ঢাকা,  রোববার
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

পাহাড়-সমতল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকান্ডের বিচারের দাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের

ঢাবি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ২১:১৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পাহাড়-সমতল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকান্ডের বিচারের দাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের

ছবি : মেসেঞ্জার

চলমান পার্বত্য চট্টগ্রামে সহিংসতা, হামলা ও 'হত্যাকান্ড'র যথাযথ বিচার দাবি, জনগণের নিরাপত্তা দাবি ও নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তারা পাহাড় সমতলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের যথাযথ বিচার ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল মহলের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানান।  

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন বলেন, ফজলুল হক হলে যে লোকটিকে মেরে ফেলা হয়েছে তাকে শুধু আঘাত করেনি, তাকে তারা ভাত খাইয়েছে, ছবি তুলেছে, কথা বলেছে তারপর আবারও আঘাত করে একেবারে মেরে ফেলেছে।

একজন মনোবিজ্ঞানী হিসেবে আমি যেটা বুঝেছি, এই কাজগুলো যারা করেছে তারা চরমভাবে মানসিক অসুস্থ। একজন মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যাক্তিকে তারা তাদের বিবেক দিয়ে, মানবিকতা দিয়ে দেখেনি। তারা হত্যার নেশায় এই কাজটা করেছে। হয়তো তারা পরে বলবে, এই কাজটা তারা ইচ্ছেকৃত করেনি। কিন্তু যে প্রক্রিয়ায় এটি ঘটেছে এটা তাদের বিকৃত মানসিকতারই প্রমাণ। 

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, আমাদের এই প্রশ্নটাও তোলা উচিত, এই পরপর দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি মানুষকে হত্যা করা হলো। তারপরেই আমরা দেখলাম যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে শিক্ষার্থীদের সবধরনের রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হলো। এর পরিষ্কার ব্যাখাটা কি? যে রাজনীতি করে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, আমরা ভাষা পেয়েছি, এই ২৪ এর বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বৈরশাসককে হটিয়েছে। এখানে কি রাজনীতি নেই? আপনি সেটাও যদি বন্ধ করে দেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে টা কি? খালি গান-বাজনা আর ফুল, লতা-পাতা?

তিনি আরো বলেন, এতদিন যে আধিপত্যের বিরুদ্ধে আপনারা আমরা মিলে লড়াই করেছি। আপনারাই যদি আধিপত্যের ধারক বাহক হয়ে ওঠেন। আপনাদের বিরুদ্ধেও আমাদের লড়াই করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ও পাহাড়ের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। 

অন্যন্য শিক্ষকরা বলেন,পাহাড়ে যারা অধিকারের জন্য লড়াই করছে তাদেরকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে আখ্যা দেয়া হচ্ছে। তারা কেন বিচ্ছিন্নতাবাদী হতে যাবে! বাংলাদেশের যে স্বাধীনতা আমরা ভোগ করছি, পাহাড়ের আদিবাসী, সমতলের আদিবাসী তারা এই বাংলাদেশের একজন,তাদেরও এই স্বাধীনতা ভোগ করার অধিকার রয়েছে।

এবং এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। তারা যে অধিকার চাচ্ছে, সেজন্য তাদের ব্যাখ্যা দিতে হচ্ছে তারা স্বাধীনতা চাচ্ছে না। কিন্তু তারা যা খাচ্ছে সেটা অবশ্যই তাদের স্বাধীনতা এবং সেটা সাংবিধানিক স্বাধীনতা। অবশ্যই তাদের এই দাবি নিশ্চিত করতে হবে। 

তারা আরো বলেন,দুইটা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বড়বড় ঘটনা ঘটে গেল। অথচ প্রশাসন খুব শান্ত-স্থীরভাবে বলছে, আমরা তো বুঝতে পারি নাই। এই যে প্রতিহিংসার রাজনীতি, আপনারা এই প্রতিহিংসাটা বাদ না দিয়ে রাজনীতি কে বাদ দিতে চান। আপনারা রাজনীতিকে নয় প্রতিহিংসা কে বাদ দেন। মনে রাখতে হবে, আপনাদের ক্ষমতা দেয়া হয় নাই। আপনাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সেই দায়িত্বগুলো ঠিকভাবে পালন করুন।

মেসেঞ্জার/নকিব/তারেক

×
Nagad