ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
০২ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

চবিতে শাটল ট্রেনে হামলার প্রতিবাদে প্রধান ফটক অবরোধ

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:১৭, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

চবিতে শাটল ট্রেনে হামলার প্রতিবাদে প্রধান ফটক অবরোধ

ছবি : মেসেঞ্জার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে দুর্বৃত্তদের হামলায় দুই শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে প্রধান ফটক অবরোধ ও শাটল ট্রেন বন্ধ করে আন্দোলন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

৩০ ডিসেম্বর (সোমবার) বেলা সাড়ে ১১টায় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধনের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

পরে শিক্ষার্থীরা শোডাউনসহ প্রধান ফটকে গিয়ে অবস্থান নেন। দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত চলা এই কর্মসূচিতে মূল ফটক এবং শাটল ট্রেন অবরুদ্ধ রাখা হয়। এর ফলে চট্টগ্রামগামী দুপুর ১টা ও ২টার শাটল ট্রেনের সময়সূচি বিপর্যস্ত হয়। প্রায় সোয়া ২টায় শাটল ট্রেন ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়।

এ সময় আন্দোলনকারীরা হামলাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, শাটল ট্রেনে বহিরাগতদের প্রবেশ স্থায়ীভাবে বন্ধ, প্রতিটি বগিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় পুলিশ মোতায়েন, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার প্রশাসনের ওপর বর্তানোসহ চারটি দাবি জানায় প্রশাসনকে।

এ সময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। তিনি জানান, আমরা আহত হওয়ার কথা শুনেই সাথে সাথে বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রক্টর পাঠিয়েছি। তারা ওই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে আসলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে ন্যাশনাল হাসপাতালে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমরা তাদের সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নিচ্ছি । এমনকি আমি তার বাসায় গিয়েও তার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছি। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আর্থিক ভাবে সাহায়তা করা হয়েছে।  আমরা শাটলে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি তারা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল তোমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব। আমরা সেখানে নিরাপত্তা বলয় শক্তিশালী করতে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেগুলো আলোচনা করা হবে।

চবি প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, 'ঘটনার খবর পাওয়ার পর আমরা দ্রুত একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে আহত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালে নিয়ে যাই।  উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যালে নেওয়ার সময় একজন অভিজ্ঞ এ্যাটেন্ডেন্টও সঙ্গে ছিলেন, যাতে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যালে সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পর, ভুক্তভোগীর পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। প্রো-ভিসি ও প্রক্টরিয়াল বডি ভুক্তভোগীর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন।

প্রক্টর আরও উল্লেখ করেন, অত্র এলাকার ডিআইজি’র সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনাটি অবহিত করি। তারা দ্রুত তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন এবং রাতেই অভিযানে নেমে ৫-৬ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেন।'

আন্দোলনরত ইংরেজি ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অর্ণব সরকার দীপ্ত বলেন, ' গতকাল আমাদের বিভাগের দুইজন শিক্ষার্থী শাটলে ছিনতাইকারীদের দ্বারা নির্মমভাবে আহত  হয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমরা মানববন্ধন করেছি। যেহেতু শাটল ট্রেন অনিরাপদ তাই আমরা শাটল ট্রেন বন্ধ করে দেয়।  সেই সাথে প্রশাসনের কাছে আমাদের ৪ দফা দাবি পেশ করেছি। কাল প্রশাসনের সাথে আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের আলোচনা হবে দাবি পূরণের ব্যাপারে প্রশাসন আমাদেরকে ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছে। যদি ওনারা আমাদের দাবি পূরণ না করেন তাহলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।'

আগামীকাল শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসন আলোচনায় বসবে বলে জানানো হয়েছে।

মেসেঞ্জার/সাকিব/তুষার