ঢাকা,  বুধবার
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

’শিক্ষা সংস্কার কমিশনের’ দাবি জানালেন চবি উপাচার্য

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৫০, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

’শিক্ষা সংস্কার কমিশনের’ দাবি জানালেন চবি উপাচার্য

ছবি: মেসেঞ্জার

আমি অভিভাবক হিসাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এই মঞ্চ থেকে মাননীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই এখনো সময় আছে আপনারা 'শিক্ষা সংস্কার কমিশন' গঠন করেন বলে মন্তব্য করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। ৫৪ তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে 'বর্তমান বাংলাদেশে বিজয় দিবসের তাৎপর্য' শীর্ষক আলোচনা সভায়   সরকারের কাছে এ আহ্বান জানান তিনি।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বিজয় দিবস উপলক্ষে স্বাধীনতা ভাস্কর্য চত্বরে রাত ১২.০১ টায় বিউগলের সুরে শহীদদের স্মরণ করা হয়। সকালে বিজয়ের প্রতীক হিসেবে লাল ব্যাজ ধারণ, স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং বর্ণাঢ্য বিজয় র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়, যা সমাজবিজ্ঞান অনুষদে গিয়ে শেষ হয়। এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা।

এরপর সমাজবিজ্ঞান মিলনায়তনে 'বর্তমান বাংলাদেশে বিজয় দিবসের তাৎপর্য' শীর্ষক  আলোচনা সভায় প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ এর সঞ্চালনায় সভাটিতে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

এ সভায় শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চবি উপাচার্য বলেন,  শিক্ষার্থীদের দাবি সব আমাদেরই দাবি। ছাত্ররা যে দাবিগুলো দিয়েছে, এরসাথে আরেকটা দাবি দিলে আমি খুশি হতাম। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনটা বাংলাদেশের সামনে একটি অভূতপূর্ব সংস্কারে সুযোগ উপহার দিয়েছে। এই সুযোগ আমরা যদি হাতছাড়া করি তাহলে আবার আয়না ঘরের সৃষ্টি হতে পারে।

সরকারের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, এতদিন যে শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করেননি এটা জেনেই অবাক হচ্ছি। কথা বলার সময় বলবেন, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড আর চিকিৎসা করার সময় বলবেন আঙ্গুলের যে চুলকানি হয়েছে ওটার চিকিৎসা আগে করি, মেরুদন্ডের ব্যথা পরে দেখব, তাহলে তো হবে না।

আমি খুশি হতাম যদি আপনারা সরকারের কাছে 'শিক্ষা সংস্কার কমিশনের' দাবী জানাতেন। কেউ যখন বলেননি, আমি অভিভাবক হিসাবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এই মঞ্চ থেকে মাননীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই এখনো সময় আছে আপনারা 'শিক্ষা সংস্কার কমিশন' গঠন করেন। যদি আপনারা 'শিক্ষা সংস্কার কমিশন' গঠন করেন তাহলে আপনাদের অন্যান্য সংস্কার কমিশনের কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের যত কাস্টম অফিসার, যত বিসিএস ক্যাডার যাচ্ছে তারা আমাদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে আমরা তাদের প্রডিউস করছি। তারা যদি এখান থেকে ইনডিসিপ্লিন দেখে যায়, এখান থেকে তারা যদি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া দেখে যাই, এখান থেকে  যদি তারা মারামারি দেখে যাই, টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি দেখে যাই, টর্চার সেল এগুলোর সাথে যদি পরিচিত হয়ে যাই। ওই সংস্কারগুলো লান হয়ে যাবে।

আর এখান থেকে যদি তারা ডিসিপ্লিন শিখে যায়, এখান থেকে তারা যদি নিয়মানুবর্তিতা দেখে যাই- সময়মতো রেজাল্ট, সময়মত পরীক্ষা দেখে যায়, তখন তারা পরবর্তী জীবনে এগুলো চর্চা করবে।

এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন। এছাড়াও সভায় উপস্হিত ছিলেন বিভিন্ন অনুষদের ডীন, প্রভোস্ট, শিক্ষকবৃন্দ, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। সভায় বক্তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, শহীদদের আত্মত্যাগ এবং স্বাধীনতা অর্জনের গৌরবগাঁথা তুলে ধরেন।

এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার জাতির বিজয় দিবসের গৌরবময় অধ্যায়কে স্মরণ করে এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনা ছড়িয়ে দেয়।

মেসেঞ্জার/সাকিব/জেআরটি