ঢাকা,  বুধবার
২৩ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

সংবিধান বাতিলসহ ৫দফা দাবি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:৫৮, ২২ অক্টোবর ২০২৪

সংবিধান বাতিলসহ ৫দফা দাবি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

ছবি : মেসেঞ্জার

রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর অপসারণ, সংবিধান বাতিল, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে নিষিদ্ধকরণসহ ৫দফা দাবি পেশ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। 

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে পদত্যাগ করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র প্রসঙ্গে সোমবার (২১ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতি শাহাবুদ্দিন চুপ্পুর বক্তব্যের প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গণ জমায়েত কর্মসূচি আয়োজিত হয়। উক্ত গণজমায়েতে ৫দফা দাবি পেশ করেন সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

৫দফা দাবিগুলো হলো- বিদ্যমান সংবিধান অনতিবিলম্বে বাতিল করে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে নতুন সংবিধান লেখা; ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে এই সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা; রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনকে এই সপ্তাহের মধ্যে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা; এই সপ্তাহের মধ্যে জুলাই বিপ্লবের আলোকে ‘প্রোকলেমেশন অব রিপাবলিক’ ঘোষণা করা এবং ২০১৪ সাল, ২০১৮ সাল এবং ২০২৪ সালে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করা।

এই তিন নির্বাচনে যারা নির্বাচিত হয়েছে, তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং তারা যেন কখনো বাংলাদেশে নির্বাচন করতে না পারে, সেজন্য আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। 

এ সময় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'এই সপ্তাহের মধ্যে আমাদের ৫দফা দাবি না মানা হলে আমরা আবার রাজপথে নেমে যাবো। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগসহ ফ্যাসিবাদি সকল সংগঠন এবং মুজিববাদি চেতনার সাংস্কৃতিক সংগঠন ও গণমাধ্যমকে স্থায়ীভাবে বাংলাদেশের মাটি থেকে উৎখাত করতে হবে।

(১৭ জুলাই) যখন ছাত্রলীগ, যুবলীগ শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে, তখনই সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে, জঙ্গি সংগঠন ও তার মা শেখ হাসিনার এই বাংলাদেশে স্থান হবে না।'

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, আগামী বৃহস্পতিবারের (৪৮ ঘণ্টা) মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। যে ছাত্রলীগের হাতে মানুষের মৃত্যু হয়েছে তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। 

“আমরা এই শহীদ মিনার থেকে আমাদের বিপ্লব শুরু করেছিলাম। সেই বিপ্লবের ভয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছিলেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা। আর এখন, আপনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে জনতার সঙ্গে প্রতারণা করছেন। আপনি (৫ আগস্টে) যা বলেছেন, তা এখন কার নির্দেশে ভুলে গিয়ে নতুন কথা বলছেন? আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই খুনি হাসিনা যেভাবে পালিয়েছে, চুপ্পুকেও পালাতে হবে।  দেশের প্রশ্নে, দশের প্রশ্নে বিপ্লবীরা সব সময় মাঠে আছে”।

তিনি বলেন, আমরা এই শহীদ মিনার থেকে আমাদের বিপ্লব শুরু করেছিলাম। সেই বিপ্লবের ভয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছিলেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা। আর এখন, আপনি রাষ্ট্রপতি হিসেবে জনতার সঙ্গে প্রতারণা করছেন। কারণ, আপনি (৫ আগস্টে) যা বলেছেন, তা এখন কার নির্দেশে ভুলে গিয়ে নতুন কথা বলছেন? আমরা স্পষ্ট বলে দিতে চাই খুনি হাসিনা যেভাবে পালিয়েছেন, চুপ্পুকেও পালাতে হবে। 

গণজমায়েতে সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আবারও যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আমাদের চোখ দিতে প্রস্তুত, পা দিতে প্রস্তুত, হাত দিতে প্রস্তুত, এমনকি জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। ফ্যাসিস্ট দল ছাত্রলীগ যেভাবে আমাদের ভাইদের হত্যা করেছে, তাদের উত্থান সহ্য করা হবে না। চুপ্পুর এই নয় ছয় কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। খুনি হাসিনার মত তাঁকেও দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।

এ সময় সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, ফ্যাসিবাদের মূল আদর্শ মুজিববাদিতা। ছাত্রলীগ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠায় অগ্রনায়ক ছিল। শেখ হাসিনার সময়ও তারা এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম জারি রেখেছে। বিগত ১৫ বছরে তারা বাংলাদেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। হাজার হাজার মানুষকে গুম করেছিল। ছাত্রলীগ দিয়ে এই ফ্যাসিবাদের শুরু হয়। তাই এদেরকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা ৩ তারিখ অঙ্গীকার করেছিলাম, ফ্যাসিবাদের বিলোপ করব এবং একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করব। কিন্তু ফ্যাসিবাদি ব্যবস্থায় সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত সাহাবুদ্দিন এখনো ক্ষমতায় আছে।

এসময় শিক্ষার্থীরা আমাদের সংগ্রাম, চলছে চলবে; আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন; আওয়ামী লীগের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান; ছাত্রলীগের দালালেরা হুঁশিয়ার সাবধান; স্বৈরাচারের দোসরেরা হুঁশিয়ার সাবধান; অবৈধ রাষ্ট্রপতি, মানিনা মানব না; আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করো করতে হবে ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।  

উক্ত কর্মসূচিতে রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শিক্ষার্থীরা গণজমায়েতে যোগ দেন। পাশাপাশি জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যদেরকেও উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে টিএসসি এসে কর্মসূচি শেষ করে।

মেসেঞ্জার/নকীব/তারেক