ছবি : মেসেঞ্জার
সংযুক্ত আরব আমিরাতে মহান বিজয় দিবস উদযাপনে পৃথক আয়োজন করে বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবি এবং বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাই ও উত্তর আমিরাত। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই দেশটিতে অবস্থিত দুটি মিশনেই নানা কর্মসূচির মাধ্যমে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপন করে। সকাল ৮:০০ টায় বাংলাদেশ দূতাবাস, আবুধাবিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন চ্যার্জ-দ্য-আফেয়ার্স মোহাম্মদ মিযানুর রহমান।
দূতাবাসের বিজয় দিবস উদযাপনের দ্বিতীয় পর্বের সূচনা করা হয় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করার মাধ্যমে।এতে ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর এক আলোচনায় অংশনেন দূতাবাসের কর্মকর্তারাসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এরপর, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণীসমূহ পাঠ করেন দূতাবাসের কর্মকর্তারা। এসময় ২৪ এর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত এবং শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে দূতাবাসে নিযুক্ত চ্যার্জ-দ্য-আফেয়ার্স তাঁর বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অর্জিত হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়, বিশ্বমানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। তিনি প্রত্যাশা করেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশীগণ তাদের অর্জিতজ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে দেশের উন্নয়নে আরও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবেন।
২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের মাধ্যমে অর্জিত বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গৃহীত বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রম ও উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে প্রবাসীরা ঐক্যবদ্ধ থাকবেন মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অপরদিকে দুবাইয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে বিজয় দিবসের আয়োজনের প্রথম পর্বে সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান। এসময় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মরণে এবং বাংলাদেশের শান্তি ও সমৃদ্ধিরকামনা করে মোনাজাত ও দোয়া করা হয়।
সন্ধ্যায় দুবাইয়ে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবস অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। এ সময় মহান বিজয়দিবস উপলক্ষ্যে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণীসমূহ পাঠ করেন কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা।
কনস্যুলেটের আয়োজনে অংশ নেন দুবাই ও উত্তর আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান। তিনি তার বক্তব্যের শুরুতে ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল মুক্তিযোদ্ধার প্রতি গভীর শ্রদ্ধানিবেদন করেন। তিনি মহান বিজয় দিবসে স্বাধীনতার সুফল জনগণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেয়ার আহবানজানিয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার এবং বিদেশের মাটিতে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখার আহবান জানান।
এসময় তিনি তার বক্তব্য, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীতপদক্ষেপ গুলোর উপর আলোকপাত করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসীদের সক্রিয় ভুমিকা রাখারজন্য আহবান জানান।
কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে মহান বিজয় দিবসে উপলক্ষ্যে আলোচনা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশনেন কনসুলেটের কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যরা। এতে ছিলো স্থানীয় স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ছিলো সঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান, কবিতা আবৃতি ও শিশু-কিশোরদের নৃত্যে পরিবেশনা।
আবুধাবি ও দুবাইয়ের পৃথক আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ দর্শক সারিতে সংখ্যক সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশি বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগদেন।
মেসেঞ্জার/রিদয়/তারেক