
ছবি : মেসেঞ্জার
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসের করণিক আনোয়ার হোসেনের দূর্নীতি অব্যাহত রয়েছে। ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা ভূমির মালিকদের হয়রানি ও অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কাজ অব্যাহত রয়েছে। সম্প্রতি স্থানীয় ও জাতীয় কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলেও তার বিরুদ্ধে কোন রকম অফিসিয়াল ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যে কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেবাগ্রহীতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৮৯ সালে উপজেলা ভূমি অফিসের পিয়ন পদে যোগদান করেন। পদোন্নতি পেয়ে এখন অফিস করণিক। পদোন্নতি পেয়ে ২০১৬ সালে কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে আসেন। বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে দ্বায়িত্ব পালন করছেন।
চাকরিকালীন ৩৫ বছরে তার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের করাতিপাড়া ও খড়াশুনির মাঠে প্রায় ২৫ বিঘা জমি কিনেছেন। ঝিনাইদহ শহরের হাকিয়েছেন দুইতলা একটি বাড়ি। পৈত্রিক সূত্রে সামান্য জমিজমার মালিক আনোয়ার হোসেন পিয়ন থেকে করণিকের চাকরি করে কিভাবে ২৫ বিঘা জমি ও বাড়ির মালিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এসব নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা একাধিক ভূমি মালিক। অভিযোগকারীরা বলছেন, সেবা দেওয়ার নামে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েও নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে।
২০১০ সালে কোটচাঁদপুর ভূমি অফিসে নাজিরের দ্বায়িত্বে থাকাকালীন ডিপি মামলা হয়। যদিও পরে উচ্চ মহলের দেনদরবারে সে মামলা নিষ্পত্তি হয়। ২০১৭-১৮ সালে কালীগঞ্জ থাকাকালীন ডিসিআর এর ৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। যা বিভাগীয় তদন্তে উঠে আসে। ২০১৮ সালে আনোয়ার হোসেন ও সার্ভেয়ার মরতুজ আলি ও অফিস সহকারী তপন তিনজন যোগসাজস করে ভূমি অফিসের ১২ টি সরকারি গাছ কেটে বাসার আসবাবপত্র তৈরি করেন।
একই সময়ে টাকার বিনিময়ে অবৈধ নামজারি রেজিষ্ট্রেশন করে একদিনে নামপত্তন করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও সাবেক সার্ভেয়ার মরতুজ, অফিস সহকারী তপন ও নাইট গার্ড শহিদ দীর্ঘ ৮ বছর ধরে দূর্নীতির রাজত্ব কায়েম করেছিল। যদিও বর্তমান সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন আলম যোগ দেওয়ার পর তাদের অবৈধ রাজত্বে ভাটা পড়ে। ইতোমধ্যে সার্ভেয়ার মরতুজ অন্যত্রে বদলি হয়েছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলার খালকুলা গ্রামের অচিন্ত মন্ডলের ছেলে লিটন কুমার জানান, ২০২৪ সালের জুনে তার এক দাগে কেনা সম্পত্তির নামপত্তনের জন্য আবেদন করি। সরকার নির্ধারিত ফি থেকে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন ভূমি অফিসের করণিক আনোয়ার হোসেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রথম দিকে নথি হারিয়ে গেছে এমন অজুহাতে অতিরিক্ত টাকা দাবি করেন। এরপর আমি বাধ্য হয়ে ৪ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দিই্। তবে ৬ মাস পার হয়ে গেলেও আমার সে নামপত্তনের কাজ এখনো হয়নি। এখন জিজ্ঞেস করলেই বলে হয়ে যাবে। একইভাবে একাধিক সেবাগ্রহিতারা এ প্রতিবেদকের কাছে মৌখিক অভিযোগে জানিয়েছেন।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন আলম বলেন, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্র্তপক্ষকে অবহিত করেছি। তবে কি ব্যবস্থা নিয়েছে এটা আমার জানা নেই।
মেসেঞ্জার/বিপাশ/তুষার