
ছবি : মেসেঞ্জার
বিএনপি অফিসের পিয়ন পরিচয় দিয়ে আশুলিয়া থানার ওসিকে হেনস্তাকারী যুবক সুমন মিয়াকে (৩৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে আশুলিয়া থানায় এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির। এর আগে, বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার চিতষী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সুমন মিয়া চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার চান্দাইল এলাকার মৃত আব্দুর রবের ছেলে। তিনি ঢাকার আশুলিয়ার বাসাইদ এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির জানান, বিএনপি অফিসের পিয়ন পরিচয়ে আশুলিয়া থানার ওসির সঙ্গে অসদাচরণ করার একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিষয়টি নজরে আসার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত শুরু করে। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় চাঁদপুরের শাহরাস্তি এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত যুবক সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, গ্রেপ্তার সুমন মিয়া আশুলিয়া এলাকায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় শ্রমিক নেতা হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের পিয়ন পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন। এছাড়া অনৈতিক সুবিধা আদায়সহ গার্মেন্টস এলাকার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির জন্য একটি মহলের সাথে সে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
তিনি আরও জানান, সুমন বিএনপির পার্টি অফিসের যে পরিচয়ে আশুলিয়া থানায় এসেছিলেন সেটা সঠিক নয়। বিএনপির পার্টি অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিএনপির পার্টি অফিসের পিয়ন বা বিএনপির কোন নেতৃবৃন্দের সাথে তার কোন সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি সত্য নয়। পুলিশকে বিতর্কিত করাসহ শিল্প এলাকা অস্থিতিশীল করার জন্য তার এ মিথ্যা ও প্রতারণামূলক অপরাধের জন্য তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তাকে কে বা কারা উস্কানি দিয়ে থানার ওসি'র কক্ষে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটানোর চেষ্টা করেছে সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া অধিকতর তদন্তের স্বার্থে তার বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়া থানায় ওসির কক্ষে ঢুকে ওসি মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলুকে 'ছাত্রলীগের ওসি' উল্লেখ করে বিব্রত ও হেনস্তার চেষ্টা করেন সুমন। তিনি দাবি করেন, বিএনপি অফিস থেকে তাকে ওসির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পাঠানো হয়েছে।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও বিভিন্ন নিউজ পোর্টালসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। পরে বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে জানানো হয়, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ওসির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
মেসেঞ্জার/নোমান/তুষার