ছবি : সংগৃহীত
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৪৫ কোটি ১৫ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। এটি ছাড়াও ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ৯৭৩ কোটি ৫ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (২৬ জুন) দুপুর ৩ টায় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এই অধিবেশন শুরু হয়।
জাতীয় সঙ্গীত ও ধর্মীয় আচারের পর সিনেট চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং অধিবেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল অভিভাষণ প্রদান করেন।
সিনেট অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের বাজেট উপস্থাপন করেন। চতুর্থ বারের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি।
২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের বাজেটে ৯৪৫ কোটি ১৫ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। এ বাজেটের ৮০৪ কোটি ৪১ লক্ষ টাকা ইউজিসি থেকে পাওয়া যাবে। বাজেটে নিজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৯০ কোটি টাকা।
প্রাক্কলিত ব্যয়ের ৯.৫২% নিজস্ব আয় থেকে প্রাপ্তির আশাবাদ। এতে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ কোটি ৭৪ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা। যা, প্রক্ককিত ব্যয়ের ৫.৩৭%। এবারের বাজেটের মোট ব্যয়ের ৬৭%ই বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ। যা টাকার অংকের পরিমাণে দাঁড়ায় ৬৩৩ কোটি ৩২ লক্ষ টাকা।
২০২৩-২৪ সালের সংশোধিত বাজেট ছিল ৭৭৬.৬৮ কোটি টাকা। এই বছরের বাজেট সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২৭.৭৩ কোটি টাকা বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি পেলেও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অনুদান যথাযথভাবে বৃদ্ধি করছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন কোষাধ্যক্ষ।
২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের সংশোধিত বাজেটে নিজস্ব ৯০টাকা সহ আয় ধরা হয় ৮৯১ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা।
ফলে, ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৮১ কোটি ৩৭ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা। যা মোট প্রক্কলিত ব্যয়ের ৮.৩৬%।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় কোন লাভজনক প্রতিষ্ঠান (Profitable entity) নয় বিধায় নিজস্ব তহবিল থেকে ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে না। প্রতি বছর এভাবে তহবিলের ঘাটতি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন কষ্টসাধ্য হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়ের নতুন নতুন খাত খুঁজে বের করতে হবে অথবা সরকারের নিকট হতে বিশেষ অনুদান চাওয়া যেতে পারে।'
গবেষণা বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২০ কোটি ৫ লক্ষ টাকা যা মোট ব্যয়ের ২.১২%। ২০২৩-২৪ অর্থবছর হতে যা ৫ কোটি টাকার বেশি। উদ্দাবনের জন্য বাজেটে ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ বলেন, ' বর্তমান যুগে টিকে থাকতে হলে নতুন নতুন উদ্ভাবন প্রয়োজন। প্রচুর অর্থ ব্যয় ব্যতীত এ ব্যাপারে সাফল্যমন্ডিত হওয়া দিবাস্বপ্ন মাত্র।'
তিনি আরো যুক্ত করেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০০ এর বেশি শিক্ষক কর্মরত আছেন। প্রত্যেকের জন্য গড়ে গবেষণা বাবদ বরাদ্দ ১ লক্ষ টাকা। এই অর্থ দ্বারা বড় ধরনের মৌলিক গবেষণা আদৌ কি সম্ভব? আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং নিয়ে অনেক আলোচনা শুনতে পাই।
র্যাংকিং উন্নত করতে হলে প্রয়োজন গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা। এই খাতে বাজেট বরাদ্দ বহুলাংশে বৃদ্ধি করলে আমরা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাব বলে আমার বিশ্বাস।'
উপাচার্যের অভিভাষণ এবং কোষাধ্যক্ষের উপস্থাপিত বাজেটের উপর সিনেট সদস্যবৃন্দ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
মেসেঞ্জার/নকিব/আপেল