ঢাকা,  রোববার
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

সমালোচনা ও পদত্যাগের হিড়িকে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২ সদস্যের বৈষম্যবিরোধী কমিটি বাতিল

রোকন বাপ্পি, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সমালোচনা ও পদত্যাগের হিড়িকে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২ সদস্যের বৈষম্যবিরোধী কমিটি বাতিল

ছবি : মেসেঞ্জার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (জাককানইবি) শাখার ৫২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি প্রকাশের পর পরই স্থগিত করা হয়েছে।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে ৫২ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটি প্রকাশিত হয়। কমিটি প্রকাশিত হওয়ার পর পরই ফেসবুক জুড়ে চলে সমালোচনা ও পদত্যাগের হিড়িক এবং পরবর্তী ২ ঘণ্টার মধ্যেই তা উক্ত পেইজ থেকে ডিলিট করা হয়।

এ কমিটি প্রকাশ পাওয়ার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন অনেকে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে উক্ত কমিটির লিস্ট থাকাকালীনই পদত্যাগ করেন কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব সাবিকুন্নেছা লাবনি, সহ-মুখপাত্র ইব্রাহিম খলিল ও সদস্য রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ, সোলায়মান মিয়া, জাকির হোসেন, আজিজুল ইসলাম, আশরাফ, ইমরান প্রমুখ ব্যক্তি।

কমিটিতে থাকা সদস্য আইন ও বিচার বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইব্রাহিম খলিল তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন,‘আমি ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী একজন কর্মী। আমার আন্দোলনে অংশ নেওয়ার মূল ভিত্তিগুলোর অন্যতম একটি ছিল বাংলাদেশে ক্যাম্পাস ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পরিবেশ বান্ধব শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা ও কার্যকরী পদক্ষেপ দেখতে চাই। আপাতত আমি ক্যাম্পাসে কোন ছাত্র রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট নই।

সদ্য প্রকাশিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটিতে কে বা কারা আমার অনুমতি ব্যতীত আমার নাম কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠিয়েছে সে ব্যাপারে আমি অবগত নই।

আমি জুলাই আন্দোলনে আমার নৈতিক জায়গা থেকে যুক্ত হয়েছিলাম। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ক্যাম্পাস কমিটির সাথে কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্তৃক প্রদত্ত কমিটিতে আমার নাম ব্যবহার করা হয়েছে এই নাম সম্পর্কে আমি অবগত নয়। আমি চাই না ভবিষ্যতেও আমার নাম আমার অনুমতি ছাড়া কোনো সংগঠনে ব্যবহার করুক।

আমি স্বেচ্ছায় এই কমিটি থেকে আমার নাম প্রত্যাহার করে নিলাম।’

কমিটির সদস্য সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আশরাফ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘আমি জুলাই আন্দোলনে আমার নৈতিক জায়গা থেকে যুক্ত হয়েছিলাম। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠনের সাথে আমার সম্পৃক্ততা ছিল না এবং এখনো নেই। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্তৃক প্রদত্ত কমিটিতে সদস্য পদে আমার নাম ব্যবহার করা হয়েছে এই সম্পর্কে আমি অবগত নয়। আর আমার ক্যাম্পাসের যে বা যারা আমার নাম অনুমতি না নিয়ে কেন্দ্রে প্রেরণ করেছেন তাদেরকে বলতে চাই, কাজটি করা আপনাদের উচিৎ হয়নি।

আমি স্বেচ্ছায় এই কমিটি থেকে আমার নাম প্রত্যাহার করে নিলাম।’

কমিটিতে নামের স্বচ্ছতা নিয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছিল বিভিন্ন সমালোচনা। নামের বিষয়ে কোনো স্পষ্টতা না থাকায় পড়তে হচ্ছিল দ্বিধা-দ্বন্ধে। তবে কমিটিতে নাম আসা অনেকেই এই বিষয়ে অবগত নয় বলেই স্বীকারোক্তি দিচ্ছিলেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পেইজ থেকে কমিটির তালিকা ডিলিট হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে কমিটির আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন রিয়াদ বলেন, পোস্ট ডিলিট হওয়ার কারণ সম্পর্কে আমরা অবগত নই। এখনো এ ব্যাপারে আমরা কথা বলিনি। আমরা সেন্ট্রালে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি। যোগাযোগ করতে পারলেই আপডেট জানাবো।

এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কনভেনর হাসনাত আব্দুল্লাহর সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

মেসেঞ্জার/তুষার