ঢাকা,  মঙ্গলবার
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

২০২৭ সালে হতে পারে ভোট

আবদুর রহিম, ঢাকা

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

২০২৭ সালে হতে পারে ভোট

ছবি : সংগৃহীত

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে,রুপরেখা কী জানতে অস্থির হয়ে উঠছে রাজনৈতিক দলগুলো। চলছে উপদেষ্টা সরকারের সঙ্গে বৈঠক। রাজনৈতিক সভা সেমিনার থেকে আকার ইঙ্গিতে বিএনপিসহ কয়েকটি দল নির্বাচন চেয়ে বক্তব্যের মাধ্যমে চাপও সৃষ্টি করছেন।

এমন পরিস্থিতিতে ড. ইউনুসের উপদেষ্টা সরকারের নির্ভরযোগ্য সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ড. ইউনূস সরকার একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য মনোযোগী। তিনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় নেতৃত্বে থাকবেন না। তবে তার আগেই  ছাত্র জনতা দেশের সিংহভাগ মানুষের চাহিদাকে গুরুত্ব দেবেন। যে কারণে অভ্যুত্থান হয়েছে সেই কারণগুলো সংস্কার করবেন। এজন্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ২০২৭ সাল পর্যন্ত গড়িয়ে যেতে পারে। 

বিশ্বস্ত সূত্রটি বলছেন, নির্বাচন আয়োজনের আগে পুলিশ বাহিনীকে নতুন করে সাজানো, নির্বাচন কমিশন নতুন করে গঠন করা, জুডিশিয়ারিতে পরিবর্তন আনার মতো কতগুলো বুনিয়াদি সমস্যা সমাধান অতীব জরুরী। এগুলো সংস্কার ব্যাতিত একটি অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে না।

এজন্য ড. ইউনুস সরকার রাষ্ট্রের চারটি গুরুত্বপূর্ণ খাত নির্বাচনব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা, জনপ্রশাসন এবং বিচার বিভাগ সংস্কার মতো বিষয়গুলোতে বেশি মনোযোগী হচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এই খাতগুলো স্বৈরাচার হাসিনা সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। বিএনপি-জামায়াতসহ ডান বাম সকল রাজনৈতিক দলই এই খাতগুলো সংস্কারে পরামর্শ দিয়েছেন। 

বিশস্ত সূত্রটি বলছে, চলতি মাসের মধ্যেই নির্বাচনী রোডম্যাপ তৈরি হবে। সংবিধান পুনর্গঠনের জন্য একটি কমিটিও গঠন হবে। ওই কমিটি ঠিক করবে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ। সেই কমিটি ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়টি সংবিধানে যুক্ত করবেন। ধারণা করা হচ্ছে ড. ইউনুস সরকারের মেয়াদ তিন বছর হতে পারে। তিন বছরের আগে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের নষ্ট করে রেখে যাওয়া খাতগুলো ঠিক করা সম্ভব হবে না। কোনো রাজনৈতিক দলের চীপ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না এ বিষয়গুলো যুক্ত থাকাকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। টানা একজন প্রধানমন্ত্রী কতবার ক্ষমতায় থাকবেন এ বিষয়টি যুক্ত হচ্ছে বলে সূত্রটির ভাষ্য।  

এদিকে রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে গত ২৯ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি।  রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক হয়। বৈঠক সূত্রটি বলছেন, চলতি মাসেই রাষ্ট্র সংস্কার ও নির্বাচন ইস্যুতে একটি রোডম্যাপ জনগণের সামনে পেশ করতে কাজ করছেন বলে রাজনৈতিক দলগুলোকে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেন। একই সঙ্গে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রয়োজনীয় সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানানো হয়। চলতি মাসের দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় শপ্তাহে নির্বাচনী রোডম্যাপ জনগনের সামনে উপস্থাপন কাজ করছেন বলে জানান ড. ইউনূস সরকার। 

গত ৮ আগস্ট ড. ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলটির সঙ্গে বৈঠক হয়। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এই বৈঠক গুলোতে আলোচনায় নির্বাচনী প্রসঙ্গ অধিক গুরুত্ব পেয়েছে বলে বলছেন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আমি কয়েক দিন ধরেই জাতির সামনে একটা রোডম্যাপ দেওয়ার জন্য বলে আসছিলাম। আমরা আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা যখন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিলেন, তখন তিনি সেটা জানাবেন। কিন্তু সেখানে তিনি বলেছেন, এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। তার মানে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ করতে হবে। তাই আমরা গত বৃহস্পতিবার উপদেষ্টাদের সঙ্গে আবার বসেছিলাম। পরে শনিবার আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার বৈঠক করেছে। আমাদের সঙ্গে বৈঠকে আমরা বলেছি, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে একটি নির্বাচন আয়োজন করা এ সরকারের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বললে, মূল সমস্যাগুলো বেরিয়ে আসবে। সরকার কী সংস্কার করবে সেগুলো আসবে। এর ভিত্তিতে সংস্কারের একটি রোডম্যাপ তৈরি হবে। নির্বাচনেরও রোডম্যাপ তৈরি হবে। আমার বিশ্বাস, সব রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে সেই প্রস্তাব সরকার পেয়েছে এবং কাজ শুরু করেছে।

চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেছেন, খুব শিগগির নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করতে প্রধান উপদেষ্টাকে বলা হয়েছে। নির্বাচনটা কবে হবে, কীভাবে হবে, তার একটা রোডম্যাপ (রূপরেখা) দিতেও প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। জনগণ ‘অস্থির’ হওয়ার আগে নির্বাচন দিতে আমরা জোর দাবী জানিয়েছি। বিশেষ করে বলেছি, অতীতে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। ভোট দেয়ার পরিবেশ যাতে সুনিশ্চিত করা সেটাই আমাদের তাগিদ ছিলো বেশি।

মেসেঞ্জার/দিশা

×
Nagad