ঢাকা,  শনিবার
০৫ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

এএসপি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:৪১, ৫ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ১৭:৪৮, ৫ জুলাই ২০২৪

এএসপি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

ছবি : সংগৃহীত

চাকরি হারানো পুলিশের সেই এএসপি ইয়াকুবের হোসেনের বিরুদ্ধে এবার দুদক মামলা করতে যাচ্ছে। বিভিন্ন লোকজনকে ফাঁদে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। কয়েকজন ভুক্তভোগী কয়েক লাখ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে দুদকে অভিযোগ দায়ের করেন। এই অভিযোগের অনুসন্ধানে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেয়ার ও দায়িত্ব অবহেলার সত্যতা পেয়েছে দুদকের অনুসন্ধান টিম।

দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) জহুরুল হক বলেন, এএসপি ইয়াকুবের বিরুদ্ধে আমাদের অনুসন্ধান শেষ অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। অনুসন্ধান টিম রিপোর্ট পর্যালোচনা শেষে এজাহারের দায়েরের সির্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীগ্রই এজাহারের অনুমোদন দেয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এএসপি ইয়াকুব কুষ্টিয়ায় চাকুরিকালীন সময়ে নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হন। এমনকি সাধারণ মানুষকে নানা ধরনের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিতে একটি চক্রও গড়ে তোলেন। ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ পাওয়ার পর ইয়াকুবকে কুষ্টিয়া থেকে বদলি করে সারদা পুলিশ ট্রেনিং একাডেমিতে বদলি করা হলেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত করতে থাকে পুলিশ সদর দপ্তর। পুলিশ তার বিরুদ্ধে তদন্তে সত্যতা প্রমান পায়। পরে তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। গত ৩০ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনে তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরের আদেশ দেওয়া হয়।

দুদক সূত্র জানায়, ইতিমধ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে তার বিরুদ্ধে অসদাচরণ’ ও ‘দুর্নীতির অভিযোগে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান গুরুদণ্ড প্রদান করেছেন। সেটি বিবেচনা সহ তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। দুদক তার বিরুদ্ধে শীগ্রই মামলা দায়ের করবে।

পুলিশ সদরদপ্তর সূত্রে জানা যায়, নারী ও পুরুষকে একসঙ্গে নিয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে জিম্মি করে টাকা আদায় করার জন্য পাঁচজন পুলিশ সদস্য নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ চক্রও গড়ে তুলেছিলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে সহকারী পুলিশ সুপার ইয়াকুব হোসেন কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর সার্কেলে দায়িত্বে ছিলেন। তখন তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন মিরপুর থানার সাবেক এসআই জীবন বিশ্বাস, কনস্টেবল আল আমিন, কনস্টেবল মো. আব্দুস সবুর, গাড়িচালক কনস্টেবল সামিউল, কনস্টেবল রানা ও কনস্টেবল অনিকের সমন্বয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে একটি টিম গঠন করেন। ২০১৯ সালে ১৯ জানুয়ারি পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী পৌর এলাকার মোশারফপুর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লিপি কমিশনারের বাড়িতে আকস্মিকভাবে প্রবেশ করেন। সেখানে এক নারীর সঙ্গে অভিযোগকারী মো. আশরাফ হোসেন ও মো. শামীম রেজা অবস্থান করাকে অবৈধ কাজের অভিযোগ তুলে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন। পরে তাদের অর্ধনগ্ন অবস্থায় ছবিও তোলেন। পরবর্তীতে মিরপুর বাজারে বিকাশ ব্যবসায়ী সোহেল রানার মাধ্যমে অভিযোগকারীদের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন।

বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী আশরাফ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের বিপরীতে অভিযুক্ত সহকারী পুলিশ সুপার ইয়াকুব হোসেনকে কারণ দর্শাতে বলা হয়।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়—পরবর্তী তদন্তে বিষয়টি প্রমাণ হওয়ায়। অপরাধের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদিসহ সার্বিক বিবেচনায় তাঁকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ) ও ৩ (ঘ) বিধি অনুযায়ী যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘দুর্নীতি’ এর অভিযোগে একই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপ-বিধি ৩ (খ) মোতাবেক ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান’ গুরুদণ্ড দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে সাবেক এএসপি ইয়াকুবের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

মেসেঞ্জার/সজিব

×
Nagad