ছবি: মেসেঞ্জার
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি করা হয়েছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শামীম আখতারকে। তবে তিনি এখনো পুলিশের ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছেন।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবাইদুল মুক্তাদির চৌধুরীর নির্দেশে ১৮ জুলাই মোঃ শামীম আখতার রামপুরা থানার ১৮/১৯৩ নং হত্যা মামলার ২৮ নং আসামি ও আওয়ামী লীগ নেতা মেহেদী হাসান জয়কে তার ক্যাশিয়ার নুসরাত হোসেনের (বর্তমানে কারাগারে ) মাধ্যমে ৩ কোটি টাকা পৌঁছে দেন |
এছাড়া দরবেশ খ্যাত সালমান এফ রহমানের নির্দেশে কেরানীগঞ্জের স্থায়ী বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা এবং এ হত্যা মামলার ৩২ নং আসামি মোবারকের নিকট নুসরাত হোসেনের মাধ্যমে ২ কোটি টাকা পৌঁছে দেন | এই টাকা যুবলীগের স্থানীয় নেতাকর্মীকে বন্টন করে আন্দোলন পন্ড করার জন্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে লাঠিসোঠাসহ ব্যাপক উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য বলেন |
পরের দিন অর্থাৎ ১৯ জুলাই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা লাঠিসোঠা ও অস্ত্রসহ পুলিশের সাথে আমজনতার দিকে গুলিবর্ষণ করতে থাকে | এতে মো: সোহান শাহসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হন এবং কয়েকজন তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে মারা যান।
এ হত্যা মামলায় মো: শামীম আখতারকে ৫৪ নং আসামি করা হয়েছে। অথচ তিনি দিব্যি ঘোরাফেরা করছেন, পুলিশও তাকে গ্রেফতার করছেনা। এছাড়াও হত্যা মামলার ৫০ নং আসামি সাবেক মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস (শামীমকে চিফ ইঞ্জিনিয়ার বানানোর কারিগর ) এর নির্দেশ মোতাবেক মোহাম্মদ শামীম আখতার সন্ত্রাসী ভাড়া করতে আওয়ামীলীগ নেতাদের বিভিন্ন জায়গায় অর্থ যোগান দিয়েছেন বলে মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, আন্দোলনে গুলিতে নিহত মো: সোহান শাহ'র মাকে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করার জন্য অধীনস্ত প্রকৌশলী এবং নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিএনপি নেতা এবং স্থানীয় মাতব্বরদের পেছনে প্রচুর অর্থ ব্যয় করছেন মো: শামীম আখতার। বিপুল এই অর্থ জোগাতে তিনি পোস্টিং বাণিজ্য করে গণপূর্তে অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
গণপূর্তের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশ টালবাহানা করছে। অথচ গণপূর্তের এই ভন্ড পীরের দুর্নীতির লাগাম টানতে ২০১৯ সালে গণপূর্ত অধিদপ্তরকে ২০ দফা সুপারিশ দিয়ে তা বাস্তবায়নে চিঠি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। চিঠিতে দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতি বন্ধে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্তাদের অনিহায় আজও সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি।
এদিকে, প্রধান প্রকৌশলীর দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। জানা গেছে, সম্প্রতি প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের লাগামহীন অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। অভিযোগ উঠেছে, ২০২০ সালে ছয়জনকে ডিঙিয়ে প্রধান প্রকৌশলীর চলতি দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল শামীম আখতারকে। মন্ত্রীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে প্রভাব বিস্তার করে মেধাতালিকায় ৭ নম্বরে থাকার পরও প্রধান প্রকৌশলী পদে চলতি দায়িত্ব পান তিনি। তারপর থেকেই গণপূর্তে চলছে তার সিন্ডিকেটের একচ্ছত্র দাপট। বিভিন্ন কাজ, নিয়োগ, বদলিসহ সকল কাজের নিয়ন্ত্রণ এই সিন্ডিকেটের হাতে।
মেসেঞ্জার/তারেক