ছবি : মেসেঞ্জার
প্রতিষ্ঠার ১৯ বছরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, দেশের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে এটির অবস্থান। ইন্টারমিডিয়েট লেভেল সম্পন্ন করার পর পরই যেখানে দেশের অধিকাংশ শিক্ষার্থীদেরই চাহিদা থাকে ঢাকামুখী হওয়ার সেই তালিকায় ঢাবি, জবি ও জাবি'র পরই অবস্থান থাকে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের। অথচ প্রতিষ্ঠার এত বছর পরও, চাহিদার এত তুঙ্গে থাকা সত্ত্বেও ঢাকার সাথে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যোগাযোগের সুব্যবস্থা অত্যন্ত ক্ষীণ।
এ ব্যাপারটি নিয়ে ইতিমধ্যে জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত একাধিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে। যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসসমূহ একটি জেলা অতিক্রম করে অন্যান্য জেলা শহর পর্যন্ত বাস সার্ভিস দিয়ে থাকে একমাত্র শিক্ষার্থীদের স্বার্থে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস যেখানে কুমিল্লা জেলা শহর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দেয়, গাজীপুর পর্যন্ত চলে আসে, সেখানে ঢাকা শহর শিক্ষার্থীদের জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও যেখানে যাতায়াতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কতৃক কোনো সুব্যবস্থা নেই, যা তাদের সার্বিক উন্নয়নের অন্তরায় বলেই মনে করেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক স্নাতক সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের চাকরির বাজার, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলোর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডসহ নানাবিধ আনুষ্ঠানিকতায় সকলকে নিভর্র করতে হয় রাজধানী শহর ঢাকার প্রতি। এমনকি শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও নানাভাবে ঢাকা মুখি নানাবিধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।
এ ব্যাপারে হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের অঞ্চলগুলো (মাওনা, গাজীপুর, ঢাকা) থেকে প্রচুর সংখ্যক শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আশা যাওয়া করে। একটি বাস ভালুকা পর্যন্ত আসতে পারলে এ অঞ্চলগুলো পর্যন্ত কেনো আসতে পারবে না। বিশেষ করে ভালুকা থেকে যারা বাসায় যায় ভাড়া নিয়ে তাদের অনেক হয়রানি হতে হয় বাসে। বাসের রুট বৃদ্ধি করার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৪তম আর্বতনের শিক্ষার্থী আবু ইসহাক অনিক দৈনিক বাংলাকে জানান, 'ঢাকার বাস শিক্ষার্থীদের জন্য খুব উপকার করবে। ময়মনসিংহ- ঢাকা যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো নয়, এই রাস্তায় আমাদের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী যাতায়াত করে প্রতিনিয়ত। প্রচুর দূর্ঘটনারও শিকার হতে দেখা যায় এই সড়কে। যদি প্রশাসন ঢাকাগামী বাস চালু করে তবে সেটি হবে আমাদের জন্য কল্যাণময় একটি কাজ। আশাকরি, দীর্ঘদিনের শিক্ষার্থীদের দাবি এখন গুরুত্বের সঙ্গে বাস্তবায়ন হবে।"
আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রুবেল আক্ষেপের কথা ব্যক্ত করে বলেন, অন্তত গাজীপুর পর্যন্ত বাস সার্ভিস পেলেও চাকরীর পরীক্ষাগুলা দিতে আমাদের খুব সুবিধা হতো।
উল্লেখ্য, ঢাকামুখী বাস সার্ভিসের রুট বৃদ্ধিকরণ নিয়ে ইতিপূর্বে গাজীপুর অ্যাসোসিয়েশন একাধিকবার নানাবিধ পদক্ষেপ হাতে নিলেও তার কোনোটিই ফলপ্রসূ হয়নি এখনও পর্যন্ত।
ঢাকা, গাজীপুর, মাওনা, ভালুকাসহ ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের এই পাশ্ববর্তী অঞ্চলগুলো থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণে শিক্ষার্থী ভর্তি হয় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। গাজীপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত এ অঞ্চলগুলোর মধ্যে বিশেষায়িত ছাড়া একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ই হলো ত্রিশালের নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। যেকারণেই ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো সম্বলিত বাস সর্বদা এ বিশ্বিবদ্যালয়েরই ব্যাণ্ডিং ও পরিচয় বহন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক আহমেদ শাকিল হাসমী বলেন, পরিবহন প্রশাসক হওয়ার আগে আমিও শিক্ষক ছিলাম। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে ঢাকামুখী যাতায়াতের সুব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা আমিও বুঝি। খুব দ্রুত এ ব্যাপারে প্রস্তাব উত্থাপনের মাধ্যমে আমি একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
মেসেঞ্জার/তুষার