ঢাকা,  শুক্রবার
১৮ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার নাজমুলের পদে পদে অনিয়ম-দুর্নীতি

প্রকাশিত: ০৮:২৮, ২৭ আগস্ট ২০২৩

আপডেট: ২১:৫৪, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কমিশনার নাজমুলের পদে পদে অনিয়ম-দুর্নীতি

ছবি: টিডিএম

শিশুকিশোরদের নীতি নৈতিকতা, শৃঙ্খলা শিক্ষার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্কাউটস। এই প্রতিষ্ঠানের জাতীয় কমিশনার কন্টিনজেন্ট লিডার কাজী নাজমুল হক নাজুর বিরুদ্ধে ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত কমিটিতে প্রমাণ হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি। তার অধীনে পর্তুগীজ ২৪তম জাতীয় স্কাউটস জাম্বুরিতে যাওয়া একজন ইউনিট লিডার ও একজন স্কাউট সদস্য বিদেশে ‘নিখোঁজ হওয়ার’ সত্যতা মিলেছে।

অভিযোগ রয়েছে-আর্থিক সুবিধা নিয়ে ওই দুইজনকে ‘পাচার’ করা হয়েছে। ২০২২ সালের ১ থেকে ৭ আগস্ট পর্তুগালে অনুষ্ঠিত জাম্বুরীতে গিয়ে ‘নিখোঁজ’ দুজনের ব্যাপারে পরিবার থেকেও কোনো অভিযোগ জানানো হয়নি বাংলাদেশ স্কাউটসে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নাজমুল হক একাধিক দেশে জাম্বুরিতে অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে নির্ধারিত ফির বাইরে বিধিবহির্ভূতভাবে বাড়তি টাকা নিয়েছেন এবং ইতোমধ্যে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমনকি বাংলাদেশ স্কাউটসের সিলেকশন কমিটির অনুমোদন ছাড়া নাজমুল হক একক সিদ্ধান্তে ইউনিট লিডার মরিয়ামুনেচ্ছাকে পর্তুগীজ জাম্বুরিতে অংশগ্রহণের সুযোগ প্রদান করেন। তদন্ত কমিটির কাছে দেয়া নাজুর ভাষ্যে জানা যায়, ওই জাম্বুরিতে অংশ নিয়ে জার্মানিতে অবস্থানকালীন সময়ে নিখোঁজ হন মরিয়ামুনেচ্ছা।

 আর স্কাউট সদস্য তরিকুল ইসলাম আইফেল টাওয়ার পরিদর্শনের পর ফেরার পথে নিখোঁজ হন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি-শুরু থেকেই মরিয়ামুনেচ্ছা ও তরিকুলের ‘বিদেশে থেকে যাওয়া’ (নিখোঁজ) বিষয়ে অবগত ছিলেন; তাই সিলেকশন কমিটিকে আড়াল করে মরিয়ামুনেচ্ছাকে বিদেশে নিয়ে গেছেন! তরিকুল কিংবা মরিয়ামুনেচ্ছার নিখোঁজ বিষয়ে বিদেশে অবস্থানকালীন সময়ে বাংলাদেশ দূতাবাস, পুলিশ অফিস, সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা দফতর, বাংলাদেশের কোনো থানায় সাধারণ ডায়েরি করেননি।

এমনকি বাংলাদেশ স্কাউটস-এর জাতীয় সদর দফতরে লিখিতভাবে কোনো তথ্য প্রদান করেননি। এ থেকেই নাজমুলের অসৎ উদ্দেশ্য প্রতীয়মান হয়।

এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- কাজী নাজমুল হক নাজু ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বেচ্ছায় তদন্ত কর্মকর্তার কাছে উপস্থিত হয়ে মৌখিকভাবে তথ্য প্রদান করেন। তার ভাষ্যমতে- ৩১ জুলাই রাতে সবাই যার যার রুমে বিশ্রাম নেওয়ার সময় মরিয়ামুনেচ্ছা নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে। স্কাউট সদস্য তরিকুল ইসলাম আইফেল টাওয়ার পরিদর্শনের পর ফেরার পথে নিখোঁজ হন। 

তদন্ত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নাজমুলের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্কাউটসের গঠন ও নিয়মের ধারা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা হিসাব রক্ষণ নির্দেশিকাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নগদ অর্থ লেনদেন করা হয়েছে।

