ছবি: সংগৃহীত
উত্তেজনা বাড়িয়ে তাইওয়ানের চারপাশে আবারও সামরিক মহড়া শুরু করল চীন। সোমবার (১৪ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল থেকে যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ দিয়ে এই সামরিক মহড়া শুরুর কথা জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দিক থেকে তাইওয়ানের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে মহড়া চালাচ্ছে বলে চীনের সেনার ইস্টার্ন কম্যান্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
চীনের দাবি, তাইওয়ান বিচ্ছিন্নতাবাদী কাজ করায় তাদের সতর্ক করে করতেই এই মহড়া। তবে তাইওয়ানের দাবি এমন সামরিক মহড়ার মাধ্যমে চীন দ্বন্দ্বকে উসকে দিচ্ছে।
চীনের দাবি তারা 'সোর্ড ২০২৪বি' নামের এই মহড়ার মাধ্যমে তাদের, নৌ ও বিমান বাহিনীর যৌথ অভিযান চালানোর সক্ষমতা যাচাই করছে।
তবে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চীনের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে এই মহড়া অযৌক্তিক এবং উসকানিমূলক। চীন এভাবে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থায়িত্ব নষ্ট করছে বলে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়।
তাইওয়ান জানিয়েছে, তারা অন্তত ২৫টি যুদ্ধবিমান ও সাতটি যুদ্ধ জাহাজ ও চারটি অন্য ধরনের জাহাজ শনাক্ত করেছে।
এদিকে চীনের সামরিক মহড়ার কারণে তাইওয়ানের সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। সোমবার তাইওয়ানের যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে দেখা গেছে।
বার্ত সংস্থা এএফপির প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে তাইওয়ানের উত্তর-পূর্বে সিনচু বিমান ঘাঁটিতে যুদ্ধবিমান উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে দেখা গেছে। এ সময় ঘাাঁটিতে একটি সামরিক স্থল যানের ছবিও দেখা যায়।
এর আগে স্থানীয় সময় রোববার তাইওয়ানের দক্ষিণের সাগরে চীনের বিমানবাহী রণতরির দেখা মেলে। এরপরই সতর্ক অবস্থান নেয় তাইপে। স্বায়ত্বশাসিত দ্বীপটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রণতরীটির কর্মকাণ্ডের ওপর গভীর নজরদারি চালাচ্ছে সামরিক বাহিনী। প্রয়োজন পড়লে পাল্টা জবাব দেয়ার প্রস্তুতিও নেয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়।
সম্প্রতি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের চীন বিরোধী মন্তব্যের কারণেই বেইজিং এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গেল সপ্তাহে নিজেদের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে দ্বীপটির প্রেসিডেন্ট লাই চিং তে বলেন, তাইপের প্রতিনিধিত্ব করার কোনো অধিকার নেই বেইজিংয়ের।
তার এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাইওয়ান কখনো দেশ হতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। তাইওয়ান ঘিরে চীনের তৎপরতা নিয়ে বেইজিংকে সতর্ক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এরপরই চীনের রণতরীর দেখা মিলে দ্বীপটির উপকূলে।
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে চীন। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রায়ই দ্বীপটি ঘিরে সামরিক মহড়া চালায় বেইজিং। গত কয়েক বছরে তাদের এ তৎপরতা বেড়েছে। এ সময় দফায় দফায় তাইওয়ান ঘিরে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে দেশটি। তবে চীনের দাবি মানতে নারাজ তাইওয়ান। নিজেদের স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দাবি করে দ্বীপটি।
মেসেঞ্জার/আজিজ