ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
০৯ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

ফরিদপুরে ফ্যাসিস্ট আমলে নির্যাতিত জামায়াত কর্মীর জীবনের গল্প

ফরিদপুর প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৬:০৯, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

ফরিদপুরে ফ্যাসিস্ট আমলে নির্যাতিত জামায়াত কর্মীর জীবনের গল্প

ছবি : মেসেঞ্জার

আমি এখন প্রায় পঙ্গু, আমাকে পুলিশ এমনভাবে নির্যাতন করেছে যা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। আমি এখন ১৫ বছর ধরে পঙ্গু, ঠিকমত ঘুমাতে পারিনা, হাটতে পারি না, বসতে পারি না, দাঁড়িয়ে থাকতে পারি না। ব্যবসার যা পুঁজি ছিল আমার সব ব্যয় করে ফেলছি চিকিৎসা খরচে। তারপরও আমি সুস্থ না। সবকিছু হারিয়ে আমি এখন নিঃস্ব।

কথাগুলো বলছিলেন, ফরিদপুর জেলা শাখার জামায়াতে ইসলামের একজন সক্রিয় সদস্য ও শহরের টেপাখোলা অঞ্চল (১৯ নং ওয়ার্ড) এর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. আয়নাল হোসেন। তিনি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা এলাকার বিহারীপট্টির বাসিন্দা।

আয়নাল হোসেন বলেন, বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে একাধিকবার জেল খেটেছি, গ্রেপ্তার হয়েছি। ২০১৩ সালের ৮ মে একটি প্রোগ্রাম হওয়ার প্লান ছিল থানার মোড়ে। আমরা জামায়াতের কর্মীরা শাহ্ জালাল ব্যাংকের সামনে জড়ো হই, এমন সময় সেখানে পুলিশ হাজির হয়। তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় বসাকের নেতৃত্বে আমিসহ একাধিক জামায়াতের নেতা-কর্মীকে সেদিন গ্রেপ্তার করা হয়। বিজয় বসাকের সাথে ছিলেন একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা। তার মধ্যে অন্যতম ছিল এসআই নজরুল, এসআই মশিউরসহ শতাধিক পুলিশ সদস্য। প্রথমে আমাকে গ্রেফতার করে কোতয়ালী থানায় ধরে নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে আমাকে চোখ, হাত, পা বেধে বেধরক মারধর করা হয়। আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তারপর কি হয়েছে আর বলতে পারবো না। জ্ঞান ফিরলেই মার শুরু করতো। এভাবে দুইদিন থানায় নির্যাতন চালায়। আমাকে দুই দিন পর আদালতে চালান করে দেয়া হয়। আমি প্রায় এক মাস জেল খেটে জামিনে বের হই। জামিনে বের হলাম ঠিকই, কিন্তু আমি আর স্বাভাবিক জীবনে চলাফেরা করতে পারছি না। আমার ছোট একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল, ঐ প্রতিষ্ঠানের যত পুঁজি ছিল তার সবটুকু চিকিৎসায় খরচ করে ফেলছি, এখন কোন রকম ব্যবসা করে টিকে আছি।

তিনি আরো বলেন, আমি মানুষের মত স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছি না। আমি নির্যাতনকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে একটি মামলা দায়ের করবো।

মেসেঞ্জার/নাজিম/তুষার