ঢাকা,  শনিবার
২৯ মার্চ ২০২৫

The Daily Messenger

থানচিতে অবৈধ ইটভাটায় পোঁড়ানো হচ্ছে কাঠ, হুমকির মুখের পরিবেশ

চিংথোয়াই অং মার্মা, থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৫:৩৯, ২৫ মার্চ ২০২৫

থানচিতে অবৈধ ইটভাটায় পোঁড়ানো হচ্ছে কাঠ, হুমকির মুখের পরিবেশ

ছবি : মেসেঞ্জার

সরকারি স্কুল ও বৌদ্ধ বিহার ঘেঁষে গড়ে উঠার বান্দরবানের থানচিতে অবৈধ এক ইটভাটায় কোন নিয়মনীতি না মেনে ইট তৈরি কাজে ব্যবহার হচ্ছে ফসলি জমির মাটি ও পাহাড়ের মাটি। কয়লার পরিবর্তে ইটভাটায় চুল্লিতে পোঁড়ানো হচ্ছে বনকাঠ ও লাকড়ি। সেখানে বিষাক্ত ধোঁয়ায় এলাকার মানবদেহে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে নানা রকম রােগব্যাধী, বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের!

এদিকে স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা রোটারিয়ান আনিসুর রহমান (সুজন) মালিকানাধীন এসবিএম কোম্পানির ইটভাটায় দেশের উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোন ধরনের লাইসেন্স বিহীন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া বহু বছর ধরে জ্বালানি হিসেবে কয়লার পরিবর্তে বনের কাঠ পুড়িয়ে আসছিল। তার ক্ষমতা দাপটে কেউ কিছু বলার সাহসই পেত না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, থানচির আলীকদম সড়কের এসবিএম কোম্পানির নামক একটি ইটভাটার অবস্থান। সেখানে সরকারি স্কুল ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে ইটভাটাটি। বিহার, মগক ঝিরি ও উষামং পাড়া পাশেই চলছে ইটভাটার সকল ধরনে কার্যক্রম। শ্রমিকরা ইট তৈরি কাজে ব্যস্ত, মেশিনের মাটি মিশ্রণ, কাঠের লাকড়ি ভাঙা ও চুল্লি থেকে ইটের ট্রাক গাড়ি ভর্তি করেছে অনেকেই।

ওই এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভাটার বড় বড় গাড়ি ও মেশিনের আওয়াজে তারা দিনে রাতে ঘুমাতে পারেন না। এছাড়া সংলগ্ন স্কুল, বিহার ও গ্রামীণ সড়কের ধুলাবালি ও চুল্লির কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হচ্ছে। দেশের প্রচলিত আইনে পরিবেশের জন্য কাঠ পোঁড়ানো নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছেন না, জ্বালানি হিসেবে পোঁড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে, তেমনি কালো ধোঁয়ায় কার্বন-ড্রাই অক্সাইড ছড়িয়ে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

ইটভাটায় দায়িত্বরত ম্যানেজার মো. সরোয়ার সাথে যোগাযোগ করার হলে তিনি জানান, এখন আমি বাহিরে আছি, কয়েকদিন পরে আসবো।

এই ইটভাটার মালিক ও দোসর আওয়ামী লীগের নেতা রোটারিয়ান আনিসুর রহমান (সুজন) সাথে যোগাযোগ করা হলে তার ফোন নম্বর সংযোগ না হওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আবদুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে মালিক আপিল করায় উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ নিষেধ আছে। তারপরেও চলতি মাসে আমি গেছি, বন্ধ করে আসছি।

নিষেধাজ্ঞা থাকার ভিতরে তারা কাজ চালাতে পারেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, নিষেধাজ্ঞা হচ্ছে যে, যেটা যে অবস্থা আছে, সে অবস্থা থাকবে। যদি কাজ চালাতে না পারে, সেটা হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে এলাকার জনস্বার্থে যতটুকু পারি ততটুকু অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মেসেঞ্জার/তুষার