ঢাকা,  রোববার
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

চুয়েটে বঙ্গবন্ধু হলে আয়রন মিশ্রিত লাল পানি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাভিশ্বাস

চুয়েট প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:১৫, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চুয়েটে বঙ্গবন্ধু হলে আয়রন মিশ্রিত লাল পানি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নাভিশ্বাস

ছবি : মেসেঞ্জার

যে পানির অপরনাম জীবন, সেই পানিই যেন দুর্ভোগ ডেকে এনেছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের জীবনে। আয়রন মিশ্রিত লাল পানির কারণে শিক্ষার্থীদের বড় অংশ ভোগছেন চর্মরোগে, পড়ছে মাথার চুল, ময়লা হচ্ছে নতুন কাপড় চোপড়। মাঝে মধ্যে আবার আয়রণের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় হাত-পা ধুতেও অস্বস্তি বোধ করছেন অনেকে।

বঙ্গবন্ধু হলের ৩য় বর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী সায়িব বিন ইসলাম বলেন, পানির সমস্যায় আমরা অত্যন্ত অতিষ্ঠ। শরবতের মতো পানি দিয়ে দৈনন্দিন কাজ করা খুবই কষ্টকর। অনেক শিক্ষার্থীরাই চর্মরোগ ও অত্যধিক চুল পড়ার মতো রোগব্যাধিতে আক্রান্ত। অতিসত্বর এই বিষয়গুলি সমাধান না করলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাবে।

বঙ্গবন্ধু হলের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সাগর আহমেদ বলেন, এই ব্যবহারের পানির সমস্যা আজকে থেকে না অনেক অনেক আগে থেকে। অনেকে তো আগে থেকেই অভিযোগ দিচ্ছিলো। তাও আমরা এর সঠিক সমাধান পেলাম না। হলের কেয়ার টেকার মামারা কি পানির ট্যাংক ঠিকঠাক পরিষ্কার করেন কিনা সে বিষয়েও পরিষ্কার না আমরা।

তিনি আরো বলেন,এই পানি দীর্ঘদিন ব্যবহারের কারণে আমাদের স্কিনের অনেক অনেক সমস্যা দেখে দিচ্ছে। চর্মরোগ অনেক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে হলের অনেকের। চুল তো পড়ছেই। এই যেমন আমার ২০ ব্যাচের এক বন্ধুর পায়ে অনেক বাজে ভাবে চর্মরোগ ধরা পড়েছিল। যার দরুন ওকে পরে একটা সার্জারি করতে হয়েছিল। কারণ এই বাজে লাল মাটি পানি।

বঙ্গবন্ধু হলের ২য় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী সপ্রতিভ বড়ুয়া চৌধুরী বলেন, হলে দীর্ঘদিন যাবত চলে আসা পানির সমস্যা কারো অজানা নয়। প্রতিটি ব্লক এর ওয়াশরুম, গোসলখানায় মাত্রাতিরিক্ত আয়রনযুক্ত পানি ব্যবহার করতে করতে হল এ অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা বিপর্যস্ত। এ পানির প্রভাবে অনেকেরই চুল পড়া, এলার্জি, চর্মরোগসহ সহ নানা সমস্যায় ভুগছে। শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে পানির ব্যাপারে আশু সমাধান করা দরকার।

এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা সেই ব্যাপারে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. রিয়াজ আক্তার মল্লিক বলেন, পানির সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্যে আমি উপাচার্য মহোদয়ের সাথে আলাপ করেছি। তিনিও এ ব্যাপারে আন্তরিক। তবে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান আসতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। প্রাথমিকভাবে আমরা আগামী ইদের বন্ধে পানির চৌবাচ্চাগুলি পরিষ্কার করার ও পাইপ লাইনগুলো পর্যায়ক্রমে পরিবর্তন করার চিন্তা করছি। পাশাপাশি পানিকে কোনোভাবে পরিশুদ্ধ করা যায় কিনা সেটিও খতিয়ে দেখছি।

উল্লেখ্য, চুয়েটের আয়রন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে বঙ্গবন্ধু হলের দুরত্ব বেশি হওয়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানির উপরই শিক্ষার্থীদের নির্ভর করতে হয়। তবে সেই পানিতে অতিরিক্ত পরিমাণ আয়রন থাকায় দীর্ঘদিন ধরে পানি সংক্রান্ত এসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন উক্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।

মেসেঞ্জার/আফনান/তুষার