ছবি : সংগৃহীত
ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে বুধবার (১৫ জানুয়ারি) যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছায় দখলদার ইসরায়েল। মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারের আমির সংবাদ সম্মেলনে চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে চূড়ান্ত ঘোষণা দেন। তিনি জানান, আগামী রোববার থেকে এটি কার্যকর হবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একই তথ্য জানান।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায় চুক্তিটির অনুমোদন দেওয়ার কথা আছে। তেল আবিবের স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় এ নিয়ে বৈঠক হওয়ার সময়সূচি ঠিক করা হয়েছিল। তবে বৈঠকটি বিলম্বিত করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর দাবি করেছে, হামাস চুক্তির কিছু ধারা থেকে সরে গেছে। সেগুলো সমাধান না হওয়া পর্যন্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক হবে না। যদিও হামাস বুধবার জানায় তারা চুক্তিটির অনুমোদন দিয়ে মধ্যস্থতাকারীদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, মন্ত্রিসভার বৈঠক অন্তত সন্ধ্যা পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। অপর সংবাদমাধ্যম কান নিউজ জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর জোট সরকারের অন্যতম বড় জোট রিলিজিয়াস জায়নিজম পার্টি হুমকি দিয়েছে, যদি চুক্তি হয় তাহলে তারা সরকার থেকে পদত্যাগ করবে।
এ বিষয়টি নেতানিয়াহুকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। তিনি এখন নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন দলটি সত্যিই সরকার থেকে পদত্যাগ করবে কি না। তারা জোট থেকে বেরিয়ে গেলে সরকার ভেঙে যেতে পারে।
রিলিজিয়াস জায়নিজম পার্টির সংসদ সদস্য জভি সুক্কোত কান রেডিওকে জানিয়েছেন, চুক্তি হলেই তারা সরকার থেকে বেরিয়ে যেতে পারেন। তিনি বলেন, “আমি মনে করি আমাদের সরকার থেকে পদত্যাগের সম্ভাবনা বেশি। যুদ্ধ বন্ধ করা মানে পিছু হটা। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করছি। তার কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি নেওয়ার চেষ্টা করছি যুদ্ধ চলমান থাকবে। আমরা তার উত্তরের অপেক্ষায় আছি।”
ইসরায়েলি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ইয়েনেত জানিয়েছে, রিলিজিয়াস জায়নিজম পার্টির প্রধান নেতা ও অর্থমন্ত্রী বাজায়েল স্মোরিচ শঙ্কা করছেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলে তার সম্মান ক্ষুন্ন এবং রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। কারণ তিনি প্রথম থেকে এটির তীব্র বিরোধীতা করছেন।
তার আশঙ্কা তার অবস্থা শাহ পার্টির নেতা আরিয়েহ দেরির মতো হবে। ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তির পর আরিয়েহ দেরির রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এই চুক্তির মাধ্যমে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্ব নিরসনের চেষ্টা চালানো হয়েছিল।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে হামাসের বিরুদ্ধে চুক্তির ধারা থেকে সরে যাওয়ার অভিযোগ তোলার পর বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে গোষ্ঠীটির এক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা কোনো ধারা থেকে সরে যাননি এবং বুধবার নিজেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে জানিয়ে দিয়েছেন।
মেসেঞ্জার/তারেক