
ছবি : মেসেঞ্জার
সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গত কয়েকমাস ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন, হত্যা ও চুরি, ডাকাতির পাশাপাশি নারী ও শিশু ধর্ষণের মত অপরাধ বেড়েই চলেছে। এতে ফুঁসে উঠেছেন দেশের সচেতন নাগরিকরা। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে বিভিন্ন প্রাঙ্গণ থেকে। এরই প্রেক্ষিতে এমন জঘন্য অপরাধের প্রতিবাদে ও দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে আজ চুয়েটে মশাল মিছিল এবং বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভরত অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও কৌশল বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহরীন রহমান বলেন, আমরা চুয়েটের শিক্ষার্থীরা, শুধু প্রযুক্তি ও জ্ঞানের চর্চাতেই সীমাবদ্ধ নই; বরং আমরা ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর নৈতিক দায়িত্বও বহন করি। এই বিক্ষোভ সমাবেশ ন্যায়বিচারের দাবিতে আমাদের সেই দায়বদ্ধতার প্রতিফলন। এটি শুধু ধর্ষণের বিরুদ্ধে নয়, বরং বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধেও একটি শক্তিশালী আওয়াজ। বিচারহীনতার সংস্কৃতি ও আইনি দুর্বলতার কারণেই এসব অপরাধ বারবার ঘটছে। শুধু কঠোর শাস্তি নয়, সামাজিক সচেতনতা, শিক্ষার প্রসার এবং নারীদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। সমাজের প্রতিটি স্তর থেকে এই অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে, সত্যিকার অর্থে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দায়িত্ব এই আন্দোলনকে একদিনের প্রতিবাদে সীমাবদ্ধ না রেখে দীর্ঘমেয়াদি সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে চাপ প্রয়োগ করা, যেন অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায়।
যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী মোস্তফা খালিদ বিন শামস আরিয়ান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে খুন, ছিনতাই থেকে শুরু করে ধর্ষণের মত অপরাধসমূহ বেড়েই চলেছে। স্বৈরাচার পতনের পর নতুন বাংলাদেশে এ ধরণের ঘটনা মোটেই কাম্য নয়। যথাযথ বিচার ও উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি করছি,এবং এই ধরণের নিকৃষ্ট অপরাধের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের শাস্তি পেতেই হবে। এমন ঘটনাসমূহের প্রতিবাদে আজ আমরা চুয়েট ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করছি।
চুয়েটের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাদমান রহমান অনন্ত বলেন, আজকের এই বিক্ষোভ সমাবেশে আমরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছি। আমরা এই বিক্ষোভের মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই। বাংলার জমিনে ধর্ষকদের কোনো ঠাঁই নেই। দেশে বর্তমানে উদ্বেগজনকহারে ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা অত্যন্ত হতাশাজনক এবং জাতি হিসেবে লজ্জার। নারীরা বাইরে অনিরাপদ বোধ করছে। এরকম বাংলাদেশ আমরা চাই না।
তাই দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধর্ষকদের গ্রেপ্তার করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমরা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই। যেনো ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। বাংলার বুকে আমরা আর কোনো ধর্ষণের ঘটনা দেখতে চাই না। আর ধর্ষক মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়াবে, সেটাও হতে পারে না। তাই সবশেষে আবারও আমি দ্রুত ধর্ষকদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, বিক্ষোভ সমাবেশের পরপরই শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিলে অংশ নেন এবং শ্লোগানে শ্লোগানে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করার দাবি জানান।
মেসেঞ্জার/আফনান/তুষার