ঢাকা,  শনিবার
২১ ডিসেম্বর ২০২৪

The Daily Messenger

স্বৈরাচার পুনর্বাসন হলে বাংলাদেশ হবে জল্লাদের উল্লাস ভূমি: রিজভী

মেসেঞ্জার অনলাইন

প্রকাশিত: ১৭:৫৪, ৭ অক্টোবর ২০২৪

আপডেট: ১৮:২৯, ৭ অক্টোবর ২০২৪

স্বৈরাচার পুনর্বাসন হলে বাংলাদেশ হবে জল্লাদের উল্লাস ভূমি: রিজভী

ছবি: সংগৃহীত

পতিত স্বৈরাচার আবার পূনর্বাসন হলে বাংলাদেশ হবে ‘জল্লাদের উল্লাস ভূমি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণকালে সাংবাদিকদের কাছে রিজভী আহমেদ এমন মন্তব্য করেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘কেউ কেউ যখন স্বৈরাচারের পূনর্বাসনের কথা বলেন, তখন বিপদজনক বার্তা যায় জনগণের কাছে। যখন কোনো উপদেষ্টা বলেন তাদেরকে নিজেদের ঘর গুছানোর জন্য সেটি অত্যন্ত বিপদজনক বার্তা দেয়। যারা এতোদিন গুম-খুন আর আয়না ঘরের সংস্কৃতি তৈরি করেছিলো তারা যদি পূনর্বাসন হয় তাহলে এদেশে আর মানুষ বসবাস করতে পারবে না।' 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, সেক্ষেত্রে 'এই দেশ হবে জল্লাদের উল্লাস ভূমি। এখানে গণতন্ত্র, কথা বলা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চিরদিনের জন্য কবরস্থানে চলে যাবে।'

পতিত স্বৈরাচার ও তাদের দোসরদের সম্পর্কে সকলকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির এই নেতা।
রিজভী আহমেদ এ সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন সচিব নিয়োগ নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, 'আমরা শুনতে পাচ্ছি, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেখছি যে, নানা কায়দায় সরকার ঘাপটি মারা স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী দোসরদের পূনর্বাসন করছে। কালকেও বলেছি, আজকেও বলছি, একজন রাষ্ট্রদূত কাতারে ছিলেন। কাতারে কারো (প্রবাসী) যদি ভিসার মেয়াদ শেষ হতো সেগুলোকে তিনি নবায়ন করতেন না।'

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, 'তিনি (রাষ্ট্রদূত) খবর নিতেন ওই সমস্ত লোক কোন দল করে, কাদের সমর্থক? কারণ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অধিকাংশ প্রবাসী বিএনপির সমর্থক। তাদেরকে তিনি (ওই রাষ্ট্রদূত) নানাভাবে হয়রানি করেছেন, ভিসা নবায়ন করেননি। সেই লোককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হয়েছে বলে শুনতে পাচ্ছি। তাহলে অন্তর্বর্তী সরকার কাদেরকে পূনর্বাসন করছে? যারা জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, যারা শহিদের লাশকে আজকে অপবিত্র করছে, শহিদের আত্মদান ও রক্তকে যারা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে তাদেরকে?’

তিনি বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকারকে  এই বিষয়গুলো দেখতে হবে। তাদের প্রতি জনগণের যে আস্থা সেই আস্থা যাতে ফলপ্রসু হয় তা তাদেরকে দেখতে হবে। কারা কাতারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র সচিব বানিয়েছে?'

রুহুল কবির রিজভী বলেন, 'এভাবে বিভিন্ন জায়গায় ঘাপটি মেরে থাকা ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। একটা সরকারে বিভিন্ন ধরনের লোক থাকতে পারেন, নিরপেক্ষ লোকও থাকতে পারেন যারা কাজ করবেন। কিন্তু যারা শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিস্টকে সমর্থন করে বিরোধী দল দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে তাদের যদি আজকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে নিয়োগ দেওয়া হয় তাহলে এই সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’

রিজভী বলেন, ‘দেশে এখনো অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য যে সমস্ত নিয়ম-কানুন দরকার সেগুলো এখনো করা হয়নি। নির্বাচন কমিশন গঠন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাসহ আরও যেসব সংস্কার কাজ আছে সেগুলো এখনো করা হয়নি। তার আগে যদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে একজন বিতর্কিত এবং শেখ হাসিনার একজন সহযোগীকে বসানো হয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ওইরকম বিতর্কিত ব্যক্তিদের বসানো হয়, তাহলে এই দেশ, এই দেশের জনগণ এবং বিপ্লবে দেড় হাজারেরও বেশি শহিদকে অবমাননা করা হবে।'

রিজভী সোমবার সকালে এলিফ্যান্ট রোডে বিএনপি কর্তৃক প্রকাশিত ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন।
এসময় বিএনপি'র স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পারভেজ রেজা কাকন, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করীম শাহিন, মেহেবুব মাসুম শান্ত, আরিফুর রহমান তুষার, ডা. আউয়ালসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

রোববার থেকে বিএনপি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এই জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ শুরু করে।

মেসেঞ্জার/ফামিমা