ছবি : মেসেঞ্জার
কাজের ব্যস্ততা হোক কিংবা সময়ের অভাব— অনেকেই এখন চটজলদি তৈরি হওয়া খাবারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। এই লাইফস্টাইল থেকে বেরিয়ে স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবারে মনোযোগী হওয়া বেশ চ্যালেঞ্জিং বিষয়। পুষ্টিকর খাবার যে শুধুমাত্র শরীরকেই সুস্থ রাখে এমনটা নয়; এর প্রভাব আমাদের মন-মেজাজেও পড়ে। ফলে আমাদের আশেপাশের অনেকেই শরীরের খেয়াল রাখতে সাধারণ খাবারের পরিবর্তে ফর্টিফায়েড খাবার বেছে নিচ্ছেন।
আজকাল কোনো সুপার শপ বা বাজারে গেলেই ফর্টিফায়েড খাবারের কথা খুব শোনা যায়। অতিরিক্ত ভিটামিন ও মিনারেল যোগ করা ফর্টিফায়েড খাবার বর্তমানে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছে বেশ পরিচিত। ফর্টিফায়েড খাবারে যোগ করা ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’ অথবা আয়রন ও ক্যালসিয়ামের মতো মিনারেল পুষ্টি ঘাটতি পূরণ করতে সাহায্য করে, যা সাধারণ খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায় না।
আরও সহজ করে বললে খাবারে আলাদা একটি মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যোগ করা যা আগে থেকে ছিল না বা আমাদের শরীরে প্রয়োজন বা ঘাটতি রয়েছে। আমাদের সুস্থ জীবন যাপন করার জন্য ফর্টিফায়েড খাবার বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বের উন্নয়নশীল অনেক দেশে পুষ্টি ঘাটতি একটি বড় সমস্যা। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে এটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
পুষ্টি ঘাটতি শুধু শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশে বাধা দেয় না, বরং দীর্ঘমেয়াদে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এর মধ্যে রয়েছে রক্তশূন্যতা, চোখের সমস্যা, হাড়ের সমস্যা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। বাংলাদেশের নারী ও শিশুরা এসব সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছে।
পুষ্টি ঘাটতির কারণে তৈরি হওয়া এসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে বাংলাদেশে রয়েছে বিভিন্ন রকম ফর্টিফায়েড খাবার। দরিদ্র থেকে ধনী— সবার অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই, স্বল্প দামে বাড়তি পুষ্টি সরবরাহের অংশ হিসেবে আছে ফর্টিফায়েড চাল যেখানে ভিটামিন ‘এ’ ও আয়রনের মতো মিনারেল যোগ করা হয়। অপরদিকে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘ডি’ সমৃদ্ধ তেলও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করার পর থেকেই ফর্টিফায়েড খাবারের প্রচলন ও প্রসারে দারুণ ভূমিকা রেখে চলেছে গ্রামীণ ডানোন। পুষ্টি ঘাটতি দূর করতে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি পণ্য এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৭ সালে প্রথম ফর্টিফায়েড দই নিয়ে আসে গ্রামীণ ডানোন। উত্তরবঙ্গের ফ্যাক্টরিতে তৈরি হওয়া পণ্যটি শক্তি দই নামে পরিচিত। পরে ২০২০ সালে শিশুদের জন্য আনা হয় দেশের প্রথম ফর্টিফায়েড বিস্কুট। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২ সালে পরিবারের সব সদস্যদের জন্য আনা হয় আরও কিছু ফর্টিফায়েড পণ্য।
সম্প্রতি গ্রামীণ ডানোন তার ফর্টিফায়েড পণ্যের পরিসর আরও বাড়িয়েছে। ২০২২ সালে নতুন ধরনের ফর্টিফায়েড বিস্কুট, ভিন্ন ফ্লেভারের বাচ্চাদের এবং বড়দের ডিলাইট দই, ফর্টিফায়েড সফট ড্রিংক পাউডার বাজারে আনা হয়; এই প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল ২০২৪ সালেও। এ বছর বাজারে আসে ফর্টিফায়েড টক দই, যা সিঙ্গেল সার্ভিং কাপেও পাওয়া যাচ্ছে। এসব খাবারে যোগ করা আয়রন রক্ত গঠনে, আয়োডিন মেধা বিকাশে, জিংক এবং ভিটামিন ‘এ’ সার্বিক সুরক্ষা বজায় রাখা ও দৃষ্টি শক্তির ক্ষয় প্রতিরোধসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। সবার পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ সরবরাহ করছে তাদের পণ্যগুলো। এভাবেই বাংলাদেশের মানুষের পুষ্টি ঘাটতি দূর করার লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে নিজেদের প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রেখেছে গ্রামীণ ডানোন।
মেসেঞ্জার/তুষার