ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
০৯ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

পোষ্যকোটা বাতিলের দাবিতে চবি শিক্ষার্থীদের অনশন

চবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৪৩, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

পোষ্যকোটা বাতিলের দাবিতে চবি শিক্ষার্থীদের অনশন

ছবি : মেসেঞ্জার

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী তালাত মাহমুদ রাফি বলেছেন, আমরা পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিলের জন্য অনশনে বসেছি।জুলাই বিপ্লবের পর পোষ্যকোটা  কিভাবে বহাল থাকতে পারে? আমরা মনে করি  'পোষ্যকোটা থাকা মানে তেলা মাথায় তেল দেয়া। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারী যে ফেসিলিটিজ পাছে,  তা আমার গ্রামের কৃষকের সন্তান পাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, "জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচার ছাড়া তারা ক্লাস ও পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রশাসন এখনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়নি। যেখানে বেরোবিতে ৫৭ জন কে বহিষ্কার করা হয়েছে সেখানে আমাদের  বিশ্ববিদ্যালয়কে তেমন পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। যতক্ষণ পোষ্য কোটা বাতিল ও হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত না হবে, ততক্ষণ আমরা অনশন চালিয়ে যাবো।"

বুধবার (৮ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ৯ দফা দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী। প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা অনশনে বসেন।। অযৌক্তিক কোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনের হত্যাকারীদের বিচারসহ দাবিগুলোর সুরাহা না হওয়ায় এই পদক্ষেপ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

দুপুর দুইটার দিকে উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর শামীম উদ্দিন খান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসনিক) প্রফেসর কামাল উদ্দিন খান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। এ সময় তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, পোষ্য কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তারা কোনো আলোচনায় বসবেন না।

অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী তালাত মাহমুদ রাফি, ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের রশিদ দিনার, একই সেশনে ইসলামের ইতিহাস বিভাগের তানিম মুশফিক, বাংলা বিভাগের শুভ আহমেদ ও আইন বিভাগের সাইরিব রহমান সুপ্ত।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারী) সকল অযৌক্তিক কোটা বাতিল ও জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচারসহ ৯ দফা দাবিতে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেয় আন্দোলনকারীরা।

এ সময় শিক্ষার্থীদরে ‘জনে জনে খবর দে, পোষ্য কোটার কবর দে, তারুয়ার ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটার ঠাই নাই, ফরহাদের ক্যাম্পাসে পোষ্য কোটার ঠাই নাই , বাতিল চাই বাতিল চাই, পোষ্য কোটার বাতিল চাই, বিচার চাই বিচার চাই, হত্যাকারীদের বিচার চাই ‘ স্লোগান দিতে শোনা যায়।

অনশনকারী ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রশিদ দিনার বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে আসতেছি। কিন্তু তারা নানান অজুহাতে পোষ্য কোটার রাখার পক্ষে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে আমরা মনে করতেছি। এমনকি শহীদ ভাইদের হত্যার সাথে জড়িত তার বিচার ব্যতিত তাকে পরীক্ষা দিতে দিচ্ছে। এজন্য আমাদের যৌক্তিক দাবির জন্য অনশনে বসেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রশাসন পোষ্য কোটা বাতিল করবে না ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আছি।

শিক্ষার্থীদের নয় দফা দাবিগুলো হলো-
ভর্তি পরীক্ষার আবেদন ফি ২০০ টাকা করতে হবে, মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা, পোষ্য কোটাসহ সব ধরনের অযৌক্তিক কোটা বাতিল করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু করতে হবে, বন্ধ হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের আর্থিক অবস্থা, বাড়ির দূরত্ব এবং মেধার ভিত্তিতে আসন বরাদ্দ ও অতিদ্রুত নতুন দুইটি হল নির্মাণ করতে হবে, ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল এক্সট্রা কারিকুলার সংগঠনসমূহকে অফিস বরাদ্দ দিতে হবে, অনতিবিলম্বে টিএসসি নির্মাণ করতে হবে, অতি দ্রুত চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন দিতে হবে, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক ই-মেইল প্রদান ও অনলাইনে রেজাল্ট প্রকাশসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড অনলাইনভিত্তিক করতে হবে এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া গুপ্তহামলার সুষ্ঠু বিচার ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

মেসেঞ্জার/সাকিব/তুষার