ছবি : মেসেঞ্জার
গত দুই বছরে–মোট ২৪ মিলিয়ন ইউরো–এর মতো বড় অর্থায়নের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির জীবন রক্ষাকারী এবং জীবন পরিবর্তনকারী প্রচেষ্টাকে সহায়তা করেছে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা সংকটে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য সংস্থাটি তাদের গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে।
চলতি বছরের ঘূর্ণিঝড় এবং বর্ষা মৌসুমে, ইইউর মানবিক অর্থায়ন ডব্লিউএফপিকে দ্রুত চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোর মোকাবিলা করতে সহায়তা করেছে। এর মধ্যে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিধ্বংসী বন্যা, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, গাইবান্ধা এবং সিরাজগঞ্জে যমুনা অববাহিকার বন্যা, এবং খুলনা ও বরিশালে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। ২০২৩ সালে সাইক্লোন মোখার সময় এবং বাংলাদেশের অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চল চট্টগ্রাম পাহাড়ি অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের জন্য ডব্লিউএফপির সহায়তায় ইইউর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কক্সবাজার এবং ভাসানচরের ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য ডব্লিউএফপির জীবনরক্ষাকারী খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা বজায় রাখতে ইইউর সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এটি ২০২৩ সালে দুইবার রেশন কাটছাঁট প্রত্যাহারে সহায়তা করেছে, যার ফলে ডব্লিউএফপি আগস্ট ২০২৪ থেকে প্রতি ব্যক্তির জন্য মাসিক খাদ্য রেশন ১২.৫০ মার্কিন ডলারে পুনর্বহাল করতে সক্ষম হয়েছে। গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মায়েরা অপুষ্টি প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন, যাদের এই অর্থায়ন ছিল অপরিহার্য।
জরুরি সহায়তার পাশাপাশি, ইইউ ডব্লিউএফপির পূর্বপ্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ এবং শক-রেসপনসিভ সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি সহায়তা করেছে, যা জনগণকে দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত হতে এবং ভবিষ্যৎ দুর্যোগের বিরুদ্ধে দৃঢ়তা তৈরিতে সহায়তা করেছে।
আন্না অরলানদিনি, বাংলাদেশে ইইউ-এর মানবিক কার্যক্রমের তত্ত্বাবধায়ক, বলেন, “বাংলাদেশের তাৎক্ষণিক মানবিক চাহিদা এবং দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।" তিনি বলেন, "ডব্লিউএফপির সঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্ব আমাদের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে, যেখানে দুর্যোগ থেকে পুনরুদ্ধার করা বা একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য কাজ করা—কারোই পেছনে পড়ে থাকার সুযোগ নেই। এই সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য আশা, মর্যাদা এবং সুযোগ প্রদানের লক্ষ্য রাখি।"
রিকার্ডো সাপ্পো, ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের প্রোগ্রাম প্রধান, বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবিচল সহায়তা বাংলাদেশের জন্য আমাদের মানবিক প্রচেষ্টার ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একসঙ্গে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের সম্মুখভাগে থাকা এবং দীর্ঘস্থায়ী মানবিক সংকটে থাকা মানুষের জীবনে বাস্তব পরিবর্তন আনছি। বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রতি তাদের সব ধরনের সহায়তার জন্য আমরা অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।”
মেসেঞ্জার/তুষার