ঢাকা,  বুধবার
২৬ মার্চ ২০২৫

The Daily Messenger

সময়সীমা ফুরালেও বদলির আদেশ সহ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ

বান্দরবান বন বিভাগ 

বান্দরবান প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৫৮, ২১ মার্চ ২০২৫

সময়সীমা ফুরালেও বদলির আদেশ সহ বিধি ভঙ্গের অভিযোগ

ছবি: সংগৃহীত

চাকুরি বিধি অনুযায়ী, বদলির আদেশ জারির পর নির্ধারিত সময়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে ব্যতিক্রম ঘটলে কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট চাকুরীজীবীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়সহ যে কোন ধরনের শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু বদলির আদেশের সময়সীমা ফুরিয়ে গেলেও নতুন কর্মস্থলে যোগদানের স্থলে বরং আদেশ লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে বান্দরবান বন বিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

একইসঙ্গে বদলির আদেশ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ওই রেঞ্জ কর্মকর্তাকে রিলিজ না দেয়ার প্রসঙ্গও উঠে এসেছে। এছাড়া বিধি বহির্ভুতভাবে একাধিক রেঞ্জের বন প্রহরীদের দীর্ঘ সময় ধরে সদর রেঞ্জে নিয়োজিত করে রাখারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে জেলা পর্যায়ের সব পদের বদলি ও নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলোর তত্ত্বাবধান চট্টগ্রাম বন সংরক্ষক কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, বন বিভাগের অফিস আদেশ নং ৫৫/পি মূলে গঠিত চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের  বদলি ও নিয়োগের সুপারিশ প্রদান সংক্রান্ত কমিটির গত মাসের ২০ তারিখ অনুষ্ঠিত সভায় চার রেঞ্জ কর্মকর্তার বদলির বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই দিনই বদলির আদেশ জারী করেন চট্টগ্রামের বন সংরক্ষক মোল্যা রেজাউল করিম। জারী করা আদেশ অনুযায়ী কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের ফরেস্টার মো. জাকির হোসেনকে চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগ, লামা বন বিভাগের ফরেষ্টার মো. নঈমুল ইসলামকে পাল্পউড প্লান্টেশন বিভাগ বান্দরবানে, কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের ফরেস্টার মো. মনিছুর রহমানকে বান্দরবান বন বিভাগ ও বান্দরবান বন বিভাগের ফরেস্টার সুলতান মাহমুদ হাওলাদারকে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগে বদলি করা হয়। ওই আদেশে আরো বলা হয়, বদলি ও নিয়োগকৃত কর্মচারীদের চলতি মাসের   (আদেশে আগামি উল্লেখ রয়েছে) ৫ তারিখের মধ্যে  অব্যাহতি (অব্যাহতি করেন সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় বন কর্মকর্তারা) প্রদান করতে হবে। অন্যথায় পরের দিন অর্থাৎ ৬ মার্চ তারিখের মধ্যে সরাসরি অব্যাহতি পেয়েছেন বলে গণ্য হবে।

সুত্র আরো জানায়, এ বাস্তবতায় ৫ তারিখেই ফুরিয়েছে জারী করা বদলির আদেশের মেয়াদ। অথচ এখনো আগের পদে বহাল রয়েছেন বান্দরবান বন বিভাগের সদর রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ হাওলাদার। আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরও সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ এর লিজ ভূমির জোত পারমিটের কাঠ পাচারে মদদ দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি জোত পারমিটের জন্য জেলা প্রশাসনের নতুন অনুমোদন দেয়া দুটি বাগানের গাছের খাড়া মার্কিং করার দায়িত্বও দেয়া হয়েছে তাকে। বদলি হওয়া কোন রেঞ্জ কর্মকর্তাকে এমন দায়িত্ব দেয়াও বিধি বহির্ভুত। তবে মার্কিং করানোর জন্য একাধিকবার তাগাদা দিয়েও কাঠ ব্যবসায়ী রাজি না হওয়ায় এখনো মার্কিং করা সম্ভব হয়নি।

অন্যদিকে সেকদু রেঞ্জের বন প্রহরী মো. নাসিরুল আলমকে নীতিমালা বহির্ভুত ভাবে সদর রেঞ্জে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে নিয়োজিত রাখা হয়েছে৷ এর আগে টংকাবতী রেঞ্জে দায়িত্ব পালনকালে নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনায় ষ্ট্যান্ড রিলিজ করা হয় তাকে। এদিকে লামা বন বিভাগের ফরেষ্টার মো. নঈমুল ইসলাম আদেশ অনুযায়ী পাল্পউড প্লান্টেশন বিভাগ বান্দরবান কার্যালয়ে যোগদান করেছেন বলে সুত্র জানায়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে সেলফোনে সাড়া না মিলায় সংশ্লিষ্টদের মতামত জানা সম্ভব হয়নি৷ জানতে চাইলে বিকল্প কর্মকর্তা না পাওয়ায় সদর রেঞ্জ কর্মকর্তাকে রিলিজ দেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বন বিভাগ বান্দরবানের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আবদুর রহমান৷ অন্যান্য বিষয় সংশ্লিষ্টরা দেখবেন জানিয়ে তিনি ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেন, যে রেঞ্জে যিনি দায়িত্বে থাকবেন বিধি অনুযায়ী তিনি গাছের মার্কিং করবেন। বাগানে যে পরিমাণ গাছ থাকবে ওই পরিমাণ কাঠের অনুমোদন দেয়া হবে।

মেসেঞ্জার/মাউংটিং/জেআরটি