ঢাকা,  রোববার
৩০ মার্চ ২০২৫

The Daily Messenger

আবদুল হান্নান মাসুদের উপর হামলার ঘটনায় ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম এনসিপি’র

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৩১, ২৫ মার্চ ২০২৫

আবদুল হান্নান মাসুদের উপর হামলার ঘটনায় ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম এনসিপি’র

ছবি : মেসেঞ্জার

আবদুল হান্নান মাসুদ হাসিনা সরকার পতনের এক দফার ঘোষক। সে ৫ আগষ্টের আগে একাধিকবার রাজপথে হামলার শিকার হয়েছেন। আজ তাকে তার নিজ জন্মভূমি হাতিয়ায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হতে হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হামলার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা না হলে সারাদেশে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

আবদূল হান্নান মাসুদের উপর হামলার ঘটনায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রিয় যুগ্ম আহবায়ক হাফিজুর রহমান হাফিজ। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুরে হাতিয়া উপজেলা সদরে ধানসিঁড়ি গেষ্ট হাউসে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে তিনি আবদুল হান্নান মাসুদের পক্ষে এসব কথা বলেন।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ, তৌহিদুর রহমান, মো. ইসমাইল ও হাসিদুর রহমান। আহত হয়ে অসুস্থ্য থাকায় আব্দুল হান্নান মাসুদ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেননি।

বক্তব্যে হাফিজুর রহমান বলেন, গতকাল সোমবার ইফতার পরবর্তী নোয়াখালী হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের জাহাজমারা বাজারে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মূখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ একটি পথসভা করেন। উক্ত পথসভায় জুলাই আর্কাইভ ভিডিও দেখানো হয়। অতঃপর আব্দুল হান্নান মাসউদ হাজার হাজার জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। পুরো পথসভাটি অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে চলছিল।

হান্নান মাসউদের বক্তব্য চলাকালীন বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী দা-রামদা, ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাদের পথসভার দিকে একটি মিছিল নিয়ে আসে। ইতোমধ্যে সিসি টিভি ফুটেজ প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে। হামলার সাথে যুক্ত সকল বিএনপির সন্ত্রাসী ক্যাডারদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

একটা কথা খুব স্পষ্ট করে বলি। এই সন্ত্রাসীদের প্রায় সবাই বিএনপির রানিং কমিটির নেতাকর্মী। ৩/৪ জন বহিষ্কৃত সদস্য ছিল। সুতরাং বহিষ্কৃত নেতাকর্মী বলে বিএনপি এই ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের দায় এড়াতে পারে না। আমরা বিএনপির এই বহিষ্কার বহিষ্কার  নাটক করে দায়সারা কর্মকান্ড আর দেখতে চাই না।

উল্লেখ্য যে, ৫ই আগস্টের পর বিএনপির হাইকমান্ড হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করে ৩ মাস পর আবার তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে সদস্যপদ ফিরিয়ে দেয়। সুতরাং আমরা এসব আইওয়াশ সাংগঠনিক বিচার দেখতে চাই না। উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রকিবুল হাসান রাকিব, জাহাজমারা ইউনিয়ন স্বেচ্চাসেবক দলের আহ্বায়ক প্রার্থী মোহাম্মদ নকিব উদ্দিন, পল্টন থানা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিমেল ও হাতিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশান গং এই ন্যাক্কারজনক হামলার নেতৃত্ব দেয়।

উত্তপ্ত স্লোগান দিয়ে তারা পরিস্থিতি ঘোলাটে করার অপচেষ্টা করে।কিন্তু আমরা তাদের উস্কানিতে পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা চালিয়ে যেতে থাকি। পথসভা শেষে আমরা শান্তিপূণ মিছিল নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদেরকে বাঁধা দেয়।

এতে আমরা হান্নান মাসউদ ভাইয়ের নেতৃত্বে আমরা রাস্তায় বসে পড়ি।এরমধ্যে বিএনপির নেতারা তাদের কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের হাতিয়ার বিভিন্ন জায়গা থেকে জড়ো করতে থাকে। এমনকি তারা হাতিয়ার আওয়ামীলীগের সাবেক সংসদ সদস্য খুনী মোহাম্মদ আলীর চিহ্নিত আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে একত্রিত করতে থাকে।

রাত ১০ টার দিকে আমরা পুনরায় শান্তিপূর্ণভাবে চলে যেতে চাইলে বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী আব্দুল হান্নান মাসউদসহ আমাদের নেতাকর্মীদের হত্যার উদ্দেশ্যে ন্যাক্কারজনক হামলা চালায়। এতে এনসিপির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মূখ্য সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ আমাদের অন্তত ৫৪ জন নেতাকর্মী আহত হয়। তন্মোধ্যে ১৫ জন গুরুতর আহত হয়। ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়েছে।

এমনকি বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী ও তাদের ছত্রছায়াধীন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদল মিলে জুলাই অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়িতে শহীদ হওয়া হাতিয়ার রিটন ভাইয়ের ছোট ভাই আরিফ ভাইয়ের উপরও ন্যাক্কারজনক হামলা করে। আমাদের কয়েকটি গাড়ী ভাংচুর করে ও কয়েকটি লুট করে নিয়ে যায়। আমরা বিএনপির এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

আব্দুল হান্নান মাসউদ ১৭ জুলাই ৯০ টি গুলি খেয়ে গুরুতর আহত হয়েছিল। ৬ জন সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়ার পর জুলাই অভ্যুত্থানের আন্দোলন নেতৃত্ব প্রদান করেন। তিনি ২ আগস্ট অসহোযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দেন। অতঃপর ৫ আগস্ট আন্দোলনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত করেন। এই বিপ্লবীর নিরাপত্তা কোথায়? তাকেও বিএনপির সন্ত্রাসীরা ছাড়েনি।

তিনি আরো বলেন, সিসি টিভি ফুটেজ দেখে দেখে সকল বিএনপির সন্ত্রাসীদের চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করতে হবে। বিএনপিকে এ হামলার দায় স্বীকার করে সকল সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আজকে ইফতার পরবর্তী ওছখালীতে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।

মেসেঞ্জার/জিল্লুর/তুষার