ঢাকা,  শনিবার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

‘শান্তি চুক্তির নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের সাথে অশান্তি চুক্তি করা হয়েছে’

ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৪৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

‘শান্তি চুক্তির নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের সাথে অশান্তি চুক্তি করা হয়েছে’

ছবি : মেসেঞ্জার

পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি চুক্তির নামে সন্ত্রাসীদের সাথে অশান্তি চুক্তি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

উক্ত সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, শান্তি চুক্তির নামে পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসীদের সাথে অশান্তি চুক্তি করা হয়েছে। অথচ পার্বত্য চট্টগ্রামের ৫১শতাংশ বাঙালি মুসলমানদের উপেক্ষা করা হয়েছে। পার্বত্য চট্রগ্রাম বাংলাদেশের অংশ। যারা চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র করবে তাদেরকে যেকোনো মূল্যে রুখে দেওয়া হবে। আমরা স্বৈরাচারকে হটিয়েছি। যারা পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে তাদের হুশিয়ার করা দিতে চাই, আপনাদেরও উৎখাত করা হবে। 

সমাবেশে 'লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, 'দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা', 'ওয়াশিংটন না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা', 'চব্বিশের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার, 'একাত্তরের হাতিয়ার জেগে উঠুক আরেকবার', 'পাহাড়ে জঙ্গলে ঘেরাও করো, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করো, 'সন্ত্রাসীদের দমন করো সেনা ক্যাম্প বৃদ্ধি করো' সহ নানা স্লোগান দেন।

এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে 'বাঙালিদের উপর হামলা কেন? প্রশাসন জবাব চাই', 'নয় ভারত, নয় আমারিকা বাংলাদেশকে ভালবাসতে শিখো উপজাতিরা'। 'পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্মল্যান্ড বানাতে ভারতীয় মদদে ' আদিবাসী' প্রচারণা রুখে দাও। ', 'আমার পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্মল্যান্ড কুকি চীন হতে দেবো না।' 'আমরা সবাই বাংলাদেশী কেউ নয় আদিবাসী' সহ নানা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।

এ সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিম মাহফুজ বলেন, আমরা উপজাতীদের বিপক্ষে নয়। আমরা টেরিরিজমের বিপক্ষে। আমরা জানতে চাই তাদেরকে কারা অস্র দিচ্ছে। এর ফলে আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে। আমরা বাংলাদেশি জাতিয়তাবাদে বিশ্বাসী। তারা আদীবাসী দাবি করে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। 

স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির পক্ষ থেকে মো. জিয়াউল হক বলেন, 'যখন মানুন নিহত হয়, যখন ওমর ফারুক ত্রিপুরা নিহত হয় যখন জুনন চাকমা তারা কোন বিবৃতি দেয় না। তারা বিবৃতিনদেয় যখন ইউপিডিএপের কোন সন্ত্রাসী নিতহ হয় তখননতাদের জন্য তাদের মানবতার জেগে উঠে। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে দিল্লি কিংবা ওয়াসিংটনের কোন ওয়াশিংটনের কোন বিবৃতি মানবো না। ' এ সময় স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টির পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি পেশ করা হয়। 

দাবিগুলো হলো:

১. বাংলাদেশের উপজাতিদের সম্বোধনের ক্ষেত্রে আদিবাসী ও জুম্ম শব্দ ব্যবহার এবং বাংলাদেশের বাঙ্গালীদের সম্বোধনে সেটেলার শব্দ ব্যবহারকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ঘোষণা করতে হবে। ব্যক্তি, এনজিও, মিশনারী কিংবা প্রতিষ্ঠান যারাই উপরোক্ত শব্দ ব্যবহার করবে তাদেরকে কালো তালিকাভুক্ত করে এদের বিরুদ্ধে শাস্তিযোগ্য আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

কোনো বিদেশী ওসব শব্দ ব্যবহার করলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে শক্তভাবে তার প্রতিবাদ জানাতে হবে এবং রাষ্ট্রের অভন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ আখ্যা দিয়ে আন্তর্জাতিক আইন ও নীতমালা অনুয়ায়ী তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

২. বাংলাদেশের অখণ্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সব অঞ্চলে সবার জন্য একই আইন প্রচলন ও কার্যকর করতে হলে এজন্য অবশ্যই পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ বাতিল করতে হবে।

৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারী চাকুরিতে উপজাতি কোটা বাতিল করতে হবে। পাহাড়ের বাঙ্গালীদের বাদ দিয়ে উপজাতিদের জন্য কোটা রাখা মারাত্বক রকমের বৈষম্য। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ফসল নতুন বাংলাদেশে উপজাতি কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করতে হবে।

৪. ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে প্রবেশ করিয়ে বাংলাদেশকে ভারত-আমেরিকা বনাম চীন দ্বন্দ্বের প্রক্সি স্টেট বা বলির পাঠা বানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে আরো বেশি অস্থিতিশীলতা ও ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়া যাবে না। ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজির ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অবশ্যই নিরপেক্ষ ও ভারসাম্যমূলক ভূমিকা পালন করতে হবে।

৫. পার্বত্য সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

৬. পার্বত্য অঞ্চলে চলমান অস্থিতিশীলতা নিরসন, সন্ত্রাস দমন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংখ্যাক সেনা ক্যাম্প বাড়াতে হবে।

৭. ১৯৯৭ সালের চুক্তি অনুযায়ী উপজাতি কর্তৃক সশস্ত্র কার্যক্রম বন্ধ না করায় সংবিধানবিরোধী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাতিল করতে হবে।

মেসেঞ্জার/নকিব/তারেক

×
Nagad