ঢাকা,  শুক্রবার
০৩ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

‘শিক্ষাজীবন শেষের আগেই দেশ চালাতে চাইলে হিতে বিপরীত হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রকাশিত: ১০:২৪, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

‘শিক্ষাজীবন শেষের আগেই দেশ চালাতে চাইলে হিতে বিপরীত হবে’

শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার আগেই যদি ছাত্ররা দেশ চালাতে চায়, তাহলে হিতে বিপরীত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।  তিনি বলেন, ‘আগামীতে ছাত্ররাই দেশ পরিচালনা করবে, তবে সেটা শিক্ষাজীবন শেষে। শিক্ষকের কথা ছাত্ররা না শুনলে সিস্টেম ভেঙে পড়বে।’  সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইট বিষয়ক এক সেমিনারে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সম্মেলন কক্ষে, সোমবার সকালে "ICT Policy and Reform: In the view and Realization of New Bangladesh" শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। নতুন বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতের সংস্কার ও নীতিনির্ধারণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনের লক্ষে সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

সেমিনারের শুরুতেই কী-নোট উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের আইসিটি উদ্যোক্তা ও গবেষক রূপম রাজ্জাক। তিনি তথ্য প্রযুক্তি খাতের বর্তমান অবস্থা উল্লেখপূর্বক বিভিন্ন বিষয়ে সংস্কারের পরামর্শ তুলে ধরেন এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, টেকসই পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ, ই-গভর্নেন্স, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ ও সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে তাঁর সংস্কার প্রস্তাবনা পেশ করেন।

সেমিনারে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয় স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট এর পরিচালক ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য-সচিব মো. কামরুজ্জামান লিটু, সরকারের আইসিটি পলিসি এডভাইজর ফাইজ আহমেদ তায়েব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আবু লায়েক, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মো. আকতার হোসেন, এআইইউবি এর অধ্যাপক ড. কামরুদ্দিন নূর, যুক্তরাজ্যের এইচএসবিসি ব্যাংকের সিনিয়র সফটওয়ার সলিউশন আর্কিটেক্ট রাজ মাসুদ ফরহাদ, ক্লাউড কনস্যালট্যান্ট ও সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞ মো. আরিফ হোসেন, বেসিস এন্টারপ্রিনিয়র রিসার্সের গবেষকবৃন্দ, ব্যাংকিং সেক্টরের কর্মকর্তাগণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, সিএসই ও ইইই বিভাগের শিক্ষকসহ অন্যান্যরা আইসিটি পলিসি সংশোধনের বিষয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান শারমিন আকতার।

ড. আব্দুল মঈন খান বলেন বর্তমানে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে গেলে তিন মাস থেকে ৩ বছর সময় লেগে যায়, যেটা আমরা ৬০ বছর আগে ২ ঘন্টায় পেয়েছিলাম। পাসপোর্ট তৈরি, সিম কার্ড রিনিউ করতে মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হয়। আমরা এ বাংলাদেশ চাইনি।

এছাড়াও তিনি আরো বলেন, আইসিটির পরিচালকদের মানুষ হতে হবে। আইসিটির কাজ দালাল সৃষ্টি নয়। সততা, মানবিক মূল্যবোধ না থাকলে প্রযুক্তি দিয়ে কি হবে? আত্মশুদ্ধি না হলে হাজারও সংস্কার কমিশন গঠন করেও কোনো লাভ হবেনা। তিনি তার বক্তব্যে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সফলতা কামনা করেন।

ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন বলেন, আইসিটি পলিসি এবং তার বাস্তবায়ন এমনি হতে হবে যাতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে এই বিপুল জনগোষ্ঠিকে মানব সম্পদে রূপান্তর করা যায়।

ফাইজ আহমেদ তায়েব সরকারের তথ্য প্রযুক্তি কার্যক্রম, সাইবার ও ডিজিটাল সিকিউরিটির উপর আলোচনা করেন এবং সংস্কারের বিষয়ে পরামর্শ কামনা করেন। মো. কামরুজ্জামান লিটু বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশের নামে ব্যাংক ডাকাতি, ডেস্টিনি, ইভালি, ই-অরেঞ্জ এর মতো প্রতিষ্ঠানের লাখো-কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। তিনি তরুন প্রজন্ম ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রযুক্তিতে পারদর্শী করে তোলার বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করেন।

অন্যান্য বক্তারা কল সেন্টারগুলোর মালিকানা বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের দেওয়া, সাইবার সিকিউরিটি এক্টের নিবর্তনমূলক ধারা সমূহ সংশোধন ও জনগণের ব্যক্তিগত ডাটার সুরক্ষার সপক্ষে বক্তব্য প্রদান করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, যখন কোনো উন্নয়ন হয় সেটার পাশাপাশি কিছু চ্যালেঞ্জও থাকে। এই চ্যালেঞ্জেগুলো আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। এছাড়া তিনি গ্রিন আইটি ও একাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্ব দেন এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইসিটি পলিসির সময় উপযোগী সংস্কারের সফলতা কামনা করেন।

মেসেঞ্জার/ইএইচএম