ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
১৩ মার্চ ২০২৫

The Daily Messenger

রামগঞ্জে সঞ্চয়পত্র প্রতারণায় কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ১

রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৪৯, ১৩ মার্চ ২০২৫

রামগঞ্জে সঞ্চয়পত্র প্রতারণায় কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ১

ছবি : মেসেঞ্জার

জালজালিয়াতির মাধ্যমে গত ৪ বছরে গ্রাহকদের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে আত্মগোপনে ছিলেন রামগঞ্জ উপজেলা ডাকঘর অফিসের উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন জিকু (৪৫)। অর্থ সঞ্চয় করতে গিয়ে ভূয়া সঞ্চয়পত্র, ভূয়া চেক ও জাল স্বাক্ষরের ফাঁদে পড়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন রামগঞ্জ উপজেলার সহস্ত্রাধিক গ্রাহক।

এদিকে প্রতারক আনোয়ার হোসেন জিকুকে গ্রেপ্তারের খবর ছড়িয়ে পড়লে অর্ধশত নারী পুরুষ রামগঞ্জ থানার সামনে জড়ো হয়। ক্ষতিগ্রস্থ নারী পুরুষের দাবি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় পোষ্ট অফিসের লোকজন জড়িত রয়েছেন। তারা তাদের টাকা দ্রুত ফেরত পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।

সৃষ্ট ঘটনায় আনোয়ার হোসেনকে বিবাদী করে ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের লক্ষ্মীপুর জেলা ব্যবস্থাপক নেয়ামত উল্যা বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে প্রতারণা, চেক ডিজঅনারসহ ৩টি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাগুলো তদন্ত করার জন্য পিবিআই ও ডিবি পুলিশকে দায়িত্ব দেয়। আদালতে মামলা হওয়ার পর থেকে আনোয়ার হোসেন গা ঢাকা দেয়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) গভীর রাতে রামগঞ্জ থানার পুলিশের উপ পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ও সাব্বির হোসেনসহ পুলিশ সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার শনির আখড়া এলাকা থেকে আনোয়ার হোসেন জিকুকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার হোসেন রামগঞ্জ পৌরসভার নরিমপুর গ্রামের বাঁশয়ালা বাড়ির মৃত আবু সাইদের ছেলে।

ক্ষতিগ্রস্থ থানার সামনের বাসিন্দা সহিদ পাটোয়ারীর মেয়ে পিংকিসহ কয়েকজন নারী পুরুষ জানান, আনোয়ার হোসেন উপজেলা ডাকঘর অফিসে উদ্যোক্তা হিসেবে কম্পিউটার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি ব্যাংক এশিয়ার (কেন্দ্রীয় কার্যালয়) অনুমতিক্রমে ডাকঘর অফিসে এজেন্ট ব্যাংকিং চ্যানেলে একাউন্ট খোলার মাধ্যমে সহস্ত্রাধিক গ্রাহক সংগ্রহ করেন। পরে প্রতারণার মাধ্যমে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যায়। আমরা আমাদের টাকা ফেরৎ চাই।

ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট ব্যাংকিং ডিভিশনের লক্ষ্মীপুর জেলা ব্যবস্থাপক নেয়ামত উল্যা জানান, উপজেলা ডাকঘর অফিস থেকে যারা সঞ্চয়পত্র সংগ্রহ করবে মাস শেষে লভ্যাংশের টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংক (বাংলাদেশ ব্যাংক) থেকে সরাসরি গ্রাহকের একাউন্টে এসে জমা হবে। এমনটাই নিয়ম। কিন্তু যখন দেখলাম বিভিন্ন মাধ্যম থেকে দু’এক মাস গ্রাহকের মোবাইলে ম্যাসেজ যাচ্ছে তখনি নজরে আসে বিষয়টি। পরে খতিয়ে দেখা যায় গ্রাহকদের একাউন্টে কোন টাকাই জমা হয়নি।

সাথে সাথে রামগঞ্জ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে জানালে কৌশলে আনোয়ার হোসেনের পাসপোর্ট জব্দ করা হলে আনোয়ার পালিয়ে যায়। পরে তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাগুলোর ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে।

এ ব্যাপারে রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল বাশার জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশক্রমে ঢাকার শনির আখড়া থেকে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাত মামলায় ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করি। তার বিরুদ্ধে একাধীক মামলা রয়েছে।

মেসেঞ্জার/জাকির/তুষার