ঢাকা,  শনিবার
০৫ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

ঢাবিতে গণহত্যার বিচার বিষয়ক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ৫ অক্টোবর ২০২৪

আপডেট: ০৯:৪৩, ৫ অক্টোবর ২০২৪

ঢাবিতে গণহত্যার বিচার বিষয়ক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত

ছবি: মেসেঞ্জার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'গণহত্যার বিচার কোন পথে' শীর্ষক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের সমন্বয়ে গঠিত গবেষণা সংস্থা বাংলাদেশ স্টাডি ফোরাম (বিডিএসএফ)-এর উদ্যোগে শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

গুরুত্বপূর্ণ এ নাগরিক সংলাপে বক্তব্য প্রদান করেন আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, বীরপ্রতীক লে. কর্নেল (অবঃ) হাসিনুর রহমান, মায়ের ডাকের সংগঠক সানজিদা ইসলাম তুলি, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল-এর চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা হোসাইন, স্পীক বাংলাদেশ'-এর বিশেষ মুখপাত্র অ্যাডভোকেট আলী নাছের খান এবং সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন। এতে সঞ্চালনা করেন বিডিএসএফ-এর ঢাবি চ্যাপ্টারের সমন্বয়ক মাহমুদুল হাসান।

সংলাপে 'গণহত্যার বিচার ও পুনর্বাসন' নামক মন্ত্রণালয় গঠন প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন বীরপ্রতিক লে. কর্নেল (অবঃ) হাসিনুর রহমান। এ সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাজের ধীরগতির সমালোচনা করেন তিনি।

মায়ের ডাকের সংগঠক সানজিদা ইসলাম তুলি বলেন, 'গত ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় গুম ও হত্যার মামলা বা জিডি নেয়া হতো না। পুরো সরকারের মেকানিজম গুম-খুনকে ধামাচাপা দেওয়ার কাজ করতো।'

তিনি অনতিবিলম্বে গুমের বিচার শুরু করার দাবি জানান ও সিক্রেট ডিটেনশন সেলের এভিডেন্স প্রটেকশনের কথা বলেন। 

স্পীক বাংলাদেশ'-এর বিশেষ মুখপাত্র অ্যাডভোকেট আলী নাছের খান বলেন, 'বিচারের ধারণা থেকে ফ্যাসিবাদের উপাদানগুলোকে দূরীভূত করতে হবে। গণহত্যায় আহত ও  নিহতদের জাতীয় হিরো হিসেবে উপস্হাপনের কোনো উদ্যোগ দেখছি না কেন?' 

গণহত্যাকারী দলের পুনর্বাসনের চেষ্টার সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'জুলাই গণহত্যার বিচার না হলে বাংলাদেশ পথ হারাবে।' 
তিনি বলেন, 'আইন মন্ত্রণালয় গণহত্যার বিচারের জন্য আশ্বস্ত করার মতো উদ্যোগ নিতে পারছে না। আমাদের বি-আওয়ামীকরণ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা করতে হবে। অভ্যুত্থান-পর্ব শেষ হয়েছে, বিপ্লব-পর্ব শুরু করতে হবে, এবং এর মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।

সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সরোয়ার হোসেন বলেন, এমন নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে হবে যেন ফ্যাসিবাদ পুনরায় ফিরে আসতে না পারে। যে সংবিধান দিয়ে ফ্যাসিবাদ তৈরি হয়েছে, সে সংবিধান দিয়ে গণ-অভ্যুত্থান ও বিপ্লবের উদ্দেশ্য সফল করা যাবে না। একটি ট্রাইবুনাল নয়, দশটি ট্রাইবুনাল দিয়ে গণহত্যার বিচার করতে হবে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল-এর চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা হোসাইন বলেন, 'আমাদের আইনের সংজ্ঞা ও প্রসেসের ভেতর কিছু দুর্বলতা আছে। এগুলো কারেকশন করে আমাদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় আগাতে হবে।'

আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, 'একটা গণ-তদন্ত কমিশন হতে হবে।পুরো বিটিভির আর্কাইভকে ধ্বংস করে দিয়েছে, হাসপাতালগুলোর ফরেনসিক রিপোর্ট গায়েব করেছে ফ্যাসিবাদীরা। ফলে একটা গণ-তদন্ত কমিশন হলে গণহত্যার বিচারের মিসিং লিংকগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হবে। শেখ মুজিবের পরিবারের রাজনীতি বুড়িগঙ্গার পানির চেয়ে দূষিত। আওয়ামী-ফ্যাসিবাদী রাজনীতির ডায়ালাইসিস করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে বা তিনবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে হবে। আওয়ামী লীগের আমলে যেদিনটা সবচেয়ে ভালো গেছে, তার থেকে এখনকার প্রত্যেকটা দিন ভালো।

নাটক, সিনেমা, গল্প দিয়ে অভ্যুত্থানের সাংস্কৃতিক রুপান্তর করতে হবে। সংলাপে সমাপনী আলোচনা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ স্টাডি  ফোরামের সদস্য আলাউদ্দীন মোহাম্মদ।

মেসেঞ্জার/আলআমিন/আজিজ

×
Nagad