ছবি : সংগৃহীত
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বিরুদ্ধে তার নিজের দল লিবারেল পার্টিতে ক্ষোভের দানা বেঁধে উঠেছে। যার ফলে তিনি যে কোনো দিন দলের নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে পারেন বলে জানা গেছে। সংবাদপত্র ‘দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল’ রোববার (৫ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে৷ কানাডার রাজধানী ওটোয়া থেকে এএফপি আজ এ খবর জানায়।
লিবারেল পার্টির অভ্যন্তরীণ বিষগুলো সম্পর্কে অবগত আছেন এমন তিনটি অসমর্থিত সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে রোববার‘ দ্য গ্লোব’ জানায়, আজই পদত্যাগের ঘোষণা দিতে পারেন ট্রুডো। দ্য গ্লোবের সূত্রে জানা গেছে, বুধবার লিবারেল পার্টির জাতীয় সম্মেলনের আগেই এই ঘোষণা আসবে।
দ্য গ্লোব আরও জানিয়েছে, পদত্যাগের পরও ট্রুডো অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ চালিয়ে যাবেন কি-না, তা নিশ্চিত নয়। তাৎক্ষণিকভাবে নতুন কাউকে নেতৃত্ব দেওয়ার বিকল্পটিও রয়েছে লিবারেল পার্টির সামনে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা অনেক কমে এসেছে। তার সরকার কয়েক দফা অনাস্থা ভোট কোনো মতে এড়াতে সক্ষম হলেও সমালোচকরা তাকে একাধিকবার পদ ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০২৫ সালের অক্টোবরের নির্বাচন পর্যন্ত দলের নেতৃত্বে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ট্রুডো। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত চাপের মুখে পড়েছেন তিনি, যা তাকে আরও বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে।
ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ক্ষমতা গ্রহণ করেই কানাডার পণ্য আমদানির ওপর বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। ট্রাম্পের এই হুমকির বিরুদ্ধে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে, সে বিষয়ে মতভেদের জেরে ডিসেম্বরে পদত্যাগ করেন উপ প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। এটাই ট্রুডোর মন্ত্রিসভায় প্রথম ‘প্রকাশ্য’ বিদ্রোহের ঘটনা।
এই ঘটনার পর ট্রুডো মন্ত্রিসভায় বড় পরিবর্তন আনেন। তিন ভাগের এক ভাগ মন্ত্রী পরিবর্তন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
এর আগে নভেম্বরে ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের বিলাসবহুল বাড়ি মার-এ লাগোয় বৈঠক ও নৈশভোজে যোগ দেন ট্রুডো। কিন্তু এতে তেমন কোনো কাজ হয়নি। এরপরও গণমাধ্যমে ট্রুডোকে নিয়ে অপমানজনক বক্তব্য দিয়ে গেছেন ট্রাম্প। তাকে কানাডার ‘গভর্নর বলে আখ্যায়িত করেন তিনি। পাশাপাশি, কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টিকে ‘চমৎকার পদক্ষেপ’ বলেও অভিহিত করেন ট্রাম্প।
২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসেন ট্রুডো। এক সময়ের অসম্ভব জনপ্রিয় এই নেতা এখন কনজারভেটিভ পার্টির পিয়েরে পোইলিভ্রের চেয়ে ২০ জনমত পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন।
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার প্রথম দুই মেয়াদে তিনি সিনেটের সংস্কার আনেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেন এবং কানাডার গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে কার্বন ট্যাক্স চালু করেন।
মেসেঞ্জার/তারেক