ঢাকা,  শুক্রবার
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

মেসেঞ্জার অনলাইন

প্রকাশিত: ১৪:২৪, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

ছবি: মেসেঞ্জার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তের জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। এদিকে এ বিষয়ে এজাহার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ এজাহারটি শাহবাগ থানায় মামলা হিসেবে গ্রহন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার ওসি এ কেএম শাহাবুদ্দিন শাহীন।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হল সূত্রে জানা যায়, উক্ত ঘটনা তদন্তের জন্য আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীর সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে।

এছাড়া অন্যান্য সদস্যরা হলেন আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. শেখ জহির রায়হান, আবাসিক শিক্ষক মো. মাহাবুব আলম , আবাসিক শিক্ষক ড. আছিব আহমেদ, সহকারী আবাসিক শিক্ষক ড. এম এম তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী প্রক্টর (বিজ্ঞান অনুষদ) এ. কে. এম. নূর আলম সিদ্দিকী।

এদিকে শাহবাগ থানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষএ এজাহার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। উক্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আমি নিম্নোস্বাক্ষরকারী মোহাম্মদ আমানুল্লাহ (৩২), জাতীয় পরিচয়পত্র নং-১১৯৮৩২৬৮৬ ৩১৮০০০৩৯৪, পিতা- মোঃ ইউসুফ, মাতা- হাসেন বানু, সাং- সুপারভাইজার এস্টেট অফিস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, থানা- শাহবাগ, ঢাকা আপনার থানায় হাজির হইয়া এই মর্মে এজাহার দায়ের করিতেছি যে, গত ১৮-০৯-২০২৪ইং তারিখ রাত্র ০৭.৪৫ ঘটিকার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেইটে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করিতে থাকিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়া সে মোবাইল চুরি করিয়াছে বলিয়া এলোপাথারী চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম- তোফাজ্জল বলিয়া জানায়। পরবর্তীতে সে মানসিক রোগি বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবর খাইয়ে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সাথে পিছনে হাত বেধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠিদ্বারা উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধরক মারধর করিলে সে অচেতন হইয়া পরে। তাহার এই বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানাইলে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করিয়া মেডিকেলে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে উক্ত যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করিয়া ১৯-০৯- ২০২৪ইং তারিখ রাত্র ০০.৪৫ ঘটিকার সময় তাকে মৃত বলিয়া ঘোষনা করে। যাহার রেজিঃ নং- ১৩৮৯/২৪২৫। ' 

উক্ত এজাহারটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে শাহবাগ থানা। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার ওসি এ কেএম শাহাবুদ্দিন শাহীন। 

এদিকে ঘটনার বিষয়ে ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষের অফিসে প্রভোস্ট শাহ মো. মাসুমসহ হল প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা শেষে সার্বিক বিষয়ে প্রক্টর জানান, প্রাথমিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আজকের মধ্যেই হল প্রশাসন সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে প্রক্টর অফিসে প্রতিবেদন দেবে। সেই প্রতিবেদনের আলোকে আজকের মধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে ডিসিপ্লিনারি মিটিং ও সিন্ডিকেটে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামের ঐ যুবককে আটক করে ফজলুল হক মুসলিম হলের শিক্ষার্থীরা। তোফাজ্জল মানসিক ভারসাম্যহীন। তার বাড়ি বরিশালের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই বলে জানা গেছে।

মেসেঞ্জার/ফামিমা

×
Nagad