ঢাকা,  মঙ্গলবার
০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

সিঙ্গাপুরে প্রবাসী হিরো জহির পেলেন অ্যাওয়ার্ড

বাপ্পী কুমার দাস, মালয়েশিয়া

প্রকাশিত: ১৮:২৯, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

সিঙ্গাপুরে প্রবাসী হিরো জহির পেলেন অ্যাওয়ার্ড

ছবি : মেসেঞ্জার

সিঙ্গাপুরে একজন বাংলাদেশী কর্মী স্থানীয় সময় (২০ অক্টোবর) দুপুরের খাবার কেনার পর সাইকেল চালিয়ে ডরমিটরিতে  যাচ্ছিলেন, এমন সময় তিনি ব্লক ৩৫০সি ক্যানবেরা রোডের নীচে মানুষের ভিড় দেখলেন, বেশিরভাগ মানুষ তাদের ফোন দিয়ে  ছবি এবং ভিডিও করায় ব্যাস্ত ছিল।

এমন দৃশ্য দেখে বাংলাদেশ প্রবাসী জহির (৩৪), দেখেন তিন বছরের একটি ছেলে বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় ঝুকিপূর্ন স্থানে দাড়িয়ে আছে। এ পরিস্থিতি দেখে তার দেশে ৭ বছরের ছেলের কথা মনে পড়ে, তখন সে কোন কিছু চিন্তা না করে ছেলেটির বাঁচতে এগিয়ে যান, জহির সিঁড়ি বেয়ে তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটের দরজায় গিয়ে টোকা দিল, যার কিছু পাশে ছেলেটি দাড়িয়ে আছে।

দরজায় ধাক্কা মারলেন, চিৎকার করলেন এবং কলিংবেল বাজিয়ে দিলেন, কিন্তু তিনি কোন সাড়া পাননি। হতাশ বোধ করে, জহির ছেলেটিকে বাঁচাতে ধারে উঠে গেল। তিনি যখন ধারের দিকে যাওয়ার দরজা খোলার চেষ্টা করেন, তখন তিনি তালাবদ্ধ দেখতে পান।

তখন তিনি সেখান থেকে ওঠার চেষ্টা করার জন্য তিনি দ্বিতীয়তালা নেমে গেলেন। দ্বিতীয়তালায় জহির দেখল চারজন লোক ছেলেটির নিচে কম্বল ধরে আছে, সে পড়ে গেলে তাকে ধরতে পারে। এ সময় জহিরের সাথে মায়ানমারের কর্মী সা থু ইয়া অং (২৬) ছিলেন তিনিও ৬ বছর বয়সের ভাতিজা ও ৪ বছর বয়সের ভাগ্নীকে চিন্তা করে ছেলেটিকে বাঁচতে এগিয়ে যান। 

দুজনেই ছেলেটিকে বাঁচাতে একটা পরিকল্পনা করলেন যে ভাবে হক ছেলেটিকে বাঁচতে হবে। জাহির লম্বা হওয়ায় তিনি থু ইয়াকে দ্বিতীয় তলা ধারে উচ্চু করে ধরেন। থু ইয়া দেয়ালে জড়িয়ে ধরে ছেলেটির কাছে ধীরে ধীরে গিয়েছিল। ভয় পাচ্ছিল যে হঠাৎ নড়াচড়া শিশুটিকে ভয় দেখাতে পারে এবং তাকে পিছলে যদি পড়ে যায়।

প্রান্তটি তার পায়ের চেয়ে সামান্য প্রশস্ত ছিল, কিন্তু থু ইয়া ভয় পায়নি। আমি ছেলেটির জন্য এত ভয় পেয়েছিলাম, যে আমি নিজের জন্যও ভয় পেতে পারিনি। আসলে, আমি ভিড়ের থেকে বেশি নার্ভাস ছিলাম, কারণ অনেক লোক আমাকে দেখছিল। 

তিনি আরো বলেন, উদ্ধার অভিযান কঠিন হয়ে পড়েছিল তা হল নীচের উদ্বিগ্ন লোকেরা তাদের সাবধান হওয়ার জন্য চিৎকার করে এবং ছবি এবং ভিডিও তুলতে ব্যাস্ত ছিল। শিশুটির কাছে পৌঁছানোর পর, থু ইয়া তাকে তার বাহুতে জড়িয়ে নিল।

এ সময় ছেলেটি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল, তার হাত ঠান্ডা ছিল এবং সে আমার কাঁধে শক্ত করে ধরেছিল। এ সময় ছেলেটি খুব কান্নাকাটি করছিল। পরবর্তী  নিচে অপেক্ষা করা সকলে তাদের দুই জনের ধন্যবাদ জানন এবং মূহুর্তের মধ্যে নেটদুনিয়ায় ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়। 

এ সময় ছেলেটিকে বাঁচানোর জন্য ঘটনা স্থলে সিঙ্গাপুর সিভিল ডিফেন্স ফোর্স (এসসিডিএফ) কমিউনিটি লাইফসেভার  উপস্থাপিত ছিলেন। পরবর্তীতে (২৫ অক্টোবর) এ ভালো কাজের জন্য জাহির তাদের সাহসিকতার জন্য এসসিডিএফ কমিউনিটি লাইফসেভার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন।

প্রবাসী জহির, যিনি সিংঙ্গাপুরপর পেপার মিল কোম্পানি জি হো সেং-এর একজন কর্মী। প্রবাসে এমন মানবিক কাজে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ দেশের মর্যাদা বুদ্ধি পায় বলে মনে করেন দূতাবাস সহ বিভিন্ন কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ।

মেসেঞ্জার/তারেক