
ক্যাপশন : বরগুনার আমতলী উপজেলার ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. ইমরানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন একই উপজেলার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আমতলীর প্রতিনিধি ফাতিমা তুজ জোহরা মৈতি -টিডিএম।
বরগুনার আমতলী উপজেলার ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. ইমরানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন একই উপজেলার মো. গোলাম মোস্তফার কন্যা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আমতলীর প্রতিনিধি ফাতিমা তুজ জোহরা মৈতি। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বেলা ১১টায় বরগুনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মৈতি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার পতনের পর আমতলী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মো. ইমরান খান আমতলী উপজেলার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিগণ যখনই কোন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন তখনই ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইমরান খান ও তার অনুসারীগণ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদেরকে বিভিন্নভাবে উত্যক্ত ও ইভটিজিংসহ বিভিন্ন প্রকারের অশালীন মন্তব্য করেন। শুধু তাই নয়, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন রকমের অসামাজিক, মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন কমেন্ট ও পোস্ট করে আসছে। যার একাধিক প্রমাণ মৈতির নিকট সংরক্ষিত আছে।
সম্প্রতি ইমরান খান মৈতিকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে এবং তার বন্ধুদের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা করে। যার স্ক্রিনশট তার বন্ধু মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। যা মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। গত ১৫ মার্চ মৈতি তার ফেসবুক আইডি ওপেন করলে ইমরান খান নামক ফেসবুক আইডি থেকে তাকে ধর্ষণের পরিকল্পনার খবর দেখতে পান।
উক্ত ঘটনা জানার পর পরই তাৎক্ষণিক মৈতি আমতলী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নম্বর ৬২৬, তারিখ ১৫/০৩/২০২৫ খ্রিঃ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইমরান খান ও তার অনুসারীরা তাকে ধর্ষণসহ নানা হুমকি দিয়ে আসছিলো। ১৬ মার্চ ২০২৫ খ্রি. সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭ টায় তার ছোট বোনের বাসায় ইফতার শেষে নিজ বাসায় ফেরার পথে আমতলী একে স্কুল সংলগ্ন রোডে ইমরান ও তার অনুসারীরা পথরোধ করে এবং তাকে টানা হ্যাচড়া করে ইমরানের মোটরসাইকেলে তোলার চেষ্টা করে।
এ সময় তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য ডাক চিৎকার করলে অচেনা কতিপয় লোক তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে ইমরান খান তার অনুসারীদের নিয়ে স্থান ত্যাগ করে। টানা হ্যাচড়া করায় মৈতি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সাহায্যকারী লোকজন নিজ বাসায় পৌঁছে দেন।
এ ঘটনার পরে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে ধর্ষণের হুমকি, অপহরণ ও হত্যার প্রমাণাদিসহ মৈতি মামলা রুজু করেন।
উক্ত মামলায় বিজ্ঞ আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহারের নির্দেশ প্রদান করেন। উক্ত নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ২০/০৩/২০২৫ খ্রি. মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করেন।
এরপর ইমরান খান ও তার সহযোগীরা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ফাতিমাতুজ জোহরা মৈতি ও তার পরিবারকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে এবং মামলা থেকে রক্ষা ও রাজনৈতিকভাবে পদপদবী ঠিক রাখার অপচেষ্টায় ২০ মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টব্দে আমতলী উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করে।
মৈতি আরও অভিযোগ করেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের আমতলী পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি, মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী মো. রিয়াজ মুন্সি ইমরান খানের এসব অপকর্মের সহযোগিতা করে আসছে। এই রিয়াজ মুন্সি একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। বিগত দিনেও সে তার পরিবারকে নানাভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করেছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।
বর্তমানে রিয়াজ মুন্সি নিজেকে রক্ষা করতে বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ছত্রছায়ায় থেকে নানা অপকর্ম করে আসছে। নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মৈতি সংবাদ সম্মেলনে তার পরিবারের নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচারের দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন তার পিতা মো. গোলাম মোস্তফা।
মেসেঞ্জার/হিমাদ্রি/তুষার