
ছবি: মেসেঞ্জার
খুলনার কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জি এম ইমদাদুল হকের প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসি।সোমবার (১০ মার্চ) সকাল ১১ টায় কয়রা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বদমেজাজি ওসির প্রত্যাহার চাই, কয়রা থানায় দালালের দৌরাত্ম্য বন্ধ করো, করতে হবে;' সহ বিভিন্ন প্লাকার্ড হাতে নিয়ে মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধন চলাকালে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, কয়রা থানার ওসি সাধারণ মানুষদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। তিনি দালালদের কথা ছাড়া সাধারণ মানুষের কথা শুনতে চান না। গত ৫ আগষ্টের পর বর্তমান থানার তদন্ত কর্মকর্তা ওসির দায়িত্বে থাকাকালীন একটা সুন্দর পরিবেশ পেয়েছিল কয়রার মানুষ। কিন্তু পরবর্তীতে ওসি এমদাদুল হক কয়রা থানায় যোগদানের পর থেকে থানায় দালালদের দৌরাত্ম বেড়ে গেছে। শেখ হাসিনা আমলের মতো মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। ওসি এমদাদুল হকের প্রত্যাহারের দাবি করেন তারা। দ্রুত সময়ের মধ্যে কয়রা থানার ওসিকে প্রত্যাহার না করা হলে আরও কঠোর আন্দোলন করার হুশিয়ারি দেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন ২ নম্বর কয়রা গ্রামের বাসিন্দা মোকলেসুর রহমান, ইউনুস আলী, রাসেল আহমেদ প্রমুখ। এ সময় মোকলেসুর রহমান বলেন, আমার মেয়ে শশুর বাড়িতে প্রায়ই নিগৃহীত হয়ে আসছে। সে কারণে হয়ত অভিমানে কোথাও চলে গেছে। মেয়ের সন্ধানের জন্য গত শুক্রবার ওসি স্যারের কাছে নিখোঁজ ডায়েরী করতে গেলে উল্টো তিনি আমাকে অপমান করেন। এ সময় আমার সাথে থাকা আমার ফুফাতো ভাই ওসি স্যারের কথার প্রতিবাদ করলে তাকেও দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। তিনি এ ঘটনার প্রতিকার দাবি করেন এবং ওসির প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ইউনুস আলী বলেন, আমার ভাতিজি শুশুর বাড়ী থেকে নিখোঁজ হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে থানায় ডায়েরী করতে গেলে ওসি আমার ভাইয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন এবং আমার ভাতিজিকে নিয়েও কটুক্তি করেন। আমি প্রতিবাদ করলে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। ওসির এই হুমকিতে আমিসহ আমার পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ জিএম ইমদাদুল হক বলেন, কোথায় মানববন্ধন হয়েছে সেটা জানা নেই। নিখোঁজ নারীর বাবা ও স্বামী আলাদাভাবে দুটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। আমরা মেয়েকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি।
প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ রাতে কয়রার ২ নং কয়রা গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হন আয়শা আক্তার মীম নামের এক গৃহবধু। বিষয়টি জানিয়ে সহযোগিতা চাইতে শুক্রবার (৭ মার্চ) সকালে কয়রা থানায় যান তার বাবা মোখলেসুর রহমান ও চাচাতো ভাই ইউনুস আলী। কিন্তু তাদের অভিযোগ শুনে ওসি তাচ্ছিল্য করেন। এ বিষয়ে ডিআইজি বরাবর আবেদন করেন ভূক্তভোগী। এছাড়া সম্প্রতি থানায় সহায়তা চাইতে যাওয়া বেশ কয়েকজনের সাথে ওসি খারাপ আচারণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া কয়রায় চুরি, সংঘর্ষ, ঘের ও জমি দখলসহ বসতবাড়ি থেকে হিন্দু পরিবারের উচ্ছেদের মত ঘটনা ঘটলেও পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় জনগণের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মেসেঞ্জার/কামাল/জেআরটি