ঢাকা,  বুধবার
৩০ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

ছাত্রলীগের কার্যালয়ে ভাঙ্গচুর করে বিক্ষুব্ধ চুয়েট শিক্ষার্থীরা

চুয়েট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৯:২১, ১৮ জুলাই ২০২৪

ছাত্রলীগের কার্যালয়ে ভাঙ্গচুর করে বিক্ষুব্ধ চুয়েট শিক্ষার্থীরা

ছবি : মেসেঞ্জার

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) প্রশাসনের দেওয়া হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছে শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন নির্দেশনার প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা চুয়েট ছাত্রলীগ কার্যালয়ে ভাংচুর করে ও বিপরীত বিবৃতি দিয়ে হলে অবস্থান ও ছাত্ররাজনীতি বয়কটের সিদ্ধান্ত জানায়।

সারাদেশে চলমান বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনকে দমিয়ে রাখার অদম্য স্বার্থে প্রশাসন কর্তৃক অতর্কিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং হল ভ্যাকেন্টের যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ তাতে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে এবং সেই আদেশ বর্জন করছে।

বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা জানায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিবেচনায় তাদের নিজ নিজ জেলায় গমন করা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ এবং অনিশ্চিত।শিক্ষার্থীরা বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করেন, শিক্ষার্থীরা চুয়েটে সকল প্রকার ছাত্র, শিক্ষক, স্টাফ ভিত্তিক রাজনীতি বর্জন করেছে এবং এসকল কর্মকাণ্ডে কেউ জড়িত থাকলে তাকেও বর্জন করবে।

চুয়েটে ক্যাম্পাসের নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে চুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো, চুয়েট ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সকল প্রকার রাজনৈতিক সংগঠন (ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, বাম সংগঠন ইত্যাদি) এবং শিক্ষকদের রাজনীতি অবিলম্বে বর্জন,ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সকল ধরনের ছাত্রবৃত্তিক, শিক্ষকবৃত্তিক, স্টাফভিত্তিক সকল রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা, যারা এসব কর্মকান্ডে যুক্ত থাকবে, তাদেরকে সর্বপ্রকারভাবে বর্জন, হলসমূহে অবৈধভাবে সিট দখল, সিট বহাল, সিট বাতিল নিষিদ্ধ ঘোষণা, কোনো প্রকার 'পলিটিকাল রুম' কোনো হলে না থাকার ঘোষণা, প্রত্যেক হলে সূক্ষ্ম নীতি আলোকে, সমতা বিধানের মাধ্যমে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে সিট পুনরায় বণ্টন করা।

এই বিষয়ে  কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আদিল রায়হান বলেন, শিক্ষার্থীদের এমন যৌক্তিক আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্ত অনাকাঙ্ক্ষিত এবং নিন্দনীয়। দেশের এই ক্রান্তিকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় বাস কিংবা প্রাঙ্গণেই নিরাপদ নয়।

এমতাবস্থায় হল ছাড়ার নির্দেশ দিলে হলে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাবে কোথায়? আর ওদের যদি কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় এর দায়ভারই বা কে নিবে..? এজন্য শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা চুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রদত্ত হল ভ্যাকেন্টের সিদ্ধান্তকে বর্জন করলাম।

চুয়েট তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইহতিশামুল হক চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে, তাদের মতামত জানাবে। এই ক্ষেত্রে জোর পূর্বক এরকম নির্দেশ চাপিয়ে দেওয়া বোকামী। ছাত্রলীগের কার্যালয়ে ভাঙ্গচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সাগরময় আচার্য জানান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের উদ্দেশ্যে একপক্ষ ছাত্রলীগকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে এ কাজগুলো করছে। ক্যাম্পাসের জুনিয়র ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে কিছু রাজনৈতিক দল ফায়দা লুটতে এ ধরণের কাজ করেছে।

উল্লেখ্য,বুধবার (১৭ই জুলাই) রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত একটি লিখিত বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং আগামীকাল (১৮ই জুলাই) দুপুর ২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মেসেঞ্জার/ইপসিতা/আজিজ