ঢাকা,  শনিবার
১৯ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

চুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তামিম হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন 

চুয়েট প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ২১:৩৮, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

চুয়েটের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তামিম হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন 

ছবি : ডেইলি মেসেঞ্জার

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল  বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তানজিল জাহান ইসলাম (তামিম) এর অকাল মৃত্যুতে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে  সর্বস্তরের প্রকৌশলী ও নাগরিক সমাজ। শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ৪ টা ৩০ ঘটিকায় প্রেসক্লাবের সামনে শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং আমজনতার এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় দেড়শর অধিক মানুষের সমাগম হয়।

ঘটনাসূত্রে জানা যায়, চুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগ থেকে পাশের পরে হতাহত শিক্ষার্থী যোগ দেন দীপ্ত টিভির সম্প্রচার বিভাগে। মহানগর প্রজেক্টের বাড়িটির ৭ তলায় দুটি ফ্ল্যাট নিয়ে থাকেন তিনি ও তাঁর পরিবার। প্লিজেন্ট প্রপার্টিজ লিমিটেড ডেভেলপার কোম্পানির তাদের মোট পাঁচটি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও বুঝিয়ে না দেওয়ায় বছরখানেক আগে একটি মামলাও করা হয়।

৯ অক্টোবর ডেভেলপার কোম্পানির সঙ্গে একটি সমঝোতা হয় এবং অষ্টম তলায় তাকে দুটি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়। সেই অনুযায়ী ১০ অক্টোবর সকালে অষ্টম তলার ফ্ল্যাটে লেবার দিয়ে কিছু কাজ করাচ্ছিলেন তামিম। তখন হঠাৎ ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপক আব্দুল লতিফ মির্জা, ফ্ল্যাট মালিক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মামুন, ডেভেলপার কোম্পানির কর্ণধার বিএনপি নেতা রবিউল আলম এবং তার সন্ত্রাসী বাহিনী ফ্ল্যাটে অতর্কিত হামলা চালায়। তামিমকে মারধর করতে থাকে তারা। চিৎকার শুনে তামিমের বড় ভাই সামভির জাহান ইসলাম ছুটে এলে তাঁকেও মারধর করে একপর্যায়ে চলে যায় তারা। তখন ৯৯৯ এ কল করে সহায়তা চান ভুক্তভোগীরা। এর মধ্যে ভীষণ অসুস্থবোধ করতে থাকেন তামিম। মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।

চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সানাউল রাব্বী পাভেল বলেন, তামিম ছিলেন আমাদের চুয়েট পরিবারের এক উজ্জ্বল সদস্য, তার অকাল এবং নৃশংস মৃত্যু আমাদের মর্মাহত করেছে। একজন শিক্ষক হিসেবে আমি তার হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এই জঘন্য অপরাধের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।তামিমের মতো আর কোনো মেধাবী প্রাণ যেন এভাবে হারিয়ে না যায়, সেই লক্ষ্যে আমরা আজ একত্রিত হয়েছি। ন্যায়বিচারের দাবি নিয়ে আমরা তার পাশে আছি।

চুয়েটের '০৮ আবর্তের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হাসান মাহমুদ বলেন, তামিম ছিল আমার খুব কাছের ছোট ভাই, যার প্রাণ অকালে কেড়ে নেওয়া হয়েছে এক নির্মম হত্যাকাণ্ডে। তার হাসি, তার স্বপ্ন, সবকিছুই আজ নিভে গেছে, আজ আমরা বেদনায় স্তব্ধ। তামিমের এই অমানবিক হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই এবং এর আজকের এই মানববন্ধন এর মাধ্যমে তামিমের পাশে আমাদের অবস্থান নিশ্চিত করছি।

চুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আরশাদ বলেন, “তামিম ভাইয়ের নির্মম হত্যাকাণ্ড আমাদের হৃদয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং দ্রুত বিচার দাবি করছি। কোনো নিরপরাধ মানুষের জীবন এভাবে ঝরে যাওয়া মেনে নেওয়া যায় না। আজকের মানববন্ধন থেকে আমরা ন্যায়ের পক্ষে একতাবদ্ধ, তামিম ভাইয়ের হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে।”

উল্লেখ্য গত বুধবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকার কারওয়ান বাজারে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

মেসেঞ্জার/আফনান/সজিব