাংলাদেশকে শসান করা হয়েছে। সোনার বাংলা গড়তে হলে কোরানের শাসন প্রয়োজন। ইতিমধ্যে বাংলার জমিনে তার পরিক্ষা-নিরীক্ষা শেষ। এখন হবে কোরানের বাংলাদেশ। এদেশে যত গুলো ইসলানী দল আছে তত গুলো ইসলামী দলের দিকে তাকিয়ে দেখুন। আমি ৫ আগস্ট থেকে শুরু করে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কথা বলবো। এখন পর্যন্ত তারা কোন চাঁদাবাজি করেনায়, অন্যায় করেনায়, জুলুম করেনায়। তার একমাত্র কারণ, তারা কোরানকে ভয় করে, তারা আল্লাকে ভয় করে।
জেলা জামায়াতের আমীর এস ইউ এম রুহুল আমিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে গণ জমায়েতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা এটিএম মাসুম, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ মুহাম্মদ রেজাউল করিম, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান, ঢাকাস্থ লক্ষ্মীপুর ফোরামের সভাপতি ডা. আনোয়ারুল আজীম।
জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা ফারুক হোসাইন নুরনবীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন লক্ষ্মীপুর জেলা নায়েবে আমীর এডভোকেট নজির আহম্মদ, এ আর হাফিজ উল্লাহ, লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এডভোকেট হাসিবুর রহমান, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এডভোকেট মহসিন কবীর মুরাদ, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মমিন উল্যাহ পাটওয়ারী, শহর জামায়াতের আমীর এডভোকেট আবুল ফারাহ নিশান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমন্বয়ক আরমান হোসাইনন, ইসলামী ছাত্র শিবিরের শহর সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।
মেসেঞ্জার/শিবলু/তুষার