ঢাকা,  বুধবার
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে কিশোরীর গুলি, শিক্ষকসহ নিহত ২

মেসেঞ্জার ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলে কিশোরীর গুলি, শিক্ষকসহ নিহত ২

ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের একটি স্কুলের শ্রেণিকক্ষে গুলি চালিয়ে এক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকে হত্যা করেছে ১৫ বছরের কিশোরী। এই ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অন্তত ৬ জন। এই ঘটনার পর ওই কিশোরী নিজেও আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

উইসকনসিন ম্যাডিসনের অ্যাকাউন্ট্যান্ট লাইফ ক্রিশ্চিয়ান স্কুল নামের একটি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে কিন্ডার গার্টেন থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। ম্যাডিসন উইসকনসিনের রাজধানী, যেখানে প্রায় ২ লাখ ৭০ হাজার মানুষ বাস করে।

ম্যাডিসন পুলিশের প্রধান শন বার্নস এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ দুই শিক্ষার্থীর অবস্থা সংকটাপন্ন। এক শিক্ষক ও তিন শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হলেও তারা বেঁচে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীর নাম নাটালি রুপনো। তার ডাক নাম সামান্থা। তবে কেন এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তা এখনো জানতে পারেনি পুলিশ। সামান্থার পরিবার তদন্তে সহযোগিতা করছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী যথাসময়ে স্কুলে উপস্থিত হয় এবং স্কুল শুরুর প্রায় তিন ঘণ্টা পর একটি হ্যান্ডগান বের করে গুলি চালানো শুরু করে। গুলি চালানোর পর শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাসরুমে নিজেদের আবদ্ধ করে ফেলে দারুণভাবে। অ্যাকাউন্ট্যান্ট লাইফের কর্মকর্তা বারবারা উইয়ার্স, ‘ছেলেমেয়েরা দারুণভাবে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।’ পরে সব শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

স্কুলটির সাবেক শিক্ষক বার্নস বলেন, ‘আজ ম্যাডিসন এবং আমাদের পুরো দেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখের দিন। আমাদের কমিউনিটিতে সহিংসতার বিষয়ে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করতে হচ্ছে, এটি খুবই হতাশাজনক।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই ভবনে থাকা প্রতিটি শিশু, প্রতিটি মানুষ যার এই ঘটনার শিকার এবং তারা চিরদিনই এর মানসিক ভীতির বয়ে বেড়াবে। এ ধরনের ট্রমা কখনো সহজে দূর হয় না।’ বার্নস জানান, গুলি ঘটনা ঘটার পর দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ৯১১ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে জানায়।

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে কোনো নারী কোনো স্কুলে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে এমন ঘটনা বিরল। যুক্তরাষ্ট্রের মাত্র ৩ শতাংশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নারীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। কেই-১২ স্কুল শুটিং ডেটাবেইস ওয়েবসাইট অনুসারে, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ৩২২টি স্কুলে গুলির ঘটনা ঘটেছে। ১৯৬৬ সালের পর থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৩৪৯টি।

যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক সহিংসতা এবং স্কুল নিরাপত্তা বড় ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্কুলে গুলির সংখ্যা বেড়েছে। এই সহিংসতা শহর, উপশহর এবং গ্রামীণ এলাকাগুলোর সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলোকে প্রভাবিত করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আরও হত্যাকাণ্ড প্রতিরোধে কংগ্রেসকে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন পাস করার আহ্বান জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক প্রায় প্রতিটি স্কুলে গুলির ঘটনার পর এ ধরনের আহ্বান উপেক্ষিত হয়েছে। এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, ‘আমাদের শিশুদের এই বন্দুক সহিংসতা থেকে রক্ষা করতে না পারা গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এটিকে স্বাভাবিক হিসেবে মেনে নিতে পারি না।’

এর আগে, ২০২২ সালে বাইডেন তিন দশকের মধ্যে প্রথম বড় ধরনের ফেডারেল অস্ত্র সংস্কার আইনে স্বাক্ষর করেন। এর এক মাস আগে ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ টেক্সাসের উভালডে শহরের রব এলিমেন্টারি স্কুলে গুলি চালিয়ে ১৯ শিক্ষার্থী ও দুই শিক্ষককে হত্যা করে।

মেসেঞ্জার/তারেক