
ছবি : মেসেঞ্জার
প্রদীপ বিশ্বাস পেশায় একজন ওয়ার্কশপ মিস্ত্রি। লেখাপড়ায় সপ্তম শ্রেণির গন্ডি পার হতে পারেননি। নিজস্ব বুদ্ধিমত্তায় শেওলা- কচুরিপানা কাটা মেশিন তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন। ঘন-লম্বাকৃতির শেওলা-কচুরিপানা কেটে দুই দিকে ফেলছে। ফাঁকা হয়ে যাওয়া কচুরিপানার ভিতর দিয়ে বয়ে চলেছ ডিঙ্গি নৌকা। ডিঙ্গি নৌকার ওপর বিশেষ কায়দায় ইঞ্জিনসহ অন্যান্য উপকরণ বসিয়ে মেশিনটি তৈরি করা হয়েছে।
মেশিনের আবিষ্কারক প্রদীপ বিশ্বাস যশোরের মণিরামপুর উপজেলার কুচলিয়া গ্রামের মৃত. প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে।
প্রদীপ বিশ্বাস জানান, সুন্দলী বাজারে তার কুচলিয়া পিকেবি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ নামে একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দুই বছর আগে ২২ হর্স-পাওয়ারের ইঞ্জিন, এঙ্গেল, পাত, কাঠ, চেইন, পেনিয়াম, গিয়ারবক্স, প্লেনসিড ও ১৯টি বিচালি কাটা ছুরি দিয়ে মেশিন বানালেও ঘন শেওলা কাটতে গেলেই মেশিন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ডিঙ্গি নৌকা চালাতে ১১ হর্সপাওয়ার ও শেওলা কাটতে ২২ হর্সপাওয়ারের পৃথক দুইটি ইঞ্জিনহ ৯টি ছুরি পাতের মধ্যে বিশেষ কায়দায় সেট করে মেশিনটি বানানো হয়। প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয়ে মাস খানেক কাজ করে তৈরিকৃত মেশিন শেওলা-কচুরিপানা কাটার উপযোগী হয়। স্থানীয় বিল বোকড়ে ঘের মালিকরা মেশিন ভাড়া করে মাছের ঘেরের শেওলা-কচুরিপানা কেটে নিচ্ছে।
প্রদীপ বিশ্বাস আরও জানান, ভবদহের প্রভাবে এ অঞ্চলের নদী-খালগুলোতে পলি জমায় নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় খাল-বিল ও নদীতে প্রচুর শেওলা জন্মেছে। যা সারা বছরই থাকে। এতে করে খাল-বিল ও নদীতে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। মূলত এই শেওলা থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করার চিন্তার মধ্যে দিয়ে তিনি মেশিন আবিষ্কারে নেমে পড়েন। কেটে ফেলা কুচি কুচি শেওলা-কচুরিোনা দিয়ে জৈব সার তৈরি সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। তার তৈরিকৃত মেশিন গোপালগঞ্জ পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কিনে নিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ ধরনের উন্নতমানের মেশিন তৈরি সম্ভব।
স্থানীয় ঘের মালিক আদিত্য মন্ডল জানান, শেওলার কারণে ঘের হতে মাছ ধরা না যাওয়ায় মেশিনটি ভাড়া নিয়ে শেওলা কাটা হচ্ছে। এতে তারা অনেকটা উপকৃত হচ্ছেন। ভবিষ্যতে এ ধরণের মেশিন আরও কয়েকটা তৈরি করা হলে ঘেরের শেওলা-কচুরিপানা নিয়ে তাদের দুশ্চিন্তা করতে হবে না।
মেসেঞ্জার/তুষার