পর্তুগীজ জাম্বুরিতে অংশ নেয়াদের কাছ থেকে অফিস স্মারকের বাইরে জনপ্রতি ৬০,০০০/- (ষাট হাজার) টাকা অনুমোদনবিহীন অতিরিক্ত গ্রহণ করা হয়েছে। রশিদের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ বিষয়ে কোনো প্রমাণ অফিস নথিতে পাওয়া যায়নি, তদন্ত কমিটির সামনে ডেস্ক কর্মকর্তারা উপস্থাপন করতে পারেনি। পরবর্তীতে অংশগ্রহণকারীদের নিকট থেকে সংগৃহীত রশিদ সাবমিট করা হয়েছে যা স্কাউটসের রশিদ নয়! রেন্ডম ভিত্তিতে এমন দুটি রশিদ বিশ্লেষণে দেখা যায় মীর মাহির বাবা মো. আবুল হাসান এবং আলী ইকবালের বাবা নুরুল্লাহ উভয়কে একই এমআর নম্বর (০১) দেয়া হয়েছে, যা বড় ধরনের প্রতারণার প্রমাণ। এমনকি একটি রশিদের সঙ্গে অন্য রশিদের ফরমেটেরও ব্যাপক অসঙ্গতি পাওয়া গেছে! এছাড়া পর্তুগীজ ২৪তম জাতীয় স্কাউটস জাম্বুরীর আর্থিক লেনেদেনের জন্য কোনো ব্যাংক হিসাবই খোলা হয়নি। এটাও স্কাউটস বিধির বড় ব্যত্যয়। 

প্রফেসর নাজমা শামসকে প্রধান করে গঠিত এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে  ২০ দিনের সময় দেয়া হয়। তিনি ২০২২ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর এতোদিনেও কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

বাংলাদেশ স্কাউটসের সহ-সভাপতি (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী সংসদের জিএস) নাজমা শামস ডেইলি ম্যাসেঞ্জারকে বলেন, কাজী নাজমুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। নাজমুল হকের বিরুদ্ধে এ টু জেড দুনীর্তির প্রমাণ রয়েছে। কিন্তু আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এ টু জি পর্যন্ত। আমি দায়িত্বের মধ্যে থেকে এ টু জি পর্যন্ত তদন্ত করেছি। 

বাংলাদেশ স্কাউটসে এ ধরনের তদন্ত আগে কখনো হয়নি, ফরমেট নেই। তাই স্কাউটস আইনে টাকা তোলার ব্যাপারে বলা আছে, বিদেশে পাঠানোর ব্যাপারে নির্দেশনা আছে। এ আইনের আলোকে যে ব্যত্যয় পেয়েছি তা তুলে ধরেছি।

তিনি আরও বলেন, আমাকে তদন্ত করার জন্য ২০ দিন সময় দেয়া হয়, ৭ দিনে তদন্ত শেষ করেছি। প্রতিবেদন জমা দেয়ার পর অনেগুলো ২০ দিন পার হলেও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বাংলাদেশ স্কাউটসের চিফ ন্যাশনাল কমিশনার (মোজাম্মেল হক খান) কে একাধিকবার বলেছি, ফোন করেছি-দুইতিন মাস হয়ে গেল কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। উনি আমাকে বললেন, আমি দেখতেছি, দেখব। এরপর আমি আর নক করিনি। 

নাজমা শামস বলেন, যেদিন ইসি মিটিং হলো, সেদিন চিফ ন্যাশনাল কমিশনার (মোজাম্মেল হক খান) বললেন, আমি নাজমুল হকের এজেন্ডা আনতে চাই নি। তখন সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বললেন, আমিও চাইনি। কিন্তু আপনি যেহেতু ৭ মাস হয়ে যাওয়ার পরও ব্যবস্থা নেননি, আমি আপনাকে আনতে বাধ্য করেছি। চিফ ন্যাশনাল কমিশনার বললেন, আমি এটা দেখব। তখন সভাপতি বললেন, আপনাকে ১ মাস সময় দেয়া হলো-এটা দেখার জন্য।  গত ১৯ আগস্ট সেই এক মাসও পার হয়ে গেছে, কিন্তু কিছু হয়নি।  তাই আমি নিজেই ভাবতেছি একটা মামলা করে দেবো, আমাকে বেকার পরিশ্রম করানোর জন্য। মামলায় আমি বলব, চিফ ন্যাশনাল কমিশনার (মোজাম্মেল হক খান) আমার রিপুটেশন কলুষিত করার জন্য আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে। কারণ যে কোনো তদন্ত হলে দুইটা ভাগ হয়ে যায়।   

তদন্তে নাজমুল হকের অনিয়ম-দুর্নীতি প্রসঙ্গে নাজমা শামস বলেন, যেকোনো প্রতিষ্ঠানের টাকা উত্তোলনের জন্য রশিদ লাগে। তার ডেস্ক অফিসারের কাছে র‌্যান্ডম ভিত্তিতে রশিদ চাইলাম, কয়েকটা নিয়ে দেখতে গিয়ে দেখলাম, একই নম্বর দুইটি রশিদের! কিন্তু টাকা প্রদানকারী আলাদা, বাবার নাম আলাদা-এটা কীভাবে সম্ভব। এটার অথেনটিসিটি তো জিরো!

