ঢাকা,  মঙ্গলবার
২২ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

ঢাবিতে ক্রেডিট ট্রান্সফার সিস্টেম নেই কেন!

মাহমুদ নকীব, ঢাবি

প্রকাশিত: ১৯:৩২, ২১ অক্টোবর ২০২৪

আপডেট: ২১:১১, ২১ অক্টোবর ২০২৪

ঢাবিতে ক্রেডিট ট্রান্সফার সিস্টেম নেই কেন!

ছবি : সংগৃহীত

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হলেও সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের র‍্যাংকিংয়ে পিছিয়ে পড়েছে। অন্যান্য ফ্যাক্টরের পাশাপাশি ক্রেডিট ট্রান্সফার না থাকাও পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েরসমূহ এমনকি দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার সিস্টেম থাকলেও ঢাবিতে কেন এ ব্যবস্থা নেই। সেটিই খোঁজার চেষ্টা করা হয়েছে এ প্রতিবেদনে। মূলত প্রশাসনিক উদাসীনতাই শতবর্ষী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার চালু না হওয়ার কারণ বলে জানা যায়।

ক্রেডিট ট্রান্সফার কি

ক্রেডিট ট্রান্সফার হল একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্রেডিট স্থানান্তরের প্রক্রিয়া। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবর্তন করা, পড়াশোনা থেকে বিরতি নেওয়া, অথবা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি সম্পন্ন করা। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক একাডেমিক ক্রেডিট সিস্টেমগুলি হল: ECTS - ইউরোপীয় ক্রেডিট, সেমিস্টার ক্রেডিট আওয়ারস (SCH) এবং কোয়ার্টার ক্রেডিটস - আমেরিকান ক্রেডিট।

ক্রেডিট ট্রান্সফার শিক্ষার্থীদের সময় ও অর্থ সাশ্রয় করতে সহায়ক হতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের তাদের ডিগ্রিতে দ্রুত অগ্রগতি করার সুযোগ দিতে পারে। এ পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের এমন কোর্স নেওয়ার সুযোগ দেয় যা তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে উপলব্ধ নাও হতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের একটি ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশে অভিজ্ঞতা অর্জনে সহায়তা করে এবং বিভিন্ন একাডেমিক ও স্টাডি ফিল্ড অন্বেষণ করার সুযোগ দেয়।

যেসব বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার ব্যবস্থা রয়েছে

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্রেডিট ট্রান্সফার অফার করে। এছাড়াও, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস টেকনোলজি, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ, ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি, কানাডিয়ান এবং লিডিং ইউনিভার্সিটি সহ অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও ক্রেডিট ট্রান্সফার সিস্টেম অফার করে।

 পিছিয়ে পড়ছে ঢাবি

বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর র্যাঙ্কিংয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। সর্বশেষ কিউএস র্যাংকিং অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৫৫৪তম অবস্থানে আছে। এ র্যাঙ্কিংয়ের অন্যতম সূচক বিদেশী শিক্ষার্থী অনুপাত ১ ও বিদেশী শিক্ষক অনুপাত ১.৬। 
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী স্নাতক পর্যায়ে থাকা অবস্থায় বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে চাইলে তাকে ঢাবিতে ভর্তি বাতিল করতে হয়। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর সময় নষ্ট হচ্ছে অথবা বিদেশ গমনের সুযোগ নষ্ট হচ্ছে।

কেন চালু হচ্ছে না

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার সিস্টেমটি কেন চালু করতে পারছে না এ প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল হালিম বলেন, 'ক্রেডিট ট্রান্সফারের বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের চিন্তা করা প্রয়োজন।

কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে অন্য কোথাও যেতে চায় বা কেউ যদি আসতে চায় সেক্ষেত্রে তাকে কোনরকম প্রতিবন্ধকতা না রেখে সুযোগ দেওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত এ বিষয়ে একটি প্রসেসের মধ্যে আসা।

প্রশাসনের ভাষ্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফারের সুযোগ কেন নেই? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন একটি নিয়ম চালু করতে কিছু প্রসিডিউরের মধ্যে যেতে হয়।

আমাদের ডিনস কমিটি, একাডেমিক কাউন্সিল আছে। ক্রেডিট ট্রান্সফারের সিস্টেম চালু করার জন্য আগে কেউকে বিষয়টি চাইতে হবে। কেউ যদি এ বিষয়ে আবেদন করে সেক্ষেত্রে আমি ডিনস কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি তুলতে পারবো, এরপর ডিনস কমিটি সিদ্ধান্ত নিবে।

মেসেঞ্জার/সজিব