ঢাকা,  শনিবার
২১ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

ক্ষমা চাইলেও থামেনি ক্ষোভ

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ইবির দুই ছাত্রলীগ নেতা

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:০৭, ২ অক্টোবর ২০২৪

শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ইবির দুই ছাত্রলীগ নেতা

ছবি : মেসেঞ্জার

সেমিস্টার ফাইনালের পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দুই ছাত্রলীগ নেতা। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদেরকে মারতে উদ্যত হলে শিক্ষকরা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা তাদেরকে উদ্ধার করেন। পরে ওই দুই ছাত্রলীগ নেতাকে ইবি থানায় হস্তান্তর করা হয়। বুধবার (২ অক্টেবর) দুপুর দুইটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

তোপের মুখে পড়া ওই দুইজন আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে শাহীনুর পাশা শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক এবং আল আমীন সুইট নাট্য ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক।

জানা গেছে, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের তৃতীয় বর্ষের স্থগিত হওয়া সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা বুধবার ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে আসে। বিভাগের সভাপতিকে না জানিয়েই তারা পরীক্ষা দিতে আসে। তাদের আসার খবরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের উদ্রেক হয়।

পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা ভবনের নিচে ছাত্রলীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বিভাগের শিক্ষকরা পরিস্থিতি বুঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনে তাদেরকে ক্যাম্পাস থেকে বের করার উদ্যোগ নেন। এসময় উপস্থিত সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা।

ইতোপূর্বে তারা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদেরকে জুতার মালা পরিয়ে দিতে এবং মারতে উদ্যত হন। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, বিভাগের শিক্ষক এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদেরকে নিরাপত্তা দিয়ে থানায় হস্তান্তর করেন।

এ বিষয়ে তোপের মুখে পড়া ওই ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা ছিলো। এটা দিতে না পারলে খুব ক্ষতি হতো আমাদের। পরীক্ষার শুরুতে আমরা বন্ধুদের কাছে পূর্বের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিছি। পরীক্ষা ভালোভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

তবে আমাদের ভুল হয়েছে বিভাগের শিক্ষকদের অবগত না করেই চলে এসেছি। শিক্ষকদের না জানানোর কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা ভাবছিলাম চুপিসারে এসে পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে যাবো। তবে জানানো উচিত ছিলো তাদের। তাদের সহযোগিতায় কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়া আমাদেরকে নিরাপদে থানায় রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, আমরা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাদের ওপর যাতে মব জাস্টিস না হয় সেটাকে গুরুত্ব দিয়েছি। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা মিলে আমরা তাদেরকে নিরাপদে থানায় সোপর্দ করেছি৷

এদিকে থানায় তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ও ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা দুই ছাত্রলীগ নেতাকে আমাদের কাছে নিরাপদে সোপর্দ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ আছে কি-না সেগুলো যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মেসেঞ্জার/রিয়াদ/তারেক