আবার টাকা একজনের কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে নেয়া যেতে পারে, কিন্তু পরিমাণটা তো সবার সমান থাকতে হবে। সেটার কোনো রেকর্ড নেই! এরপর সিলেকশনের অনেকগুলো কাগজ থাকে, কিন্তু ফাইনাল হলে ফাইলে রাখা দরকার- সিলেকশন কমিটির কাগজ, সদস্য আহ্বানের নোটিশ, কোন প্রক্রিয়ায় সিলেকশন হয়েছে সেটার কাগজ, সিলেকশন মিটিংয়ে উপস্থিত সদস্যদের সাক্ষর, মন্তব্য, যাদের সিলেকশন করা হলো, তার মার্কিং তো থাকতে হবে। এ ধরনের একটাও কাগজ ফাইলে পাওয়া যায়নি। 

একজনের অপারগতার বিপরীতে মরিয়মুনেচ্ছাকে বিদেশে নেয়ার বিষয়ে সিলেকশনের কোনো কাগজপত্র নেই। এমনকি মরিয়মুনেচ্ছার কর্মক্ষেত্রের কোনো কাগজপত্র নেই। এটা বড় ত্রুটি।
জাম্বুরীতে দুইজনের মিসিং বিষয়ে কাউকে কিছু বলেননি, ফেরত এসে বাংলাদেশ স্কাউটসে রিপোর্ট করতে পারত, লিখিত দিতে পারতো, কিন্তু কিছুই করেনি। 

অভিযুক্ত কাজী নাজমুল হক ডেইলি ম্যাসেঞ্জারকে বলেন, যে তদন্ত কমিটির কথা বলছেন, সেই কমিটি তো আমার সঙ্গে একবারও কথা বলেন নি। আমাকে ডাকেওনি।  

দুজনকে দেশের বাইরে রেখে আসার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কাউকে অবগত না করার প্রসঙ্গে নাজমুল হক বলেন, যেখানে জানানোর আমি জানিয়েছি। তার ডক্যুমেন্টস আছে। তিনি আরও বলেন, আমার নামে

একটা বেনামি চিঠি এসেছে, তার উপরে তদন্ত কমিটি কাজ করেছে। যিনি অভিযোগ করেছে, তাকে কি চিঠি দিয়েছে তদন্ত কমিটি, তার সঙ্গে কি কথা বলেছে। 

তিনি আরও বলেন, নির্বাহী কমিটিতে আলোচনা হয়েছে। চিফ ন্যাশনাল কমিশনারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কমিটি গঠন হয়েছে, সেই কমিটি বিষয়টি দেখছে। 

তবে নাজমুল হকের বক্তব্য তদন্ত কমিটি নিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন  বাংলাদেশ স্কাউটসের পরিচালক (সংগঠন) আবুল হাসনাত মো. মুহসিনুল ইসলাম। আর এ প্রসঙ্গে নাজমা শামস বলেন, তদন্ত শুরুর প্রথম দিন আমি তাকে (নাজমুল) ডেকেছি, তার ডেস্ক অফিসাররাও জানেন। এবং     এটা কাকতালীয় ব্যাপার, সেদিন অডিট কমিটির মিটিং আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল, অডিট কমিটির সবাই ছিলেন। সভাপতি মহোদয়ের রুমে যেহেতু আমরা কাজ করি, আমি ওখানেই নাজমুল হককে ডেকেছিলাম। মরিয়মুনেচ্ছা ও তরিকুল ইসলামের বিদেশে থেকে যাবার বিষয়টিও তিনি স্বীকার করেছেন।

বাংলাদেশ স্কাউটসের পরিচালক (সংগঠন) আবুল হাসনাত মো. মুহসিনুল ইসলাম ডেইলি ম্যাসেঞ্জারকে বলেন, পর্তুগাল জাম্বুরিতে ‘নিখোঁজ’ হওয়ারা ইনটেনশনালি কাজটি করেছে। আমাদের কাছে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। মরিয়ামুনেচ্ছা তো তার ঢাকার কর্মস্থলে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছে। 

