ছবি: মেসেঞ্জার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কমিটি বাতিলের দাবিতে যমুনা সেতু পশ্চিম পাড় মহাসড়ক ও রেল লাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন সংগঠনটির একটি অংশের শিক্ষার্থীরা। এঘটনায় ঢাকাসহ উত্তরের ১৬ জেলার যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন। এসময় যমুনা সেতু পশ্চিম পাড় সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশনে দুটি ট্রেন আটকে দেয় শিক্ষার্থীরা।
সোমবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে যমুনা সেতু পশ্চিম পাড় মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলনকারীরা। পরে ১ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মহাসড়ক ছেড়ে সড়কের পাশে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা।
অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম, দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ সিরাজগঞ্জের কমিটি ভুয়া ভুয়া, ভুয়া কমিটির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দেন।
আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় কমিটি যতোক্ষণ পর্যন্ত তাদের এই দাবি না মেনে নেবে, ততোক্ষণ পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এর আগে, রোববার বিকেলে যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড় মহাসড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ করেন। মুহূর্তেই ওই সড়কে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগে পড়েন বহু যাত্রী। তবে এর কিছুক্ষণ পর ‘দুর্ভোগ’ এড়াতে কর্মসূচি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছেড়ে দেন।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিরাজগঞ্জ জেলা প্রধান সমন্বয়ক মুনতাসীর মেহেদী বলেন, বৈষম্য দূর করতে আমরা অকাতরে জীবন দিয়েছি। আর সেই আন্দোলনের জেলা কমিটি ঘোষণায় বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। আমরা এই বৈষম্যমূলক কমিটির বিলুপ্তি দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, সোমবার সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এজন্য আমরা এক ঘন্টা বিরতি দিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রেল ও মহাসড়ক ছেড়ে সড়কের পাশে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের দাবি না মানা হলে আবারও সড়ক ও রেল অবরোধ করা হবে।
যমুনা সেতু পশ্চিম সয়দাবাদ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার আব্দুল আলিম জানান, সন্ধ্যা ৫ টা ৪৭ মিনিটে স্টেশনে শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করে। এতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস আটকা পড়ে। পরে রাত ৭ টা ৫ মিনিটে শিক্ষার্থীরা রেললাইন ছেড়ে দিলে ট্রেন দুটি ছেড়ে যায়।
পৌনে ৮ টার দিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীরা বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা পর্যন্ত মহাসড়ক অবরোধ করেছিল। এ কারণে মহাসড়কের দুই পাশে বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে। ওসি আরও জানান, এখানে ইউএনও ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
উল্লেখ, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারী) সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সজিব সরকারকে আহবায়ক, মেহেদী হাসানকে সদস্য সচিব, ইকবাল হাসান রিপনকে মুখ্য সংগঠক ও টিএম মুশফিক সাদকে মুখপাত্র করা হয়েছে।
মেসেঞ্জার/রাসেল/জেআরটি