
ছবি: সংগৃহীত
সজনে আমাদের সকলের কাছে অতি পরিচিত সুস্বাদু একটি সবজি। সজনে গাছকে বিভিন্ন খাদ্য প্রজাতির মধ্যে সর্বোচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন উদ্ভিদ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সজনের বাকল, শিকড়, ফুল, ফল, পাতা, বীজ এমনকি এর আঠাতেও ঔষধিগুণ আছে।
বিশেষ করে সজনে পাতা শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এটি ম্যালেরিয়া জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ অন্যান্য অনেক রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। সজনে ডাঁটা, সজনে শাক, সজনে ফুল ইত্যাদি ঔষধি গুণে পরিপূর্ণ। নিয়মিত সজনে পাতা খেলে আরও কিছু উপকারিতা পাওয়া যায়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
সজনে পাতার এন্টি-অক্সিডেন্ট এবং আইসোথিয়োকাইনেটস নামের উপাদানগুলো রক্তে সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিদিন মাত্র ৫০ গ্রাম সজিনার পাতা খেলে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। বিশেষ করে ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য আদর্শ সজনে পাতার চা। এই পাতার মধ্যে ফাইটোকেমিক্যাল নামের একটি যৌগ রয়েছে যা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই পাতার চা পান করলে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং অক্সিডেটিভ চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রক্ত স্বল্পতা দূর করে
সজনে পাতা রক্তল্পতা দূর করে। শাকের তুলনায় পঁচিশ গুন বেশি আয়রন রয়েছে এতে। কলা থেকে তিন গুন বেশি পটাশিয়াম রয়েছে। শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সজনে পাতা দারুণ উপযোগী। তবে ভাল উপকার পেতে বেশ কিছুদিন নিয়মিত সজনে পাতা, ডাঁটা ও ফুল খাওয়া দরকার।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের খনি
সজনে পাতাকে এন্টি-অক্সিডেন্টের খনি বলা হয়ে থাকে। যা ক্যানসার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়। তাছাড়া এ তে রয়েছে বেটা-কেরোটিন, কিউরেকটিন এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড যা মানবদেহের জন্য উপকারী। ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তের চাপ ও শর্করা কমাতে সাহায্য করে।
ব্ল্যাড প্রেসার নিয়ন্ত্রিত থাকে
ব্ল্যাড প্রেসার রোগীদের জন্য খাবার লবণ অর্থাৎ ‘সোডিয়াম ক্লোরাইড’ খুবই ক্ষতিকর। অপরদিকে, ‘পটাশিয়াম লবণ’ কোন ক্ষতি করেনা। সাজনে ডাঁটাতে সোডিয়াম ক্লোরাইড নেই বললেই চলে। তাই এতে ব্ল্যাড প্রেসার নিয়ন্ত্রিত থাকে।
ত্বকের বার্ধক্য রোধ করে
সজনের তেল এবং সজনে পাতার গুঁড়া ত্বকের বলিরেখা এবং ত্বকের ক্ষত দূর করে। এছাড়াও সজনে আমাদের ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের কুঁচকানো ভাব, বলিরেখা এবং বিভিন্ন দাগ ছোপ দূর করে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বল বজায় রাখতে সাহায্য করে। গুঁড়া কিংবা সজনের বীজ গ্রহণ করলে রক্ত পরিশ্রুত হয় যার ফলে ত্বক পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যকর হয়।
রোগ প্রতিরোধ করে
সজনে পাতার শাক বা কাঁচা পাতার রস মানব শরীরের জন্য অনেক উপকারী। সজনে মানব শরীরে যেমন হরমোন বর্ধন করতে পারে, তেমনি পারে মায়েদের বুকের দুধ বাড়িয়ে দিতে। তাছাড়া সজনে পাতা শাক, ভর্তা বা পকোড়া করে খেলে মুখের রুচি আসে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, কোলাইটিস এবং জন্ডিসের সময় ও ব্যাপক কার্যকরী সজনে পাতা। সজনের ডাঁটা ও পাতা কৃমিনাশক ও জ্বরনাশক হিসেবেও কাজ করে।
টিডিএম/এনএম