ছবি: মেসেঞ্জার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) লাইব্রেরি, যার সংগ্রহে রয়েছে প্রায় চার লাখ বই, বহু প্রাচীন পাণ্ডুলিপি এবং গবেষণার অমূল্য সম্পদ। অথচ এতো সমৃদ্ধ একটি গ্রন্থাগার এখনো শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার জন্য আদর্শ পরিবেশ দিতে ব্যর্থ। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এখনও প্রয়োজনীয় সেবা ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে পিছিয়ে আছে লাইব্রেরির পরিবেশ।
লাইব্রেরিতে একাডেমিক এবং চাকরির উপযোগী বইয়ের ঘাটতি শিক্ষার্থীদের হতাশার অন্যতম কারণ। বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদের মতে, “লাইব্রেরির পরিবেশ কিছুটা উন্নত হলেও জব রিলেটেড বইগুলো নিয়ে পড়ার অনুমতি নেই। এমনকি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক বইও পাওয়া যায় না।”
পাঠাগারে বই খুঁজতে গিয়ে সার্ভারের ধীর গতি এবং কার্যকর সার্চ সিস্টেমের অভাবও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আরও বাড়িয়েছে। এছাড়া নিজের কেনা বই ভেতরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী লাইব্রেরি ব্যবহার থেকে বিরত থাকে।
লাইব্রেরিকে আধুনিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব করে তুলতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান দিল রুকসানা বাসুনিয়ার মতে, তিন লাখ বইয়ে বারকোড চালু, স্মার্ট কার্ড, ই-বুক, ই-লার্নিং, উন্নত ওয়েবপেজ, বিশুদ্ধ পানির ফিল্টার, ক্যান্টিন এবং অটোমেটেড প্রবেশ-বাহির ব্যবস্থা, লাইব্রেরির সামনের জায়গা বৃদ্ধিকরণসহ নানা পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি একসময় গবেষণার প্রাণকেন্দ্র ছিল। আড়াই শত বছরের পুরনো ভূজপত্র এবং আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ কর্তৃক১৮৭২ থেকে ১৯৫৩ সালের মধ্যে সংগৃহীত দুর্লভ সাময়িকীগুলো শিক্ষার্থীদের গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করত। কিন্তু বর্তমানে গবেষণা কার্যক্রমের সুযোগ ও পরিবেশ অনেকটাই বিলুপ্তির পথে।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক কামাল উদ্দিন খান বলেছেন, “লাইব্রেরিকে আধুনিকায়ন করতে প্রশাসন কাজ করছে এবং আসন সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।” তবে শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন, এই কাজ কবে শেষ হবে?
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুবিধার্থে প্রশাসনের উচিত দ্রুত উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের চাহিদা অনুযায়ী জব রিলেটেড বই সরবরাহ ও ভিতরে পড়ার সুযোগ সৃষ্টি, গবেষণার পরিবেশ উন্নতকরণ, আসন সংখ্যাবৃদ্ধি এবং কার্যকর সার্চ সিস্টেম চালু করা জরুরি।
শিক্ষার্থীদের মতে, লাইব্রেরি কেবল বইয়ের একটি ভাণ্ডার নয়, এটি তাদের জ্ঞানের পরিপূর্ণ বিকাশের কেন্দ্র। তাই লাইব্রেরির সেবাকে সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন করে তোলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত।
মেসেঞ্জার/সাকিব/জেআরটি