ঢাকা,  শনিবার
২৯ মার্চ ২০২৫

The Daily Messenger

লংগদুতে নারীকে ধর্ষণ চেষ্টায় যুবক আটক

লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৩৭, ১৯ মার্চ ২০২৫

লংগদুতে নারীকে ধর্ষণ চেষ্টায় যুবক আটক

ছবি : মেসেঞ্জার

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির লংগদুতে ইফতার পরবর্তী সময়ে ধানের জমিতে ফেলে এক নারীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক মোটরসাইকেল চালকের বিরুদ্ধে। ধর্ষণ চেষ্টার শিকার নারী ৪ সন্তানের জননী বলে জানা গেছে।

ঘটনাটি গত সোমবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার ৩নম্বর গুলশাখালী ইউনিয়নের মুর্শিদাবাদ এলাকায় ঘটেছে। অভিযুক্ত সোহাগ (৩৫) একই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে। পেশায় একজন ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক এবং যুবদলকর্মী বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ধর্ষণ চেষ্টার শিকার নারী ও তার আত্মীয়রা জানান, ওইদিন সন্ধ্যায় ভাতিজীকে বাসায় রেখে ধান ক্ষেতের মধ্যে সরু রাস্তায় দিয়ে আসার পথে ওত পেতে থাকা সোহাগ পিছন থেকে ঝাপটিয়ে ধরে চোখ-মুখ চেপে মুখে ওড়না বাঁধার সময় ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে জমিতে পড়ে যান। তখন সোহাগের হাত থেকে রেহাই পেতে মোবাইল দিয়ে কল দেওয়ার চেষ্টা করলে মোবাইলটি কেঁড়ে নিয়ে মাটিতে পুঁতে ফেলেন। পরে কৌশলে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে।

ধর্ষণ চেষ্টার শিকার নারীর স্বামী মোহাম্মদ আলী জানান, ঘটনার সময় আমি বাজারে ছিলাম। খবর পেয়ে বাসায় গিয়ে দেখি আমার স্ত্রীর এ করুণ অবস্থা। সারাদিন রোজা রাখার পর এমন ঘটনার শিকার হয়ে মানসম্মানের ভয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে স্থানীয় আক্কাস আলী ফার্মেসিতে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।

স্ত্রীকে হাসপাতালে কেন নিয়ে এসেছি তাই এলাকার নেতারা আমার উপর রেগে গেছেন এবং সামাজিকভাবে সালিশ করার কথা থাকলেও এখন করবেন না বলে জানান তারা। এছাড়াও আইনি প্রক্রিয়ায় না যাওয়ার জন্য বিভিন্ন জন চাপ প্রয়োগ করছে।

প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়া আক্কাস আলী ফার্মেসির গ্রাম্য চিকিৎসক মুকসেদ আলী জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগীকে অজ্ঞান অবস্থায় আমার এখানে নিয়ে আসলে আমি চিকিৎসা প্রদান করি। রোজা রাখায় তার শরীর দুর্বল ছিল। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত চিহ্ন এবং নখের আচর পাওয়া গেছে।

এ ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক সচেতন ব্যক্তি বলেন, অভিযুক্ত সোহাগ যুবদল কর্মী হওয়ায় এলাকার নেতারা পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে কৌশলে সময় নিয়ে সান্ত্বনামূলক ক্ষতিপূরণ দিয়ে বিচার শেষ করতে এবং সোহাগকে নিরাপদ রাখতে চেয়েছিল।

ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. মিলন মেম্বার এবিষয়ে জানান, ঘটনার পর আমরা স্থানীয়ভাবে বসে বিচার করতে সময় চেয়েছিলাম দুই-তিনদিন। এ ধরনের ঘটনায় লম্বা সময় কেন নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামীকাল আমাদের রাঙামাটিতে দলীয় সভা আছে, সেখানে যেতে হবে। সোহাগ কোনো কমিটিতে নেই বলে জানান তিনি।

লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভিকটিম এবং তার পরিবারের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীকে রাতের মধ্যে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে ঘটনার সঠিক তদন্ত করে আসামীর বিচার করতে ভুক্তভোগীর বাবা-মা ও এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, সমাজে আমাদের মানসম্মান নষ্ট করে দিয়েছে। ভুক্তভোগীর চার মেয়ে ও মেয়ের জামাই রয়েছে। দেশব্যাপী যেখানে ধর্ষণ বিরোধী আন্দোলন তোলপাড় সেখানে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার ক্ষোভ প্রকাশ করেন সচেতন মহল।

মেসেঞ্জার/সাকিব/তুষার