ঢাকা,  শুক্রবার
১৮ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

ইবি সংলগ্ন ছাত্রাবাসে গভীর রাতে ছাত্রী প্রবেশ নিয়ে চাঞ্চল্য

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:৫৪, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

ইবি সংলগ্ন ছাত্রাবাসে গভীর রাতে ছাত্রী প্রবেশ নিয়ে চাঞ্চল্য

ছবি: মেসেঞ্জার

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের পকেট গেইট সংলগ্ন একটি ছাত্রাবাসে গভীর রাতে ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের এক ছাত্রীর প্রবেশ নিয়ে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে তিনবোন ছাত্রাবাসে এই ঘটনা ঘটে৷ এসময় ওই ছাত্রী এবং তার সঙ্গে আসা মার্কেটিং বিভাগের এক ছাত্রকে আটকে রাখা হয়। তারা দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল চারটার দিক থেকে ছাত্রাবাস এলাকায় প্রায় ৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ফলে এলাকাটি কিছুটা অন্ধকারাচ্ছন্ন ছিল। ছাত্রাবাসে মার্কেটিং বিভাগের আলামিন নামের এক শিক্ষার্থী ভাড়া থাকেন। ছাত্রীর সঙ্গে থাকা ছেলেটি তার বিভাগেরই জুনিয়র শিক্ষার্থী। ছেলেটি তার ক্যাস্পাসের জুনিয়র এক মেয়েকে নিয়ে ছাত্রাবাসে যান। মেয়েটিকে আলামিনের রুমে রেখে ছেলেটি বাইরে যান বলে জানায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।

পরে ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা বিষয়টি নোটিশ করতে পেরে সেখানে যান। পরে তারা মেয়েকে আটক করেন। পরবর্তীতে ছেলেটিকেও ধরে নিয়ে এসে উভয়কে আটকে রাখা হয়। পরে মেস মালিক পক্ষের লোকজনও সেখানে উপস্থিত হয়। পরে নিরাপত্তার স্বার্থে মেয়েটিকে নিজের বাসায় নিয়ে যান ছাত্রাবাসের মালিক। এদিকে মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা ওই ছেলে এবং মেয়েটিকে প্রশাসনের হাতে তুলে দিতে চান।

তবে মেস মালিকের ভাই মিজানুর রহমান ছেলেটিকে কৌশলে পার করে দিতে চান বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মিজানের উপর ক্ষিপ্ত হন। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাসহ ইবি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকা আশরাফ উদ্দীন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় প্রশাসনের মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেন তারা। পরে ওই ছাত্রকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের হেফাজতে রাখা হয়।

ছাত্রাবাস মালিকপক্ষের মিজানুর রহমান জানায়, অপ্রত্যাশিত একটা ঘটনা ঘটেছে। ওই ছেলেটি এই মেসের কেউ না। আমি যতটুকু জানি রুমটাতে আল-আমিন ও পারভেজ নামে আরেকজন থাকে। এই ছেলেটি এখানে কি করে এলো আমার জানা নেই।

মেয়েটির ভাষ্য, তিনি পার্শ্ববর্তী একটি ছাত্রী মেসে থাকেন। গতরাতে ছেলেটি তাকে এখানে নিয়ে এসে থাকতে বলেন। পরে তাকে রুমে রেখে ছেলেটি বাইরে যায়। এরপর মেয়েটি ওয়াশরুমে যাওয়ার পর বাইরে হট্টগোল শুরু হয়। পরে তিনি রুমে এসে দরজা আটকে দেন। ছেলেটির সম্পর্কে জানতে চাইলে উভয়ের মাঝে সম্পর্কের কথা জানান মেয়েটি।

এদিকে ছেলেটি বলেন, মেয়েটি আমার জেলার জুনিয়র।  তার সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয়। আমাদের আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভালো। আর ও কারোর সঙ্গে তেমন কথাবার্তা বলে না, কোন প্রবলেম হলে আমাকেই জানায়। ওইদিন রাতের ঘটনার বিষয়ে ছেলেটি জানান, রুমটা আমার বিভাগের বড় ভাইয়ের। মাঝেমধ্যে রুমে থেকেছি। তিনি কালকে মেসে ছিলেন না। আমরা শেখ পাড়া বাজারে খেতে গেছিলাম। পরে মেয়েটি ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য বলে। তখন পরিচিত বলে তাকে ওই ছাত্রাবাসের ওয়াশরুমে যেতে বলি। সে ওয়াশরুমে যাওয়ার পর বাইরে হট্রগোল মতো শুরু হলে ভয় পেয়ে যায়। পরে সে ভয় পেয়ে পাশের রুমটাতে যায় এবং দরজা আটকে দেয়। এরপর আমি গিয়ে তাকে ডাকি। পরে উপস্থিত লোকজন আমাকে জড়িয়ে আজেবাজে কথাবার্তা বলা শুরু করে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা জানান, তাদেরকে নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে। প্রক্টর তাদেরকে নিয়ে বসবেন। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো যাবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ঘটনার জানার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিক সেখানে উপস্থিত হই। প্রশাসনের সাথে কথা বলে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো যাবে।

এই বিষয়ে উভয় বিভাগের সভাপতি ও প্রক্টরিয়াল বডি ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে আলেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান।

মেসেঞ্জার/রিয়াদ/আজিজ