ঢাকা,  শনিবার
২৯ জুন ২০২৪

The Daily Messenger

পানিবণ্টন ইস্যু নিয়ে মুখোমুখি কেন্দ্র ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার

মেসেঞ্জার অনলাইন

প্রকাশিত: ১৬:৩৭, ২৬ জুন ২০২৪

আপডেট: ১৭:১৭, ২৬ জুন ২০২৪

পানিবণ্টন ইস্যু নিয়ে মুখোমুখি কেন্দ্র ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার

ছবি : সংগৃহীত

ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে তিস্তা ও গঙ্গা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার (২৪ জুন) রাজ্যের সচিবালয় নবান্ন থেকে পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়ে সরাসরি প্রতিবাদ জানান তিনি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কড়া ভাষায় চিঠিও দিয়েছেন। 

কেন্দ্র যদি একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নেয় তবে এর প্রতিবাদে গোটা দেশজুড়ে বড় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

যদিও এরপর সোমবার (২৪ জুন) রাতেই কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, তিস্তা ও গঙ্গার পানি বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সবকিছুই জানানো হয়েছে। সকল বিষয় নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তাঁরা সবটাই জানে, এখন মিথ্যা দাবি করছে। 

কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, গঙ্গার পানি চুক্তি নিয়ে ১৯৯৬ সালে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে একটি অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়েছিল। তাঁরা সবকিছুই জানত। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। 

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক জোরদারে নতুন ৭ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরবাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক জোরদারে নতুন ৭ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এরপরই মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকল বিষয়ে জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, পানিবণ্টন ইস্যু নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নীতিনির্ধারক ও নীতি নির্ণায়ক স্তরের সঙ্গে ভারত সরকারের কোনো যোগাযোগ হয়নি। 

তিনি আরও বলেন, এর আগে চিঠির মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বারবার প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন যে, ভারত-বাংলাদেশ পানিবণ্টন বহু শত বছরের ইতিহাস ও ভূ-প্রকৃতির মাধ্যমে সম্পর্কযুক্ত একটি বিষয়। এর ওপরে নির্ভর করে পশ্চিমবঙ্গের কোটি কোটি মানুষের পানি পাওয়া, গঙ্গার ভাঙ্গনজনিত সমস্যা, কৃষি কাজ, শিল্প, সেচ, খাবার পানিসহ একাধিক বিষয় রয়েছে। 

আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যে চিঠির বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে বলা হয়েছে, তা হলো ২০২৩ সালের ২৪ জুলাইয়ের বিষয়। ভারতের কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি টেকনিক্যাল কমিটি তৈরি করেছিল। তাতে পরবর্তীতে মোট ১২ জন সদস্যের টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হয়।

যার মধ্যে একজন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চিফ ইঞ্জিনিয়ার আছেন। এরপর চলতি বছরেই ১৪ জুলাইয়ের একটি চিঠি পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। তাতে টেকনিক্যাল কমিটিতে ভারতের কেন্দ্রীয় পানি কমিশনকে তাঁদের রিপোর্ট দেয়। যেটা ভারতের কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রণালয়ে জমা পড়ে। 

ওরা (ভারত সরকার) বলেছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চিফ ইঞ্জিনিয়ার তার মতো দিয়েছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বা জয়েন্ট সেক্রেটারির কাছে দু-একটি ছোট টেকনিক্যাল ইনপুট ছাড়া কিছু চাওয়া হয়নি তাঁর কাছ থেকে। 

কলকাতা-রাজশাহী ট্রেন চালুর ঘোষণাকলকাতা-রাজশাহী ট্রেন চালুর ঘোষণা মমতার প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, অনলাইন বৈঠকে এবং পরে ই-মেইল মারফত আমাদের দু-একটি ছোট টেকনিক্যাল ইনপুট ছাড়া এই রিপোর্টে আর কিছু প্রতিফলিত হয়নি।

তবে এই রিপোর্ট পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সাময়িক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলনের কোনো প্রয়াস করে না। এই রিপোর্টে কয়েকজন প্রকৌশলী তাঁদের কিছু টেকনিক্যাল মতো দিয়েছিলেন। তাতে তিস্তা, পুনর্ভবা, আত্রেয়ীসহ রাজ্যের উত্তরবঙ্গ ও মধ্য বঙ্গের মধ্য দিয়ে যেসব নদী পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে যায় তার উল্লেখ মাত্র নেই। 

মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে গঙ্গা ও তিস্তার পানিবণ্টন, গঙ্গার ভাঙনসহ যতগুলো ইস্যু আছে এর প্রতিফলন এই টেকনিক্যাল রিপোর্টে নেই, তা থাকার কথাও নয় বলে উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। 

তিনি বলেছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ভারত সরকারের জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের এই কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর সেই মন্ত্রণালয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে কোনো চিঠি দেয়নি। এ বিষয়ে কোনো টিম পাঠায়নি বা কোনো আলোচনা হয়নি। 

আলাপন আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদিকে যে সকল গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক পানিবণ্টন সম্পর্কিত এবং রাজ্যের মানুষের অন্ন, বস্ত্র, সংস্থানের সঙ্গে যুক্ত, নদী ক্ষয়, নদী ভাঙ্গনজনিত যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন টেকনিক্যাল রিপোর্টে উল্লেখ নেই। 

সবশেষে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পানিবণ্টন ইস্যু ও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নীতি নির্ধারণ ও নীতি নির্ণায়ক স্তরের সঙ্গে ভারত সরকারের নীতি নির্ণায়ক ও নীতিনির্ধারক স্তরের কোনো যোগাযোগ নেই। যে কারণে তাঁদের কাছেও বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

মেসেঞ্জার/তারেক

Advertisement