ঢাকা,  রোববার
০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

টাঙ্গাইলে নববধূ ধর্ষণের অভিযোগে স্বামীসহ দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে মামলা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি   

প্রকাশিত: ২০:৪৫, ২৭ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ২১:৪৬, ২৭ জুলাই ২০২৪

টাঙ্গাইলে নববধূ ধর্ষণের অভিযোগে স্বামীসহ দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে মামলা

ছবি : সংগৃহীত

টাঙ্গাইলে নববধূ ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে স্বামীসহ দুই বন্ধুর নামে। এতে স্বামীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করে কোর্টে চালান করে দিয়েছে।

এরা হলেন- কালিহাতী উপজেলার গোহালীয়াবাড়ি এলাকার নরুল আমীনের ছেলে নববধুর স্বামী আ.বাছেদ ও একই এলাকার দুই বন্ধু মৃত আ.বাছেদের ছেলে জুলহাস ও আকতার আলীর ছেলে রবিন (পলাতক)।

জানা যায়, ভুয়াপুর উপজেলার গাবসারা ইউনিয়নে হযরত আলীর মেয়ের সাথে কালিহাতী উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নে গোহালিয়া বাড়ীর নরুল আমীনের ছেলে আ. বাছেদের সাথে পারিবারিক ভাবে ১৭ জুলাই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কনে শশুর বাড়িতে গেলে স্বামীসহ দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন কনে পক্ষের লোকজন।

স্বামী আ.বাছেদ বলেন ১৭ জুলাই বুধবার বিয়ে করে আমাদের বাড়িতে তুলে আনি। পরের দিন ১৮জুলাই আমিসহ আমার সাথে দুইবন্ধু শশুর বাড়িতে (কোলদাইরা ) হিসাবে ফিরানী যাই । শশুর বাডি যাওয়ার পর স্ত্রী তার মায়ের কাছে বলে ছেলে আমার পছন্দ না। তার সাথে আমি সংসার করবো না। এই শুনে গাবসারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনিরকে ডেকে আনেন।

তাকে একটা সমাধান করার জন্য বলেন আমার শাশুরী। সাবেক চেয়ারম্যান মনিরের নেতৃত্বে আমাকে এবং আমার দুই বন্ধুদের নিয়ে আমার স্ত্রীর মামার বাড়িতে ঢেকে নিয়ে ইচ্ছামত মারধর করেন। তারা মারধরের এক পর্যায়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের কথা স্বীকার করান।

সেই কথা তারা ভিডিও ধারন করে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেন। আমাদের এলাকায় খবর দিলে তারা টাকা দেওয়ার কথা বলে ছাড়িয়ে নেন। স্বামী বাছেদ এবং বন্ধু জুলহাস বলেন আমরা যদি ধর্ষণের কাজ করে থাকি তাহলে আমাদের জনসম্মুখে ফাঁসি দেন।

আমরা এই কাজ করেনি। আমাদের ফাঁসাতে তারা এবং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মনির এই কর্মকান্ড করছে।

এদিকে স্বামীসহ একবন্ধু ও স্ত্রী এবং শাশুরিকে থানায় জিঞাসাবাদে কালিহাতী থানার পুলিশ শুকবার ২৬ জুলাই ডেকে আনছে। জিজ্ঞাসাবাদে স্বামীসহ দুই বন্ধুর নামে শাশুরী তিনজনকে আসামী করে শনিবার কালিহাতী থানায় মামলা দায়ের করে স্বামীসহ এক বন্ধু জুলহাসকে গ্রেফতার করে তাদের দুই জনকে কোর্টে চালান করেন।

শাশুরী সারা খাতুন বলেন বিয়ের পরের দিন মেয়েকে এবং মেয়ের জামাই ও দুই বন্ধুকে ফিরানী আনা হয়। এরপর মেয়ে বলে মা আমার ভাল লাগে না। আমি সংসার করবো না। তখন দিশকুল না পেয়ে সাবেক চেয়ারম্যান মনিরকে ডেকে এনে একটা সমাধান করে দেওয়ার জন্য বলি। তার পর মনির চেয়ারম্যান কি করেছে আমরা জানি না। তিনি বলেন আমার মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করা তিনজনের নামে মামলা করেছি।

এদিকে স্ত্রী ধর্ষণের কথা অস্বীকার করে বলেন আমাকে আমার স্বামী ছাড়া কেউ ধর্ষণ করেছে কি না আমি জানি না। তবে স্বামী কাছে থাকার পর কিছুক্ষন অচেতন ছিলাম। তিনি আরও বলেন আমার বিশ্বাস আমার এর্ঘটনার পিছনে মা এবং সাবেক চেয়ারম্যান জড়িত। তারা হয়তো ভাবছে মেয়ে যখন ছাড়তে হবে তখন টাকা জন্য এটি হতে পারে। এরপর ভিডিও ধারনে কনে নিজে ধর্ষণের কথা বলছে সেটি জিজ্ঞাসা করলে তখন তিনি চুপ হয়ে যান।

এ ব্যাপারে গারসারা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বলেন এবিষয় আমাকে ডেকে নেওয়ার পর মেয়ের মায়ের কথা শুনে চলে আসি।তারপর ওখানে কি হয়েছে আমি জানিনা। আমার ব্যাপারে কেউ কিছু বলিলে সেটি মিথ্যা অভিযোগ দিছে।

এব্যাপারে কালিহাতী উপজেলার গোহালিয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ.হাই বলেন এটা একটা ধান্দা। গাবসারা এলাকার মানুষ এই জঘন্য তম কাজ করতে পারে এই অসহায় ছেলেদের উপর। এই ছেলেরা একজন গরীব ও নিরহ লোক। তাছাড়াও মেয়ে আমার কাছে অস্বীকার করেছে যে এটি হয়নি। তারপরও কেমনে মামলা হয়।

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফুদ্দিন বলেন, একটি সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলে আমরা বর কনে সহ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করি।

এরপর কনের মা থানায় একটি ধর্ষণের মামলা করে। তখন বর এবং বরের বন্ধুকে আটক করে কোর্টে দেওয়া হয়েছে। এদিকে কনেকে ডাক্তারী পরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মেসেঞ্জার/উজ্জল/আপেল

×
Nagad