
ছবি : মেসেঞ্জার
প্রবাসে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির চেতনা জাগ্রত রাখতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), অস্ট্রেলিয়া মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্থানীয় সময় ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২:০১ মিনিটে সিডনির আশফিল্ড পার্কে অবস্থিত শহীদ মিনারে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. রাশেদুল হক বলেন, “ভাষা আন্দোলন কেবল ভাষার জন্য সংগ্রাম ছিল না, এটি ছিল জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষার অধিকার পেয়েছি, যা বিশ্বের ইতিহাসে এক বিরল দৃষ্টান্ত।”
তিনি আরও বলেন, “ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। ১৯৭৬ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতির শ্রেষ্ঠ শন্তান ভাষা শহীদদের সন্মানিত করতে ‘একুশে পদক’ প্রবর্তন করেন, যা একুশের চেতনাকে জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।”
তৎকালীন একুশে একাডেমির সদস্য এবং অস্ট্রেলিয়ায় শহীদ মিনার নির্মাণের অন্যতম উদ্যোক্তা নির্মল পাল বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় শহীদ মিনারটি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত তহবিলের ১০ হাজার ডলারের সহায়তায় নির্মিত হয়েছিল এবং বিএনপি সরকার ২০০৩ সালে বহির্বিশ্বের প্রথম শহীদ মিনার নির্মাণে সহায়তা করেছিল। এটি আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “শহীদ মিনারের নকশা ও প্রতীকী তাৎপর্যের মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলনের মহান আদর্শ ফুটে উঠেছে, যা প্রবাসে বাংলা ভাষার মর্যাদা সংরক্ষণের অনুপ্রেরণা যোগায়।”
অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সভাপতি এ. এফ. এম. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, “একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতীয় ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়। মাতৃভাষার জন্য যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমাদের চিরন্তন শ্রদ্ধা। আমরা নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করতে চাই এবং প্রবাসেও বাংলা সংস্কৃতির প্রচার ও সংরক্ষণে কাজ করে যাব।”
অস্ট্রেলিয়া বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হায়দার আলী বলেন, “১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী আমাদের জন্য একই সাথে কষ্টের এবং গৌরবের দিন। আমরাই একমাত্র জাতি যারা মাতৃভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। ভাষা আন্দোলন কেবল ভাষার জন্য লড়াই ছিল না, এটি ছিল অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। ভাষা আন্দোলন ছিলো আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তি, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ কমাদের পরিচয়। একুশের চেতনা কেবল ভাষার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি জাতির স্বাধীনতা, সংস্কৃতি ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার অনুপ্রেরণা জোগায়।”
অনুষ্ঠান শেষে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থান পর্যন্ত সকল বীর শহীদ ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা, এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনায় তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও আহতদের জন্য দোয়ার আয়োজন করা হয়।
দোয়া পরিচালনা করেন স্বেচ্ছাসেবক দল অস্ট্রেলিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক হাফেজ জাহিদুর রহমান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক পদমর্যাদার অমি ফেরদৌস, অষ্ট্রেলিয়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক ইলিয়াস কাঞ্চন শাহীন, যুগ্ন সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত সবুজ, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল আলম শফিক, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আসওয়াদুল হক বাবু , সদস্য হাসনা হেনা, আজিজুন নাহার মালা এবং অস্ট্রেলিয়া যুবদল প্রস্তাবিত কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য সচিব ফারুক, স্বেচ্ছাসেবক দলের অনুমোদিত কমিটির সভাপতি মসিউর রহমান তুহিন, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান ও বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী ও সমর্থক এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।
নেতৃবৃন্দ জানান, প্রবাসে এই ধরনের আয়োজন একুশের চেতনার পুনর্জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং নতুন প্রজন্মের মধ্যে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করবে।
মেসেঞ্জার/তুষার