পর্তুগাল জাম্বুরিতে নাজমুলের যত অনিয়ম : জনপ্রতি আনুমানিক খরচ এক লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ স্কাউটস সার্কুলার প্রদান করেছিল। কিন্তু নাজমুল হক নাজু অনুমোদনহীনভাবে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২ লাখ ১০ হাজার টাকা গ্রহণ করে।

বাংলাদেশ স্কাউটসের সার্কুলারে বলা হয়-যারা নির্বাচিত হবেন, তাদেরকে বাংলাদেশ স্কাউটসে ৫০ হাজার টাকা করে জমা দিতে হবে। কিন্তু অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে আন্তর্জাতিক বিভাগের উপপরিচালক ইকবাল হোসেন কন্টিনজেন্ট লিডার নাজমুল হক নাজুর পক্ষে নগদ টাকা গ্রহণ করেছেন। ওই টাকা স্কাউটসে জমা দেননি। এ ছাড়া একেকজন অংশগ্রহণকারীর কাছ থেকে একেক পরিমাণ টাকা নেন। 

পর্তুগাল জাম্বুরিতে শুধু আর্থিক অনিয়মই নয়,নাজমুল হক নাজুর ছেলেসহ সাতজন এনসি ডিএনসির ছেলেমেয়ের ‘বিনোদন ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়’। অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের থেকে নেয়া অতিরিক্ত অর্থ নাজমুল ও তার সতীর্থদের সন্তানের বাড়তি খরচ মেটানো হয়েছে।

টিকেট কেনার সময় ঢাকা-পর্তুগাল টিকেট মূল্য ছিল ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। কিন্তু নাজু তার একক সিদ্ধান্ত ও চাতুরতায় ঐ টিকিট এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকায় কেনা দেখিয়েছেন। শুধুমাত্র টিকেট কেনাতেই প্রায় ১৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

আরও যত অভিযোগ : বাংলাদেশ স্কাউটসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, অভিযুক্ত নাজু শুধু পর্তুগাল জাম্বুরিতেই নয়, এর আগেও ২০১৬ সালের ভারত স্কাউটস এন্ড গাইডসের জাতীয় জাম্বুরিতে ২০০-এর  বেশি অংশগ্রহণকারী নিয়ে বাংলাদেশ স্কাউটসের কন্টিনজেন্ট লিডার হিসেবে  যোগ দেন। কন্টিনজেন্টের আয় ব্যয়ের হিসাব ও রিপোর্ট জমা দেননি। 

২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার স্কাউটস এন্ড গাইডসের জাতীয় জাম্বুরিতে ১২৮ অংশগ্রহণকারীর কন্টিনজেন্ট লিডারও ছিলেন নাজু। জনপ্রতি ১ লাখ ৯০ হাজার করে ২ কোটি তিতাল্লিশ লাখ বিশ হাজার টাকা উত্তোলন করে। কিন্তু মাত্র ৫১ লাখ বিশ হাজার টাকা বাংলাদেশ স্কাউটসের মাধ্যমে উত্তোলন করা হয়। বাকি প্রায় দুই কোটি টাকা নাজু নগদ উত্তোলন করেন, যা সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূত। একইভাবে তিনি এই টাকার কোনো হিসাব জমা দেননি। আন্তর্জাতিক বিষয়ক জাতীয় কমিটি তাকে একাধিকবার চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া পায়নি। 

২০২১ সালে আয়ারল্যান্ডে বিশ্ব রোভার মুটে অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে নিজের একাউন্টে রেখে মুট স্থগিত হওয়ার ২ থেকে ৩ বছর পর টাকা ফেরত দেয়। যা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভুত।
এছাড়াও নাজমুল হক নাজুর বিভাগে তার আওতায় ২০২০ সালে টেকনাফে ক্যাম্প করে ২ কোটি টাকার অধিক খরচ করেন যেখানে স্কাউটদের খুব নিম্নমানের খাদ্য দেওয়ার অভিযোগ ছিলো। প্রধান জাতীয় কমিশনার প্রোগ্রাম শেষের ১ সপ্তাহের মধ্যে হিসাব সমন্বয়ের নির্দেশ দেন। তিনি একটি মূল্যায়ন সভা করেন কিন্তু অডিট ও হিসাব সমন্বয় করেননি।

২০২২ সালে মিঠামইনের সম্পন্ন দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ক্যাম্পের প্রায় ৩ কোটি টাকার খরচের কোন অডিট এবং আয় ব্যয়ের খরচের হিসাবও জমা দেননি।

উল্লেখ্য রোটারি ক্লাব অফ ঢাকা উর্বানা (২০০৯-২০১০) কমিটি থেকে আর্থিক অনিয়মের কারণে বহিস্কৃত হন।

মেসেঞ্জার/হাওলাদার